‘When I write, I am a dictator’
বিষয় :
ফারসি ‘নতুন কবিতা’
সাক্ষাৎকার : আলি আবদোলরেজ়ায়েই
কবি আলি আবদোলরেজ়ায়েই-এর
সাথে একটি কথোপকথন
তৃতীয় পর্ব
পূর্বাভাস : অগাস্ট-সেপ্টেম্বর,
২০১৩, শরৎ
--অর্জুন
বন্দ্যোপাধ্যায়]
১৫. পার্সিয়ান অর্থোডক্স ট্র্যাডিশনের স্ট্রেটজ্যাকেট
থেকে আপনার ক্রিয়েটিভিটি এবং নিজেকে কিভাবে এড়িয়ে রাখেন...
দ্যাখো, ক্রিয়েটিভিটির নতুন
আঙ্গিক এবং নতুন বিষয় যখন এসে যায় তখন এটা তার সাথেই হয়ে যায়। এমন একটা নতুনের
ভেতরে আমরা তখন জীবনের নিঃশ্বাস নিচ্ছি, যার প্রতি পাঠকেরও আকর্ষণ তৈরি হচ্ছে। আমি
আগে যেটা বললাম আর কি, এটা আসলে একটা বিরাট প্রান্তসীমাকে মঞ্চের মাঝখানে নিয়ে
আসা; আর সেন্টার স্টেজের বিষয়গুলোকে সরিয়ে ফেলার একটা সময়।
১৬. আপনার নিত্যনতুন আঙ্গিক ও ভাষা এবং আপনার সেন্স অফ
সেলফ্ আইডেন্টিটি... এই দু’য়ের মধ্যে সেলাই-পর্বটা কিভাবে চলে? কিভাবে এগুলো পাল্টেও যেতে থাকে?
আমি তো আসলে
অনেকগুলো আবদোলরেজায়েই-এর একটা সংকলন। আমার প্রত্যেকটা কবিতার মধ্যে এই অনেকগুলো
আমি-র অন্তত কোনো একটা অবশ্যই থাকে। এখন, কোন্ আমিটা থাকবে সেটা নির্ভর করে লেখার
সময়ে আমার মনের অবস্থার ওপর। এই যে পার্সোনা, এটাই ভাষা এবং আঙ্গিককে নিয়ে আসে। যেটা
সেই সময়ে আমার কাছে কতটা সন্তোষজনক কিম্বা কতটা এক্সপ্রেসিভ হয়ে উঠছে সেটাই দেখার।
১৭. ফারসি কবিতায় তো ছন্দ নিয়ে প্রচুর কাজ রয়েছে। আপনি
কবিতায় ট্র্যাডিশনাল ছন্দগুলো রাখেন না কেন?
হ্যাঁ,
আমাদের ফারসি কবিতায় নানারকম ছন্দ রয়েছে, গজলেরই তো কত প্রকার। এগুলোকে আমি ফারসি
কবিতার ধ্রুপদী আঙ্গিক হিসেবেই ভালোবাসি। আর হ্যাঁ, আমি কিন্তু এখনও এই ছন্দে
লিখি। কখন লিখি জানো? যখন আমি কোনো মহিলার প্রেমে প’ড়ে তাঁকে প্রেমপত্র লিখছি, ওঁকে খুশি করার জন্য লিখছি। কিন্তু আমি
কখনোই একে ট্রু-পোয়েম ব’লে মনে করি না। আমি প্রচণ্ডভাবে
বিশ্বাস করি, প্রকৃত কবিতা লেখা হয় একমাত্র প্রকৃত স্বাধীনতার (অ্যাবসোলিউট
ফ্রিডম্) মধ্যে দাঁড়িয়ে। যখন তুমি কোনো পূর্ব-প্রতিষ্ঠিত আঙ্গিককে অনুসরণ করছো,
তখন তুমি সেই আঙ্গিকের ডিক্টেট করা রীতিকেই অনুসরণ ছাড়া আর কিচ্ছু করছো না। কিন্তু,
যখন ‘আমি’ কবিতা লিখছি, তখন
একমাত্র আমিই ডিক্টেটর।
১৮. আপনার কবিতায় শব্দের ধ্বনি-নির্ভরতার ওপর কিভাবে কাজ
করেন আপনি?
দ্যাখো,
প্রথানুগ ধরনের কবিতায় আঙ্গিকে আমার হাত খুব একটা খারাপ নয়। মানে, ক্লাসিক্যাল
প্যাটার্নের কথা বলছি আর কি। কিন্তু একে অনুসরণ করার বাইরে আমি এর চেয়ে অনেক বেশি
এক্সপ্রেসিভ এক আঙ্গিক খুঁজে পেয়েছি কবিতা লেখার জন্য। সেটা হ’ল alliteration এবং internal rhythm. বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমি
টোন ব্যবহার করি এইজন্য। ছন্দ নয়।
১৯. আপনার কি মনে হয় না যে, একটা ভালো কবিতার অবশ্যই
একটা ক্লিয়ার-কাট্ মিনিং থাকা দরকার?
কক্ষনো না। আমি
একেবারেই তা’ মনে করি না। এরকম একমুখী
কবিতা সবসময় পাঠকের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়। এ’ কারণে আমার
কবিতায় পরিকল্পিত মোটিফের পাশাপাশি আমি বেশ কিছু ফ্রি-মোটিফও রেখে দিই, যাতে পাঠক
এর থেকে আরও অন্য কোনো মানে খুঁজে পাওয়ার একটা স্বাধীনতা পায়। যে কবিতাকে পাঠক-সমালোচকেরা
সবাই একইরকম ভাবে দ্যাখে, মানে একই এ্যাঙ্গেল থেকে দ্যাখে, সেরকম লেখা আমার একেবারেই
পছন্দ নয়।
[ক্রমশঃ...]
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন