ফ্রাঙ্ক ওহারা’র লাঞ্চ পোয়েমস, এই কাব্যগ্রন্থটি থেকে কয়েকটি কবিতা বাক-এর পাঠকদের জন্য অনুসৃজন করে এখানে উপস্থিত করেছেন বারীন ঘোষাল।
ওহারা-পুলিন থেকে দুটি কবিতা
১
ভালবাসি বলে রক্ত
মদ আসছে গেলাসে
স্যাক্সোফোনের ওপরে বাঁশি
কে এত বাজায় জোরে ?
গেলাসের সবুজ ফুলকারিতে কেন্টাকি-নাচের আঁক
আর সারাক্ষণ রুমালটা চাপা দেওয়া গোলাপের
সেই দামাস্কাসেরই নাকের ওপর
আমার বেপরোয়া কলার উঁচিয়ে তোলা
গলার রুমাল ঘাড়ের পাশে ছোঁড়া
কিয়োটোর বোৎলার-এর শুচিবাই আর যাবে না দেখছি
তার মাথা নাকি খারাপ ?
২
কাঠের খড়ম পায়ে লম্বা হেঁটে সমাধিস্থলে
এলাম পায়ের টানপেশী নিয়ে হেঁচড়ে
চা-টা খুব কড়া ছিল আর শক্ত বুকের পাটা
এটুকু চত্বরই ছিল একবিকেল সন্ধ্যার জন্য তোলা
এখানে আর নেই কোন নাসাগর
আমার রন্পায়ের তলায় তো কোন সমুদ্র দেখি না
যখনই খোঁচাই না কেন
গোড়ালিতে হাত মণিবন্ধে পা
ভাবনায় উদোম করে ঠাসা
মোজায় মোড়া চাবুকের মতন সপাং শব্দ
রেডিওর কথাটা নিয়ে সিগারেট টানা হচ্ছে
কাদামাদায় খেলার আনন্দে
কেউ কেউ বলে মিল্কি ওয়ে ওই যায়
গাছেদের মাথা ছাড়িয়ে সুদূর প্রসারী পশ্চিমে
যেখানে মানুষের করোটিরা মজায় করে বাস
পাঁচটি কবিতা
আচ্ছা হয়েছে, দাঁড়াও
আমি হয়তো ঘুমোবার জন্য আর শোব না
তাই এটাই হোক সেই খাসা ফর্সা রাত
নয়তো স্নায়ুময় আমি পুরো কেৎরে পড়ব যে
আর ঠান্ডা হয়ে যাব
কম্বলের মতো বা পিলের শিশি
অথবা ধরো হঠাৎই আমি মন্টাক থেকে বেরিয়ে
সাঁতার কাটছি তো কাটছিই প্রেমসে কোথায় যেন বেপরোয়া
লাঞ্চের নেমন্তন্ন এটা
কেমন লাগলো তোমার
যখন আমার কাছে কেবল ১৬ টাকাই আছে আর
দু কাপ মাত্র ইয়োগার্ট
এর মধ্যেও একটা শেখার ব্যাপার আছে, তাই না,
সেই চীনা কবিতাটার মতো যখন গাছের একটা পাতা খসে পড়ছিল ?
ইয়োগার্টের কাপটা শেষ পর্যন্ত আগলে রেখো
দেখো সবকিছুই ঠিক হয়ে যেতে পারে আবার
রন্ড-পয়েন্টে ওরা খাচ্ছিল
একটু ঝিনুকের মাংস কিন্তু সেখানে
আমরা ভাস্করের হাতের ফাঁক দিয়ে গড়িয়ে পড়তে
পড়তে দেখছিলাম কিছু চিত্র আঁকা রয়ে গেল
কর্ডোরেট-এর চোখ ধাঁধানো ঘর্ষণ ফুলঝুরি
সঙ্গে ভারিস-এর বাজনা, আরও
ভাল ছিল অ্যাডলফ্ গোৎলিয়েব, আমার ধারণা
এই পর হরিণের মাংস আর উইলি’র পরে তুমিই আজ এদিনের হিরো হে
ইয়োগার্টের ওপর আমি শোবো আর স্বপ্ন দেখব পারস্য সাগরের
আমি যা করলাম সেটাও মোক্ষম আরামের বৈকি
এই যে বিছানায় এর পরেও পড়ে থাকা আর নক
আমার দরজায় একবার বলতে চেয়ে -- “কে ভেতরে”
আর কানে তালা লাগানো সমবেত হন্টনরোল
ঘেটোর ভেতরে যেখানে বোম ফেটেছিল একটু আগেই
ভুগর্ভ পথটি সন্ত্রস্ত রাখতে সেখানে ছেড়ে যাওয়া
আমি জানি কেন ট্যাক্সি পছন্দ করি, হ্যাঁ
সাবওয়ে শুধু মজার যখন তুমি সেক্সি ফিল করো
আর ‘দি ব্লু অ্যাঞ্জেল’-এর পরে কে না সেক্সি ফিল করে
খানিকটাই না হোক
আমি যেন নিয়তিকে অস্বীকার করতে চাইছি, বা এড়াতে চাইছি কি ?
সেন্ট পল আর সেইসব
প্রচন্ড লজ্জায় দাঁত কেলিয়ে
আমি হেঁটেই ঢুকি আর বসে পড়ি আর ফ্রিজের দিকে মুখটা ঘোরাই
এটা এপ্রিল না মে এটা মে
এই ছোটখাটো ব্যাপারগুলো এক্ষুনি ঠিক করে ফেলতে হবে
রাতের বেলার বড় ঘটনাটার পরেও
তুমি কি চাও আমি আসি ? যখন
আমি ভাবি সেসব কথা যা আমি ভাবছিলাম
পাগল পাগল লাগে
একদম “বার্মিংহামের জীবন পুরো নরক”
সিওর “তুমি আমাকে মিস করবে
তবুও সেটাই ভাল”
যখন গোটা প্রজন্মের চোখের জল এককাট্টা হয়েছে
সেসব কেবল একটা কফি-কাপে এঁটে যাবে
শুধুমাত্র তারা বাষ্পীয়ে উবে যাবে
মানে এই নয় যে জীবনের উত্তাপ আছে
“এই যে নানারকম বাঁচার স্বপ্নে”
আমি তোমার সাথে বেঁচে থাকি উদ্বিগ্ন আনন্দে আর আনন্দঘন উদ্বেগে
কঠোরে আর কোমলে
শুনি যখন কিছু বলো তুমি আর বলি যখন তুমি পড়ো
আমি পড়ি সেইসব যা তুমি পড়ো
তুমি পড়ো না মোটেই যা কিছু আমি পড়ি
তাই ঠিক, কেন না কৌতুহলটা শুধু আমারই
কেন না তুমি পড়ো কোন এক রহস্য কারণে
আর আমি পড়ি শুধু আমি একজন লেখক ব’লে
সূর্য একটিমাত্র অপরিহার্য কারণেই অস্ত যায় না, কখনও সেটা দুম করে উধাউ হয়ে যায়
যখন তুমি এখানে থাকো না অন্য কেউ এসে ঢুকে পড়ে
বলে “ওহে,
কোন নাচনেবালী নেই কেন বিছানায়”
ওহ্ সেই পোলিশ গ্রীষ্মের দিনগুলো ! বাতাসের দাপট !
সেই মড়মড়ে কালো আর সাদা দাঁতগুলো !
তুমি কখনও আসো না যখন বলো যে তুমি আসবে কিন্তু আবার
ঘুরিয়ে দেখলে তুমি তো আসোই
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন