বিজয় দে র কবিতা
ঘিলু ১৫ লাইন
বাপের ঘিলু জন্ম দাও মায়ের ঘিলু হৃদয় দাও
বাপের ঘরে মাকে দাও মায়ের ভেতর বাবা দাও
মায়ের বেতর বাড়ি দাও বাড়ির ভেতর হাড়ি দাও
হাঁড়ির ভেতর তারিখ দাও তারিখ-ভরা ছুটি দাও
ছুটির কড়াইশুটি দাও ছুটির জরিবুটি দাও
মায়ের ভেতর ছুটি দাও হা-য়ের ভেতর রুটি দাও
মাথার ঘিলু শব্দ দাও পায়ের ঘিলু সত্য দাও
যা রে সত্য তীর্থে যা বাপ খতম ঢাক বাজা
ঢাকের আওয়াজ ঢাকনা নাই বাপ মরেছে মাকে চাই
এবার মাকে নিয়ে তোল বনে চিতা সাজাই দুই জনে
বাবার ঘিলু স্বপ্ন দাও মায়ের ঘিলু ছেলে দাও
ছেলের ভেতর মায়ের হিম আঁতুরঘরে ভীতুর ডিম
ভীতুর ভয় একা একা ডিম-ফাটানো পদ্য লেখা
পদ্যপাড়ার ভুবনতলে ছেলের ঘিলু আগুন জ্বলে
বাপের বাড়ি মায়ের দেশ ছেলের ঘরে ঘিলু শেষ
জিহ্বা পুর্ণলিখন ১
সেই এক স্বপ্ন কোনওদিন কোনও ডানাঅলা জিভ
দু’দিকে দু’রকম ইছামতী নদী
বাংলা প্রধান জলস্রোত
সেই স্বপ্ন চিরদিন এক স্বাধীন সবুজ জিভ
সহস্র পীরের ভিড়ে যেন একজন লালন ফকির
সেই এক স্বর্গ ফেরত জিহ্বা চিরকাল বলে যাচ্ছে
‘আল্লা আল্লা হরে হরে
আমার স্বপ্ন যেন প্রতিদিন পূজা
ও রোজা পালন
করে’
জিহ্বা পুর্ণলিখন ২
আমার ইচ্ছা যেন আমাদের উপদ্রুত সীমান্ত
গোকুল দাস আর নকুল মিঞা
গোপনে কাঁটাতার পেরোতে গিয়ে দেখে
কোন প্রহরী
নেই
কেবল একটি প্রকান্ড প্রবল জিহ্বা
আর ওই জিহ্বার ক্রোধ
মালতী দাসী আর সাদিজা বেগমের
সমস্ত বোধ শুষে
নিচ্ছে
আমার ইচ্ছা আমাদের সামরিক আদালত
আমি জিহ্বার মৃত্যদন্ড ঘোষনা করেছিলাম
আজও জিহ্বার কোনও ক্ষমা নেই
পোস্টকার্ড ১
নিমপাতা লোহা
আগুন
তিনটি কাক স্নানের জল নিয়ে উড়ে আসছে
ক্ষীর নদীর কূল থেকে এই শহরের দূরত্ব কত
মাঝরাতের গুমোট রান্নাঘর
একা একা
কান্না
এই কান্না কে আমরা স্নানের ইতিহাস বলি
চারটি সাদা ইঁদুর আঁটটি কালো বেড়াল ছয়টি সবুজ টিকটিকি
সাতটি সোনালী আরশোলা
ইতিহাসের চিৎকার শোনা যায়
স্নানের জল এখনও আসে নি আসবে
আসবেই
সমস্ত শরীর হলুদবাটা মেখে বসে আছো তুমি
পোস্টকার্ড ২
সমস্ত শরীরে হলুদবাটা মেখে বসে আছো
তোমাকে এখন একটি পোস্টকার্ড ভাবতে পারি
আজ তুমি কা’র ঘরে যাচ্ছো
তোমাকে মিছিলের দু’দিকে ইচ্ছেমত ডানা ভাবছি
তোমাকে ডানার ভেতর লেগে থাকা সূর্যাস্ত
ভাবছি
তোমাকে সূর্যাস্তের ভেতর ফুটে ওঠা
ধানক্ষেত ভাবছি
আজ তোমার বুকে কি লেখা আছে
ভোরবেলা সব দেশ
সমান
ভোরবেলা কোন দেশ
ভাগ হয় না
হয়তো তুমি একটি দেশের নামও হতে পার
ঠিকানা লেখা শেষ এবার স্নান
এখন তুমি একটি হলুদরঙা পাখি হয়ে উড়ে যেতে
পারো
পোস্টকার্ড ৩
ভোরবেলা কোন
দেশ ভাগ হয় না
ভোরবেলা সব
ইচ্ছে সমান
এক লাইন পাখি
বা পোস্টকার্ড
দু’লাইন ঠিকানা উড়ছে
তিন লাইনে ফিরে
এসেছো হে দীর্ঘ ব্যবধান
ভোরবেলা তোমার
ও আমার ইচ্ছে
অসম্ভব
সমান
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
জিহ্বা- ২ আর পোস্টকার্ড সবচেয়ে ভাল লাগলো । "এক লাইন পাখি বা পোস্টকার্ড / দু'লাইন ঠিকানা উড়ছে" কেয়া বাত স্যার ।
উত্তরমুছুন