মায়াকানন-১০ : কলম
উগ্র সূচের মতো বিঁধে আছে সকালের গায়ে। চিহ্নে আর
বিদ্যুতের তারে বারবার দুলে উঠছে। অকারণে ছিন্ন করছে টানটান হাওয়া, ভিন্ন করছে নানান
সুতোয়। অথচ, কোথায় য্যানো বাধা পড়ছে আজ। পাথরের ভাঁজ থেকে উড়ে যাওয়া প্রজাপতিগুলি আমাকে
নাকাল করছে বারবার।
দেখতে পাচ্ছি—ওইদিকে, একটিমাত্র ভাবনার দূরত্বে
দাঁড়িয়ে আছো তুমি। তুমি আছো, অস্ফূট অক্ষরের পাশে ব্যবহার্য আঙুলসমেত। কবে তুমি রিফু করবে, শব্দের খামারে কবে বাঁধা পড়বে,
এই শুধু ভাবি।
মায়াকানন-১১ : নদী
অনেক নদীর তবু একটাই নাম। তারও কি ঠিক আছে কোনো?
ক্ষিপ্ত জলের গায়ে ফুটে উঠছে চিরকালের গাছ, ফুলের
সংক্ষিপ্ত ছায়া। তাকে কি
উপেক্ষা করবো? পাহাড়
ডিঙিয়ে নামছে সহস্র কিউসেক স্মৃতি, অচেনা মৌজার পাশে জল পালটে ফিরে আসছে ব্যাহত জড়ুল, ফিরে
আসছে বারবার বিকল্পসমেত।
য্যানো, বিগতজন্মের রোদ ঢলে পড়ছে এ-জন্মের বারান্দায়,
ছাদে। যেখানে কাপড় মেলো—স্নান সেরে, ডালিমের চারাটিকে শ্রুশ্রূষা দাও। নদীমাতৃক এই
সভ্যতায় তুমি য্যানো যথার্থই ধাঁধা। নানান প্রবাহ ছুঁয়ে, কত যে প্রবাহ ছুঁয়ে বসে আছো।
মুগ্ধ পাখির ঠোঁটে, তুমি কি কুড়িয়ে আনা অন্যতম বীজ?
তুমি কি জলের নিচে ডুবে থাকা সবুজ পাথর?
মায়াকানন-১২ : রাস্তা
বাচ্চাদের হাসিকেও ভয় পেলো পায়রার ঝাঁক। কার্নিশের
রেখা ভেঙে সহসা লাফিয়ে উঠলো বিকেলের গায়ে। কীভাবে জড়িয়ে গ্যালো ভাষাহীন পথিকের
চুলে, মেঘের ভেতর থেকে ঝরে পড়া সৌরছাই!
তখন অন্য কোনো দ্রাঘিমার পাশে তুমি ঘুমিয়ে পড়েছো। ও
জানলায় ফুটে উঠছে নিভে যাওয়া নক্ষত্রগুলি। অযথা তোমাকে ডাকতে দ্বিধা হয়। এতোসব
আয়োজন ফেলে, কে শেখাবে তোমাদের ভাষা কিংবা অর্থের রীতি, পাথরে পাথর ঠুকে আগুন
জ্বালানো?
শেষ হওয়ার আগেই ফুরিয়ে আসে তর্কপ্রবণ এই রাস্তাটি—অনিবার্যভাবে। হাওয়ায় কাঁপতে থাকা শ্বাসকল, পাঁজরের
ভাঁজে রাখা শাদা পাতা পাক খায় ধুলোর
ভেতরে।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
গতজন্মের রোদ ঢলে পড়ছে এ-জন্মের বারান্দায়, ছাদে। যেখানে কাপড় মেলো—স্নান সেরে, ডালিমের চারাটিকে শ্রুশ্রূষা দাও।
উত্তরমুছুনভাবনা ভালো লাগলো