যোগাযোগঃ ৯৮৩০৩৭৭৯২৯
সুব্রত সরকার
জন্মঃ ১৯৫৬
বইপত্রঃ দেবদারু কলোনি (১৯৭৯), সহ্য করো বাংলাভাষা (১৯৯১),
তোমাকে মিথ্যা বলেছি (১৯৯২), ঘন মেঘ বলে ঋ (১৯৯৭), বহুত আঁধিয়ার হো বাবু, হামে কুছ
রোশনি চাহিয়ে (১৯৯৯), ফারেনহাইট ফোর ফিফিটি ওয়ান ডিগ্রি (২০০৪), কাব্যসংকলন
(২০১২), না স্নেহকরস্পর্শ (২০১৪)
যোগাযোগঃ ৯৮৩০৩৭৭৯২৯
যোগাযোগঃ ৯৮৩০৩৭৭৯২৯
মাথার ভিতরে নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করছে
প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘দেবদারু কলোনি’ প্রকাশিত হয়েছিল জানুয়ারি, ১৯৭৯-র কলকাতা
বইমেলায়। তখন আমার বয়স বাইশ বছর কয়েক মাস। আজও বইটির কথা মনে পড়লে ২০/২১ বছরের এক
অদম্য প্রাণশক্তির তরুণের শ্বাস গায়ে এসে স্পর্শ করে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে
জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল – নিজের লেখা প্রিয় বই কোন্টি? একটুও না ভেবে উত্তর
দিয়েছিলাম, অবশ্যই প্রথম বই। কেন? কারণ প্রায় কিছু না বুঝে, না পড়ে, কেবল প্রেরণার
স্রোতে সে লেখাগুলি নিজে থেকে ভেসে এসেছিল। পরের প্রশ্ন- এমন লেখা আর কি সম্ভব?
নয়, কারণ সে বয়সটিই তো হারিয়ে ফেলেছি! যখন সারা শরীর-মন সর্বদা টানটান তারে বাঁধা
থাকতো, কেউ একটু স্পর্শ করলেই ঝন্ঝন্ করে বেজে উঠতাম। তাকে আর কোথায় খুঁজে পাবো
?
সত্তরের দশক ছিল গ্রাম দিয়ে শহর
ঘিরে ফেলবার স্বপ্নে বিভোর। বিপ্লবের সে স্বপ্ন সফল হয়নি। কিন্তু কলকাতা
কেন্দ্রিকতা থেকে কবিতা ছড়িয়ে পড়েছিল গ্রাম ও মফস্বল শহরে- তা ঐ সত্তর দশকেই প্রথম
স্পষ্ট হয়। রাণাঘাটে জয় গোস্বামী, কৃষ্ণনগরে দেবদাস আচার্য, শান্তিপুরে অরুণ বসু,
সুতাহাটায় শ্যামলকান্তি দাশ, মেদিনীপুরে বীতশোক ভট্টাচার্য, ডায়মন্ড হারবারে তপন
বন্দ্যোপাধ্যায়, মুর্শিদাবাদে জমিল সৈয়দ, শ্রীরামপুরে মৃদুল দাশগুপ্ত, হাওড়ায় গৌতম
চৌধুরি, পুরুলিয়ায় নির্মল হালদার, এমনকী সুদূর বিহারের জামশেদপুরে থেকে কমল
চক্রবর্তী, বারীন ঘোষালরা যেন সত্যি সত্যিই কলকাতার কবিতার জগতটিকে ধীরে ধীরে ঘিরে
ফেলছিলেন। বহুবর্ণের, বহুস্বরের, বহুমাত্রিকতার সে কবিতাযুগ বাংলা কবিতার পাঠককে
তখন আবিষ্ট করেছিল। তাই বলে কলকাতার কবিরাও কিছু কমা ছিলেন না। অনন্য রায়, তুষার
চৌধুরি, পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল, সমরেন্দ্র দাশ, অজয় সেন, এমনকি শিলচর থেকে আসা
রণজিৎ দাশ-রা তখন প্রায় কলকাতারই মাস্তান। অগ্রজদের মধ্যে শক্তি, উৎপল, কবিতা
সিংহ, দেবারতি, ভাস্কর, কালীকৃষ্ণরা তো আগের থেকেই রয়েছেন। একটা দ্বিধায় পড়ে
গেলাম, আমি তাহলে কোন্দিকে যাবো ? কোথায় আমার আশ্রয়? আমরা যারা সত্তরের মাঝামাঝি
বা শেষের দিকে শুরু করেছিলাম, বোধ করি এ সমস্যা সকলেরই কমবেশি ছিলো। একটা কভার
চাই, কভার। ওয়ান হর্স ফর কিংডম।
কিছুদিন এটা-ওটা লিখে অবশেষে
খুঁজে পেলাম আমাদের কলোনিকে। সে শহরের কেউ নয়, আবার গ্রাম বা মফস্বলেও তাকে খুঁজে
পাওয়া যাবে না। কলোনির কাক, কুকুর, চড়ুই, পুকুর, গাছ, টালি বা টিনের ছাউনি দেওয়া
ঘর কবিতায় এসে প্রবেশ করলো। কাঁচা নর্দমা, বাসন ধোওয়া জলের মধ্যে ফুটে উঠতে থাকলো
একটি দুটি লেখা। অবশেষে দেবদারু কলোনিকে আমি দেবু-দা বলে ডেকে উঠলাম। কখনো সে
শিশু, কখনো বৃদ্ধ। বিপ্লবী, তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তখন মার্কেজের চর্চা ছিলো
না, ম্যাজিক রিয়েলিজম শব্দটা কারো কাছে শুনিনি। কিন্তু কলোনির সুখ-দুঃখের নিঃশ্বাস
আমার চোখের পল্লবে এসে ধাক্কা মেরেছিলো। ওঠো, লেখো আমার এসব। উপবাসী মানুষের না
খেয়ে থাকার থেকেও তার অপমান যেন মাছের কাঁটার মতো মনের কোথাও এসে আটকে গিয়েছিলো। ওয়াক্
ওয়াক্ শব্দে বমি করে ফেলতাম লেখার পৃষ্ঠায়। তাই বই হয়ে বেরুবার সময় উৎসর্গ
করেছিলাম ‘মরিচঝাঁপির উদ্বাস্তুদের’। সামান্য জলের সন্ধানে আসা কারো কারো মাথার
উপর দিয়ে মটোর লঞ্চ চালিয়ে দেওয়া হয়েছিলো তাদের বেয়াদপি শায়েস্তা করতে। এতো মিডিয়া
ছিলো না, পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষ জানতেই পারেনি সেই গণহত্যাকে। আমার মনের ভিতরের
কোথাও আজও সেখানে পেরেক পোঁতা রয়েছে। শুধু বহুদিন আগের বলে, সে পেরেকে ঝুলিয়ে
দিয়েছি যীশুর এক ক্ষমাসুন্দর মূর্তি। যীশু হাসছেন। কিন্তু পেরেকটি থেকে আজও
রক্তক্ষরণ হয়। আমার লেখা তাই পরে আর কিছুতেই সুন্দর হতে পারলো না। সে বেঁকে গেলো
বিস্বাদের দিকে। নোংরা, অপরিচ্ছন্ন, মাছি এসে বসে তাদের উপর। কারণ এই তাদের ও আমার
নিয়তি। কে ন বাধ্যতে।
অথচ এই কলোনিতে একসময় ছিলো
অজস্র বকুলগাছ, হাস্নুহানা, শেফালি- তাদের পাশ দিয়ে যাবার সময় মনে হতো কেউ যেন
একগোছা সুগন্ধের দড়ি ফেলে রেখে গেছে যে দড়ি ধরে মহাশূন্যে উঠে যাওয়া যায়। ঐ
লুব্ধক, অরুন্ধতীর গা টিপে টিপে স্পর্শ করতে পারি জীবন কোথায়, কীভাবে কাঁপছে?
কিন্তু সে সুগন্ধের দড়ি ধরে ওঠার সাহস হয়নি। হে পাঠক, ক্ষমা করো প্রভু।
ছোটোবেলার স্মৃতির ভিতর কি
পায়েসের সুবাস লেগে থাকে অথবা স্মৃতির ভিতর রোপিত কেয়া ফুলের গন্ধ কি মনকে পাহারা
দেয় বৃদ্ধ হয়ে গেলেও? ঠিক বলতে পারবো না। কিন্তু আজও আমার লেখায় কুকুর ডেকে ওঠে,
পুকুরে ভেসে থাকা চাঁদ, পাঁচফোড়োনের গন্ধের ভেতর দিয়ে আমার লেখারা কি মহাজীবনকে
স্পর্শ করতে চেষ্টা করে? হয়তো, হয়তো বা তা নয়। তারা যেমন হতে চেয়েছিলো বা যেমন হতে
পারতো আমার দোষে নষ্ট হয়ে গেছে সব আয়োজন।
কলেজ স্ট্রিট চত্বরে ‘পত্রমিতা’
নামে এক ছোটো প্রকাশনা সংস্থার মালিক ছিলেন হরিপদ ঘোষ। আসলে তিনি আমাদের
পত্র-পত্রিকা ছেপে দেওয়ার দায়িত্ব নিতেন কিছু দক্ষিণার বিনিময়ে। আমরাও আলাদা করে
কাগজ কেনা থেকে ছাপা, বাঁধাই ইত্যাদি নানা ঘোরাঘুরি থেকে রেহাই পেয়ে যেতাম। তা,
একদিন হরিপদদা প্রুফ দেখতে দেখতে বলেই ফেললেন- তোমার কিন্তু এবার একটা কাব্যগ্রন্থ
প্রকাশিত হওয়া দরকার। সঙ্গে যে বন্ধুরা ছিল সকলে হৈ হৈ করে উঠলো। কিন্তু খরচ?
হরিপদদা বললেন- ওটা পরে ভাবা যাবে, আগে পান্ডুলিপি তৈরি করো।
পান্ডুলিপি প্রস্তুত হলো। খরচের
হিসাবও দাখিল। এবার কথা হলো টাকা আসবে কোত্থেকে- আমি ভেবেছিলাম হরিপদদা করে দেবেন,
কিন্তু তা তো নয়। বন্ধুরা কইছু বিজ্ঞাপন তুলে টাকা দিতে চাইলো। কিন্তু তাতে তো
কুলাবে না। তাহলে কি বই বেরুবে না?
হরিপদদার প্রকাশনাটি একটি
ঘরের এক কোণে টেবিল ভাড়া নেওয়া অংশে, ঘরের মালিকের ‘গ্রন্থমিতা’ থেকে ধার নেওয়া।
তিনি কাব্য কবিতার ধার ধারতেন না। তার প্রকাশনা পাঠ্য পুস্তকের। যদিও খুবই ছোটো
আয়তনের। তিনি সাধারণত আমাদের আলাপচারিতায় কখনো থাকতেন না। সেদিন হঠাৎ সকলকে চমকে
দিয়ে বললেন- বাকি খরচের দায়িত্ব আমার, কিন্তু আমার সংস্থার নাম রাখতে হবে প্রকাশক
হিসেবে। আমার একটু আপত্তি ছিলো যেহেতু সেটি পাঠ্য বইয়ের প্রকাশন। কিন্তু বন্ধুরা
সকলে সে আপত্তির মেঘ হাওয়ায় উড়িয়ে দিলো। আসলে আর একটু গূঢ় আপত্তিরও কারণ ছিলো।
শচীবাবু, হ্যাঁ তার নাম শচীবাবুই তো, তার বোন কিছুদিন আগে হাবে-ভাবে আমাকে প্রেম
নিবেদন করেছিলেন। মনে হয় শচীবাবু তা জানতেন। মেয়েটি তার দাদার কাছে মাঝেমধ্যে আসতো
আর সেই সূত্রে তার সঙ্গে পরিচিত হই।
এবার প্রচ্ছদ কে আঁকবেন? আমাদের
এক বন্ধু শংকর রায় বললো- চল তোকে দুলুদা’র কাছে নিয়ে যাই। দুলুদা কে? আরে পৃথ্বীশ
গংগোপাধ্যায়! বাটা’র চিফ আর্টিস্ট। তখনকার সবচেয়ে প্রখ্যাত মলাটশিল্পী। দুরু দুরু
বুকে যাওয়া হলো তার কাছে। তিনি আমার পান্ডুলিপিটা একটু নেড়েচেড়ে দেখে ফেরৎ দিয়ে
দিলেন। তাহলে কি হবে না? ও শঙ্কর, উনি কি মলাট করার জন্য পয়সা চাইবেন- মনে মনে
ভাবছি। শঙ্কর মিটিমিটি হাসছে। পৃথ্বীশদা তার টেবিলের উপরে নানা কাগজের মধ্যে
একটিকে হাতে তুলে নিলেন, তারপর সেটি দুমড়ে মুচড়ে দলা পাকিয়ে ফেললেন। এবার সেই
কাগজের বলটি পিছনে রাখা এক নীল কালির পাত্রে চুবিয়ে এক অদ্ভুত শেপ তৈরি হলো। যেন
অজস্র মানুষের ভীড়। কালি শুকিয়ে যেতে তার একপাশে উপরে নীচে সোজা কয়েকটি সরু সরু
লাইন টেনে দিলেন সবুজ রঙের। তৈরি হলো গাছের উপমা। হ্যাঁ, এইরকম প্রচ্ছদের স্বপ্নই
তো দেখেছিলাম। পৃথ্বীশদা জানলো কি করে?
আবার হরিপদ ঘোষ। কারণ বই ছাপার
দায়িত্বটা তিনি ছাড়েন নি। শচী কবিতার বইয়ের বোঝে টা কি- ইত্যাদি বলে নিজের কাছে
রেখে দিয়েছেন। প্রচ্ছদ ছাপা হলো। দেখে তো আমার প্রায় চোখে জল আসার অবস্থা। কম
দামের কাগজ, কম দামের কালিতে সে প্রচ্ছদ প্রায় বিবর্ণ, মূক। শঙ্কর বললো –এ চলবে
না। কিন্তু আবার ছাপতে গেলে তো আবার খরচ। শঙ্কর বললো- চলো দুলুদা’র কাছে যাই। এস।
এন ব্যানার্জি রোডে বাটার শোরুমের দোতলায় পৃথ্বীশদা’র অফিসে এলাম। সব শুনে নিয়ে
গেলেন কাছেরই এক প্রেসে। সে এক বৃহৎ প্রেস, আমার তো ভয় করছে- এদের খরচ কি দিতে
পারবো ? পৃথ্বীশদা ম্যানেজারকে সব বুঝিয়ে দিলেন। দুটি জিঙ্কের ব্লক দেওয়া হলো। ওরা
বললেন, পরদিন এসে নিয়ে যেতে। পয়সার কথা হলো না। পৃথ্বীশদা শুধু বললেন, কিছু দিতে
হবে না।
কলকাতা বইমেলা তখন হতো
রবীন্দ্রসদনের উল্টোদিকে। এখন বই তো বেরিয়েছে, কিন্তু সে বই কি করে বইমেলায় যাবে?
শচীবাবুর পাঠ্যবইয়ের সংস্থা তো আর সেখানে স্টল দেবে না! তা হলে উপায়? আমার এক প্রয়াত
কবিবন্ধু অলোকেশ ভট্টাচার্য শুনে বললো- সান’দা আছে না? চিন্তা কি? সানদা’ মানে কবি
সমরেন্দ্র দাশ, আত্মপ্রকাশের সম্পাদক। সে স্টল দিচ্ছে। তখন লিট্ল ম্যাগাজিন
অচ্ছুত ছিলো না বইমেলায়। অতএব আত্মপ্রকাশের স্টলে শোভা পেতে লাগলো ‘দেবদারু
কলোনি’। পৃথ্বীশদা কোনোদিন শক্তি চট্টোপাধ্যায়কে ধরে নিয়ে আসেন তো কোনোদিন অমিতাভ
দাশগুপ্ত হাজির কবিতা সিংহকে সঙ্গে নিয়ে। এক কবিবন্ধু স্বরাজ সিংহ কার্ডবোর্ডের
উপর নানা রঙ দিয়ে লিখে দিয়েছে- ‘দেবদারু কলোনি এইদিকে’। টুকটাক বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রি হলেই সমরেন্দ্র, অলোকেশদের মিলিত করতালি। এক সন্ধ্যায় কয়েকটি তরুণী এসে
ঢুকলো স্টলে। বইটি কেনার পর, তাদের কেউ বোধহয় বলেছিলো, কবি কি স্টলে আছেন? তাহলে
অটোগ্রাফ নিতাম। আমাদের এক কবিবন্ধু শ্যামলতরু ক্যাশমেমো লিখছিলো। সে বলে উঠেছে-
এই তো! স্টলের বাইরে দাঁড়িয়ে আমি সে কথার টুকরো লুফে নিয়ে বললাম- ছিলো, এইমাত্র
চলে গেছে কোথাও। তরুণীটি ম্লানমুখে দাম মিটিয়ে সঙ্গীদের নিয়ে বেরিয়ে যেতে,
শ্যামলতরু বললো- এটা কি হলো? বললাম- লজ্জা করে। বন্ধুদের সৌজন্যে এটাই প্রথম বই।
এটাই শেষ বই। আর তো হবে না! এখানে বলে রাখি, আমার সেই ভোরবেলার বন্ধুরা, যারা আমার
পরবর্তীকালের লেখালিখির আর তেমন খোঁজ-টোজ রাখতে পারেনি, তাদের কাছে আজও আমি সেই
‘দেবদারু কলোনি’র কবি হয়ে থেকে গেছি। বলা মুশকিল, এটা পুরস্কার না তিরস্কার।
তখন বোধহয়
কস্ট-অ্যাকাউন্টেন্সি পড়ছি। ক্লাস-টাস করে বিকেলের দিকে মেলায় যেতাম। অল্প বয়েস,
পেটে সবসময় খিদে। পয়সা না থাকাতে খিদে ঢাকতে জল খেতাম প্রচুর। কে যেন জানতে পেরে
পৃথ্বীশদাকে বলেছিলো। একদিন স্টলে যেতেই সান’দা বলো- ভিতরে এসো। মানে কাউন্টারের
ওপাশে। আমি সাধারণত বাইরেই দাঁড়াতাম। বললাম – কেন? -আরে এসোই তো! ঢুকলাম। সান’দা
কাউন্টারের নীচে হাত ঢুকিয়ে একটা খাবারের প্যাকেট বের করে আনলো। বাটা তখন কর্মীদের
লাঞ্চ দিতো। চিফ আর্টিস্টের লাঞ্চ। সকলে ভাগ করে খেলাম সেই মাতৃস্নেহ। নিজে না
খেয়ে এক অখ্যাত লিখিয়ের জন্য তিনি রেখে গেছেন মহাপ্রসাদ।
আমি যে জীবনে কিছুই লিখে উঠতে
পারিনি তা আমার চেয়ে বেশি আর কে জানে! তবু যখনই এইসব অমৃত-স্মৃতি মাথার ভেতরে
জ্বলে ওঠে তখন ভাবি, ভাগ্যিস কবিতা লেখার একটা চেষ্টা করেছিলাম, তাই তো এমন মহান
মানুষদের ছায়ায় দু’দন্ড দাঁড়াবার সুযোগ এসেছিলো জীবনে। এখনো কেবল সেজন্যই
মাথাভর্তি তারা জ্বলা আকাশ নিয়ে লিখবার চেষ্টা করে চলেছি শেষ বইটিকে। এক জীবনে কতো
কী যে ঘটতে পারে, আগাম বলা যায় না।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন