দেবায়ুধের কবিতা আজ থেকে পড়ছিনা।যখন ও স্কুলে পড়তো,তখন থেকে ওর লেখা আমাকে টেনেছিলো।মনে আছে তখন বইমেলায় আমি আর আমার বন্ধু অভীক দত্ত দুজনে আদরের নৌকা নিয়ে বইমেলায় স্টল নিয়ে বসেছিলাম । সবে লিটিল ম্যাগাজিন করতে আসা।সে সংখ্যায় আমরা দেবায়ুধের লেখা ছেপে ছিলাম। সেই স্কুলে পড়া ছেলেটি আমাদের টেবিলে এসে যখন ম্যাগাজিনের কপি নিতে আসলো,সেইদিন থেকে বন্ধুত্ব ও সম্পর্ক আরো বেড়ে গেলো। প্রথম থেকেই দেবায়ুধ একটা লেখার অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতো।আমি দেখেছি,কবিতাকে পাওয়ার জন্যে ওর কি আন্তরিকতার।একজন সার্থক ও সঠিক কবির মধ্যে যা যা গুণ থাকা দরকার সবই দেবায়ুধের মধ্যে আছি এবং ছিলো।তাই বার বার ওর লেখা পড়ে চমকে যাই।এক নয়াদুনিয়ার স্বাদ পাই।আসলে শূণ্যদশকের আমার বন্ধুরা যারা কবিতাকে একদম অন্যদিকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন,সে স্রোতে দেবায়ুধ যায়নি।সে নিজের কবিতার প্রতি দৃঢ় সঙ্কল্প ছিলো।সে বোধহয় কবিতার দর্শনের একটা আন্দাজ পেয়েছিলো। তাই সে আলাদা ও নিজস্ব।এই সময়ের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতার ওর কলমে। তাই যখন ওর কবিতার বই “ ভোররাতের এইট-বি” আমার হাতে আসলো,স্বভাবতই আমি পাতাওল্টাতে ওল্টাতে এক একটা তারার প্রেমে আবব্ধ হয়ে গেলাম।এইরকম লেখা আমার সমসাময়িক খুব কম কবিই আছেন,যিনি লিখতে পারেন।ইংরেজি সাহিত্যের কৃতিছাত্র দেবায়ুধের একটি কবিতা তাহলে পড়া যাক।
প্রকাশক যাপনচিত্র
দাম ঃ ৬০/-
অনলাইন প্রকাশক ঃ
আদরের নৌকা
ভোর রাতের এইট-বি ঃ এক
বিস্ময় বালকের মুখোমুখি
রঙ্গীত মিত্র
দেবায়ুধের কবিতা আজ থেকে পড়ছিনা।যখন ও স্কুলে পড়তো,তখন থেকে ওর লেখা আমাকে টেনেছিলো।মনে আছে তখন বইমেলায় আমি আর আমার বন্ধু অভীক দত্ত দুজনে আদরের নৌকা নিয়ে বইমেলায় স্টল নিয়ে বসেছিলাম । সবে লিটিল ম্যাগাজিন করতে আসা।সে সংখ্যায় আমরা দেবায়ুধের লেখা ছেপে ছিলাম। সেই স্কুলে পড়া ছেলেটি আমাদের টেবিলে এসে যখন ম্যাগাজিনের কপি নিতে আসলো,সেইদিন থেকে বন্ধুত্ব ও সম্পর্ক আরো বেড়ে গেলো। প্রথম থেকেই দেবায়ুধ একটা লেখার অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতো।আমি দেখেছি,কবিতাকে পাওয়ার জন্যে ওর কি আন্তরিকতার।একজন সার্থক ও সঠিক কবির মধ্যে যা যা গুণ থাকা দরকার সবই দেবায়ুধের মধ্যে আছি এবং ছিলো।তাই বার বার ওর লেখা পড়ে চমকে যাই।এক নয়াদুনিয়ার স্বাদ পাই।আসলে শূণ্যদশকের আমার বন্ধুরা যারা কবিতাকে একদম অন্যদিকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন,সে স্রোতে দেবায়ুধ যায়নি।সে নিজের কবিতার প্রতি দৃঢ় সঙ্কল্প ছিলো।সে বোধহয় কবিতার দর্শনের একটা আন্দাজ পেয়েছিলো। তাই সে আলাদা ও নিজস্ব।এই সময়ের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতার ওর কলমে। তাই যখন ওর কবিতার বই “ ভোররাতের এইট-বি” আমার হাতে আসলো,স্বভাবতই আমি পাতাওল্টাতে ওল্টাতে এক একটা তারার প্রেমে আবব্ধ হয়ে গেলাম।এইরকম লেখা আমার সমসাময়িক খুব কম কবিই আছেন,যিনি লিখতে পারেন।ইংরেজি সাহিত্যের কৃতিছাত্র দেবায়ুধের একটি কবিতা তাহলে পড়া যাক।
শহর আর তার মায়াবীলীলা দেবায়ূধে কবিতাও কখনো
হ্যালোজেন জ্বালায়,কখনো কোনো প্রেমিকার স্পর্শের মতো ভেসে আসে...মানুষের জীবনের
লড়াই থেকে বেঁচ যাওয়া বোধ ...প্রেম স্নেহ হয়ে যায়। যেখানে কবি কোনো সীমানার ভিতর
নিজেকে বেঁধে রাখতে চান না। যেকোনো শব্দ চিত্রকল্প তাঁর কবিতার সম্পদ হয়ে ওঠেন।
এবং দেবায়ুধ একজন সৎ কবি।সে তার পবিত্র লেখনী দিয়ে বাংলাভাষাকে সমৃদ্ধ করে যাচ্ছে।তাই
এই অল্প বয়েসেই সমালোচক পাঠকের কাছে ও সমাদৃত,যা কিনা শুণ্যের অনেকেই পারেননি।তাঁদের
লেখায় দুর্বোদ্ধতা,থিয়োরিটিক্যাল কচকচানি ইত্যাদি ইত্যাদি কারণে তাদের লেখা জলীয় ও দুর্বল...কিন্তু আগেই বলেছি,দেবায়ুধের লেখাই ওর কবিতার পথ। সে সব সময় স্রোতের থেকে
দূরে থেকে কবিতায় থেকেছে। যেমন ধরুন ওর , “ অ্যাসিড স্নানের জার্নাল”কবিতাটি। এখনে
কবির দীর্ঘ যাত্রাপথের কথা আঁকা আছে। কবিতার ভিতর এক বিশাল নিঃসঙ্গতা। প্রাপ্তি আর
অপ্রাপ্তির খেলা।এখানে কবি খুব নেগেটিভ হয়েও কোথাও যেন জীবনের কথা বলছেন। পাঠক
খেয়াল করুন,কবি এখানে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কথা বলেও,শেষের দিকে এক মিলনের কথা বলছেন।সঙ্গীহীনতার ভিতর বন্ধুত্বের
কথা বলছেন।কারণ একা থাকা যায়।সবাইকে নিয়ে থাকাটাই বেঁচে থাকা।রাগী যুবক কবি এখানে
প্রেমিক হয়ে আমাদের পাশের মানুষ হয়ে নিঃসঙ্গতার ভিতরও সৌন্দর্য্যের সন্ধান
দিয়েছেন। একদিন বর্জন ও অন্যদিকে গ্রহন...সভ্যতার এই
বেড়ে চলার ইতিহাসই দেবায়ুধের কবিতা।এই কবিতা ও যখন লিখছে,তখন ও কলকাতায়।সময়টা ভীষণ ভাবে ধরা পড়ছে ওর লেখায়।
ইচ্ছে করছে
বইটার সব কবিতা নিয়ে লিখি।কারণ লেখাটা আমাকে দিয়ে লেখাচ্ছে।আমি কিছুতেই চুপ করে থাকতে
পারছিনা। পরের যে লেখাটা নিয়ে বলবো সেটাও আমার প্রিয় কবিতা।কবিতাটার নাম,”আগন্তুক”। এটা একদম একটি ব্যক্তিগত প্রেমের কবিতা।
এখানে নারী,প্রেম,ভালোলাগার
চত্বর,যৌনতা...সৌন্দর্য্যকে
কবি গ্রহন করেছেন...আসলে পৃথিবীর সমস্ত ভালো জিনিসগুলো কবির কাছে এসে জমায়েত
করেছে।কবি তো সুন্দরের প্রেমিক।যে সুন্দর,যা পবিত্র তাকে তো কবির ভালো লাগবেই। এইভাবে লেখাটি গভীর থেকে গভীরতর
পর্যায় নিয়ে যায় পাঠককে।প্রেম সঞ্চার করে,পাঠকের মনে।কখনো আমি খুব উত্তেজিত হয়ে বলে উঠি “
পাতাওল্টাতে ওল্টাতে
আর একটি অসাধারণ কবিতায় আটকে গেলাম। কবিতাটির নাম , “ তোমাকে , নির্জনতা...”। জীবনের
অনিশ্চয়তা কখনো কনফিডেন্সকেও নিয়ে চলে যায়। সেখানে সব যৌনতা,সব আবেগের ঘুম। কখনো
সেই হতাশার হাত ধরে নেশা নেমে আসে।ছটফট ছটফট করতে থাকে শরীর। অন্ধকার আর
শব্দহীনতাও মাথার ভিতর যন্ত্রনার ঔরস ফেলে দিয়ে যায়।এইসব নিজের।একান্ত নিজের।যা
অন্যকে বোঝানো বা ব্যাখ্যা করা প্রায় অসম্ভব,সেখান থেকে এই লেখা নিয়ে গেছে
অন্যগোলার্ধ্যের দিকে। সব কিছুর ভিতর থেকে উঠে এসেছে তাই চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জকে
কবি ভয় পান না।তিনি তাকে বরণ করেছেন,প্রেমের মতো। এই যে সহজ সরল ভাবে জীবনকে
বোঝায়।সময়কে বোঝা।এ কেবল দেবায়ুধ পারে।আমাদের সময়ের আর কবির কবিতাও আমরা এই সহরকে
পাই তিনি সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় । তবে তাঁর কবিতার আর্বানিটি ও জার্নি পৃথক। তবে
দুজনের কবিতার ভিতর আন্তর্জাতিকতা লুকিয়ে আছে।ন্যাকামি,লেজুরপনা নেই...নেই
আলসেমি...পরিরশ্রম...স্বাভাবিক জীবন আছে।যেখানে কোনো কৃত্রিমতা নেই।রোমান্টিক কবি এ
যেন জীবনের গান লিখে গেছেন।সেই গান গঙ্গার জলের মতো পান করি।সেই গান আমার রক্তে
বয়েচলে।অনেকদিন ধরে তাই ভাবছিলাম,দেবায়ূধের কবিতা নিয়ে লিখবো।আজ লিখে ফেল্লাম।একটা
কথা বলি,দেবায়ুধ একজন শিক্ষিত পাঠকও বটে।ছন্দশিল্পে তার সুদক্ষ যাতায়াত । তার
জ্ঞান,মেধা,বোধ আমাকে অবাক করেছে।আমি আমার চোখের সামনে দিয়ে বাংলা সাহিত্যের এক
নক্ষত্রের বেড়ে ওঠা দেখতে পাচ্ছি।দেবায়ূধের আরো ভালো লেখা পড়ার জন্যে অপেক্ষায়
আছি।কবিকে বলি, তুমি লিখে যাও। তোমাকে সেলাম করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন