সমর রায় চৌধুরী’র কবিতা
ভ্যালেনটাইন
আমার বাহু’র তিল তোমার বুকের তিলকে ভালবাসে
আমার গজদাঁত তোমার কোমরের জরুলকে ভালবাসে
আমার ইসকিমিয়া তোমার ব্লাড-প্রেসারকে
ভালবাসে
আমার সিগারেট তোমার এলাচ-দানাকে ভালবাসে
আমার চোখ তোমার নাভিকে ভালবাসে
আমার গলব্লাডার তোমার কিডনিকে ভালবাসে
আমার অস্থিরতা তোমার শান্ততাকে ভালবাসে
আমার জামা তোমার শাড়িকে ভালবাসে
আমার রুক্ষতা তোমার স্নিগ্ধতাকে ভালবাসে
আমার অশ্রু তোমার থুথুকে ভালবাসে
আমি পাগল কলম হয়ে তোমার কাছে
তুমি সাদা পৃষ্টা হয়ে বিছানায়
লেখাগুলি,কথাগুলি চুমু হয়ে নামে
চুমুগুলি তারা হয়ে আকাশে সারারাত
আমি তোমার দীর্ঘশ্বাস
তুমি আমার মন
উদাস ভেসে বেড়াও
তোমারই আনাচে কানাচে
দিগন্ত
যে টিলা নেই
সেই টিলার ওপর দাঁড়িয়ে দেখি
একই সাথে আমার দুইচোখ দু’রকম দৃশ্য দেখছে
বাঁ চোখে দিন, আর
ডান চোখে রাত্রি
রাত্রির রক্তাক্ত আকাশে অতিকায় নীল এক
চাঁদ
চরাচর জুড়ে অবিরাম ঝরে পড়ছে
কুচি কুচি, রাশি রাশি হলুদ তারা
তারার বৃষ্টি আকাশ থেকে
নির্জনতা আর নৈঃশব্দ্যের ভয়াবহ খুলির ওপরে
বিপরীতে দিনের উদ্ভাস
ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালি মাছ উড়ছে
ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘের ভিতর
কচুবনে পড়ে আছে স্মৃতি-বিস্মৃতির
এক হাঁ-করা শব
মুখগহ্বর থেকে তার বেরিয়ে আসছে
রং-বেরং এর প্রজাপতি
এমন সময়
শব্দ নিশুতি রাতের হাওয়া
দৃশ্য অদৃশ্যের হাত ধরে নিরুদ্দেশ,আর
আমি দিন-রাত্রির সঙ্গম আর সহমরণের ওপর
অন্ধ ভোমরার মত কবল ভোঁ ভোঁ করছি
ধূ ধূ করছি যেন আমিই দিগন্ত
চাষাবাদ
চুপ
কথা বলতে গেলে
খোলা মুখ দিয়ে ভেতরের পাখিরা উড়ে যেতে
পারে
তাই চুপ
তাকাতে পারি না
বন্ধ চোখের ভেতর জেগে থাকা ছবিরা
যদি চোখ খুলতেই মুছে যায়
যাই না কোথাও আমি
কোথাও থাকি না
শুধু মনের ভিতর
মনের গভীরে মনচাষা আমি
চাষাবাদ করি মনে মনে
চুমুপোকা
( উৎসর্গঃ সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় )
আমার ক্ষত চিহ্ন ওড়ে
কে শিল্পী ওই
ক্ষতের
দংশন , জ্বালা
বুঝি না কিসের
খুঁজতে খুঁজতে স্বপ্নের ভেতর
একটা শব্দ পাই ; ‘চুমুপোকা’
ঘুমের ভেতর
তবে কি ওই শব্দেরই কামড়
একটি অবাস্তব শব্দেরও
তা’হলে এতটাই বিষ, আর
এমন প্রদাহ
চুমুপাখি
কোথাও নিশ্চয়ই চুমুপাখি
তার কিচির মিচির, আর
ডানার ঝট্ পট্
দেখি না তাকে
শুধু ভাসমান ছায়া
শুধু তার উড্ডীন শাদা শাদা ছায়া......
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন