জর্নাল
একটা একরৈখিক শ্যামাঙ্গী তীরের গন্ধ মুখস্থ করে ঘোড়দৌড়ের মাঠে গজা লতাগুল্মের যৌনকাতরতা বিষয়ে লেখা জর্নালে মজে আমি লাভলেন পেরিয়ে অ্যানার্কিজমের অন্তরাত্মা ফুঁড়ে ফসল তুলেছি ঘরে
আমার এই মাড়াইমেশিনটিকে কিনে নিতে খ্রিষ্টপূর্ব যুগের এক খামারি এসেছে প্রাসাদমূল্য নিয়ে, তার না-কাটা নখের ভয়ে আমি লাঙলের পাশে বসে আত্মরক্ষা করি, এ কাহিনি খতিয়ে না-দেখলে জয়ত্রী ও জায়ফল কীভাবে এত দামি মসলা হলো তা অজানাই থেকে যাবে
আমি যে মসৃণ বিলাপগুলো একাকী পকেটে নিয়ে ঘুরে আসি শ্যামাগীত থেকে, সে কথা ভোলার আগে তৃপ্তির ঢেকুর তোলা নিষিদ্ধ আমার, কেননা জবাফুলের গন্ধে মাতালপ্রায় অভিনয়কারীদের বিষয়ে বিরল কোনো প্রতীক রচনায় আমি ব্যর্থ হয়েছি-- এই কথা জানিয়েছে রাত্রি চিবিয়ে খাওয়া ঘোরভাসা শ্মশানপুরুষ
সকালে যেসব কান্না খোঁয়াড়ের দরজা কাঁপায়, সেসব হাঁসের বাচ্চাকে আমি ফড়িং ওড়ার শব্দে পারি ভুলে যেতে, তবু ভাঙারি এক মেয়ে আমাকে বাতিল কাগজ ভেবে কুড়িয়ে নিয়েছে
ভাগ্যিস, শালিক পাখি চিনত আমাকে
ফৌজি কবিতা
(অক্ষয় মালবেরি’র রূপকার মণীন্দ্র গুপ্তকে মনে রেখে )
ভোর হবার অনেক আগে ভোরের মধ্যে ঢুকে গেছে আমার মাঝবয়সি চিন্তারা, তাদের কোমরে বাঁধা অ্যাসফেল্ট মোড়ানো খালি ওয়াটার বোতলে তখনো রামের গন্ধ লেগে আছে
কাঁকড়াচলন ভালো নাকি সর্পচলন, এসব কথা একদম আমলে না-নিয়ে হাঁদা চিন্তারা সুকঠিন ট্রেঞ্চ খুঁড়ে ক্রমাগত করে চলে নিশা আক্রমণ, এ ছিল আমার এক ফৌজি ক্যামোফ্লেজ সুবিশাল আঁধার বেদিতে
কলমবৃক্ষের পত্রবহুল ডালপালাজুড়ে জাগা নতুন প্রভাত আমি পরের খেপের লাগি সযতনে গুছিয়ে রেখেছি
নুড়িখণ্ড
একটা রব্বানীগাছের ছায়া অদূর প্রান্তরে নিভে আর জ্বলে
পোড়া মবিলের গন্ধ মাখা একটা বুলডোজার অপলক চেয়ে থাকে
ঘুঘু ডাকে হেমন্ত সকালে
০
জানালা খুলেই ভেসে যেতে দেখি একটা আবলুস কাঠের কফিন
কাঁধলে রঙিন ফিতা দুরন্ত কাঁপছে
নিচে, চরাচর ডুবে যাচ্ছে সুগন্ধী গোলাপজলে
০
আপেলের ভেতরে একটা শুকিয়ে যাওয়া নদী আছে
এ খবর কমলার কাছে শোনা
বলুয়া সুন্দরী হলে কথা মোটে ফেলতে পারি না
০
ঘোড়াদের হাসিমুখ লাগামসাপেক্ষ, মাঢ়ীরঙা এই হাসি হেসে হেসে আমরা ছুটেছি সবে দূরের বন্দরে
ঘোড়াদের চলাফেরা কথা বলা ইশারাতাড়িত, আড়ালে লাগাম হাতে বসে থাকে মানবেশ্বর
০
চিঠিটার নাম ছিল ক্ষোভ, গর্জে ওঠা ওর আভাস-আগুনে পুড়ে, ভস্ম হলো চোখ-কান-ভাষা
মিহিভস্ম জপ করে প্রেম প্রেম, অকালে নেমেছ বুঝি গহিন খাঁড়িতে