‘I still write, because I’m sorry’
সাক্ষাৎকার : আলি আবদোলরেজ়ায়েই
বিষয় : ফারসি ‘নতুন কবিতা’
কবি আলি আবদোলরেজ়ায়েই-এর সাথে একটি
কথোপকথন
পঞ্চম ও শেষ
পর্ব
পূর্বাভাস : অগাস্ট-সেপ্টেম্বর, ২০১৩, শরৎ
[২০১৩’র অগাস্ট মাস। একটি সাক্ষাৎকার নিতে চেয়েছিলাম কবি আলি আবদোলরেজ়ায়েই-এর। আবদোলরেজ়ায়েই ইরানে, ফারসি ভাষার ‘নতুন কবিতা’ আন্দোলনের অন্যতম একজন। ইরানে, ফারসি ভাষায় যে সময়ে new poetry movement হয় সেটা গত শতকের ’৮৯-’৯০। ’৭৯তে ইসলামিক রেভোলিউশনের প্রায় একযুগ পরে এই আন্দোলন ওখানে গড়ে ওঠে। যখন এই বাঙলায়, বাঙলা ভাষায় বারীন ঘোষাল, স্বপন রায়, রঞ্জন মৈত্র এবং আরও আরও অনেকে মিলে ধীরে
ধীরে গ'ড়ে তুলছেন (সেটা নয়ের দশকের প্রথম দিক, ’৯২-’৯৩) ‘নতুন কবিতা’। সময়ের এই অদ্ভুত যোগাযোগ আমাকে অবাক করে। তখনও জানি
না বিস্ময় আরও বাকি আছে। অবাক হয়ে যাই আমাদের বাঙলার ‘নতুন কবিতা’র সাথে চিন্তার জায়গায়,
কবিতায় টেকনিক্যালি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জায়গায় ফার্সি নিউ পোয়েট্রির ভাবনায় বেশ কিছু মিল দেখে। দুটো আলাদা দেশে, আলাদা ভাষায়, কিন্তু একই সময়ে দাঁড়িয়ে কোনো যোগাযোগ কোনো জানাজানি ছাড়াই পৃথিবীর দুই প্রান্তে ঘটে যাওয়া ‘নতুন কবিতা’, কবিতার এই ভাঙচুর আমাকে ভাবিয়ে তোলে। ভাবিয়ে তোলে সময়ের এই অদ্ভুত যোগ। তাই প্রায় মরিয়া হয়েই এই সাক্ষাৎকার
নিতে চাওয়া। বলা ভালো
ঝাঁপিয়ে পড়া। প্রথমে
সত্যিই আমি ভাবিইনি আলি রাজি হবেন। প্রায় দু’মাস
ধ’রে চলে এই সাক্ষাৎকার পর্ব । শুরুতে,
ভাষা একটা বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কবি আবোল
ফ্রাওশান এগিয়ে আসেন এ’ ব্যাপারে সাহায্য করতে। আবোল জন্মসূত্রে ইরানের। বর্তমানে থাকেন লণ্ডনে। ফারসি থেকে আবদোলরেজ়ায়েই-এর অনেক কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন আবোল। নিজে কবিতা লেখেন ইংরেজিতে। যে সময়ের কথা বলছি, তখন ওঁর
বাবা অসুস্থ। হাসপাতালে
ভর্তি। সে
অবস্থাতেও এই সাক্ষাৎকারে আবোল ফ্রাওশান যে সাহায্য করেছেন তার জন্যে কোনো
কৃতজ্ঞতাই যথেষ্ট নয়।
একেবারে
আলাদা ঐতিহাসিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়েও একই মহাদেশে একই সময়ে এই দুই দেশের
দুই ভাষায় ‘নতুন
কবিতার’ ভাবনায়
ছড়িয়ে রয়েছে পরতে পরতে মিল। ওঁদের ‘নতুন কবিতা’র চর্চা আমাকে আবার সেই ভাবনার কাছে নিয়ে গিয়েছিল, যে, পৃথিবীতে কোনো ভাবনাই অযোনিসম্ভূত নয়। সময়ের দাগ সর্বত্র লেগে আছে। নইলে, নব্বই দশকের মাঝামাঝি যখন এই বাঙলায় ‘নতুন কবিতা’র কাজ হচ্ছে, যেভাবে হচ্ছে, ঠিক একইসময়ে অন্য আরেকটি দেশে, অন্য ভাষার কবিতায় কিভাবে টেকনিক্যালি, এবং চিন্তা-ভাবনার জায়গায় এত সাযুজ্য পাওয়া যায়!
আমার পাঠানো প্রায় চল্লিশটি প্রশ্নের উত্তর আবদোলরাজ়ায়েই পাঠাতেন আমার জি-মেল আইডিতে। ধাপে ধাপে। আমিও ওঁর উত্তরের প্রেক্ষিতে কিছু প্রশ্ন থাকলে তা পাঠাতাম একইভাবে। ফারসিতে দেওয়া আবদোলরেজায়েই-এর এই সাক্ষাৎকারটির অনেকখানিই ইংরেজিতে অনুবাদ করে দিয়েছেন আবোল ফ্রাওশান। বাকিটা, আবদোলরেজায়েই নিজে। আলিদা আমাকে ইংরেজি ভার্সানটাই পাঠাতেন। আমি সেটিকে বাঙলায় ভাষান্তরিত করেছি।
‘বাক্’-এর
৭৯তম সংখ্যা থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ পেতে শুরু করেছিল
এই সাক্ষাৎকার। এই সংখ্যায় [বাক্ ৮৩] তার শেষ পর্ব। আগ্রহী ও অনুসন্ধিৎসু পাঠক আবদোলরেজায়েই-এর
কবিতার অনুবাদ পড়তে চাইলে ‘বাক্’-এর ৭৪তম পোস্ট-এর ‘অন্যভাষার কবিতা’ বিভাগটিতে পাবেন। এই তার লিঙ্ক :
২৬. আপনার কবিতায় রিয়েলিটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
ইমাজিনারি রিয়েলিটি সম্পর্কে আপনার ভাবনা...
যখন এর’ম একজন কবিকে দেখি, যে
কবিতার ছায়ায় বাঁচে, কিম্বা যদি একজন প্রতিভাবান কবির সাথে আমার দেখা হয়, আমি
সবসময় বলি, তোমার কবিতাকে কখনো বিট্রে ক’রো না। কবিতায় তোমার কল্পনাকে নষ্ট হতে
দিও না, যার কোনো স্ট্রাকচারই নেই। কখনো কখনো এরকম কোনো কবিতার কয়েকটা লাইন পড়তে
হয়ত আমার ভালোলাগে, কিন্তু সেই লাইনগুলোর মধ্যে আমি কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাই না।
তার মানে সেই টেক্সটের পরিচালক হিসেবে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। যখন একজন প্রকৃত কবি
লেখেন, তখন শব্দ [word] এবং
ভাবনার [thought] মধ্যে কোনো ইন্টারভেল নেই। এই দুটোই
একসঙ্গে ঘটতে থাকে। একটি সৃজনশীল মন যখন সক্রিয়, তখন কবিতার মধ্যে শব্দের
পুনর্জন্ম হয়। এই কারণেই আমি বিশ্বাস করি, কবি এবং লেখকের মধ্যে কোনো মিল নেই। কবিতা
কোনো বর্ণনা নয়। কবিতা— ভাষা এবং কল্পনার এক বিরাট মিশ্রণ। যেখানে প্রত্যেকটা কল্পনার পেছনে একটা অভিজ্ঞতা
আছে। আমি ক্রিয়েটিভ এক্সপেরিয়েন্সের কথা বলছি।
২৭. পাঠকের কাছে আপনার প্রত্যাশা
কার্ল স্যাণ্ডবার্গ লিখেছিলেন
কবিতা হ’ল একটা ইকো, যে একটা ছায়াকে নাচতে বলছে। কিন্তু আমি সত্যিই জানি না কবিতা
কি। আমি শুধু জানি, এটা কি হতে যাচ্ছে, বা আমার ক্রিয়েটিভ রিডার কিভাবে এটাকে
রিরাইট করতে পারে। আমি শুধু আমার শব্দগুলোকে একটা ভুল চরিত্রে নাচতে আর অভিনয় করতে
উৎসাহ দিই। নিজের ভেতরে কোনো নতুন ভাবনা ধারণ না-করলে আমার পাঠক কখনোই আমার
টেক্সটে কবিতাকে খুঁজে পাবে না। প্রত্যেকটা কবিতা তার ভেতরে আরেকজন কবির আত্মাকে ধারণ
করে, যে-কবি আবার নতুন ক’রে লিখবে সেই কবিতাকে। একজন প্রকৃত কবি শব্দের চারপাশে
নৈঃশব্দ ছাড়া আর কিছুই সৃষ্টি করে না। আগে যা কিছু হয়ে গেছে, কবিতা সবসময়েই তার
বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। করবে। আমার মনে হয়, কবিতা আসলে শব্দের আর্কিটেক্ট। এবং কবিই
সেই স্থপতি।
২৮. সৃষ্টি, না নির্মাণ—?
আমার শ্রেষ্ঠ কবিতা আমার জীবন, যা আমাকে
প্রতিনিয়ত পোড়াচ্ছে, আমার কবিতাগুলো এর ছাই ছাড়া কিছুই নয়। আমার মনে হয়, সেরা
কবিতাগুলো কখনো শুরু হয় না। শেষও হয় না কখনো। কেননা, এর কবি যখন একে লেখেন, তখন
তিনি তাঁর আগে লেখা অন্য কবিদের কবিতাগুলো মুছে ফেলেন, যা ইতিপূর্বে লেখা হয়েছে। যারা
শব্দকে মুক্ত করেছিল সংজ্ঞার অনড় কর্তৃত্ব থেকে। ডব্লিউ. বি. ইয়েটস্-এর থেকে এটা
শিখেছি আমি, অন্যের সাথে ঝগড়ায় আমরা তৈরি করি কিছু অসার কথাবার্তা ; আর নিজের সাথে
ঝগড়ায় তৈরি হয় কবিতা, যা আসলে এক আয়না। বিকৃতকে সুন্দর করাটাই যার কাজ। আমি প্রচুর
লিখি, কেননা আমার মনের অন্ধকারের মধ্যে আমার সহ্যশক্তি আরো বাড়ানো প্রয়োজন। এখনও
আমি লিখে যাচ্ছি। কারণ আমি দুঃখিত।
২৯. দেরিদা, বার্থেজ, কন্টিনেন্টাল এই ফিলোসফাররা
আপনাদের আউটলুককে সেসময় কিভাবে প্রভাবিত করেছিল?
দেরিদা, বার্থেজ, ফুকো, দুলুজ, বদ্রিলার এবং সমাসাময়িক
অন্যান্য তাত্ত্বিকদের কাজ যেটা করেছিল, সেটা হ’ল ল্যাঙ্গুয়েজের ওপরে আলাদা
গুরুত্ব আরোপ। এবং এটা বিশ্বাস করা গেছিল যে, সাহিত্যের সমস্ত মেথড এবং টেকনিক
ভাষায় এসে জায়গা পায়। এইজন্যেই ফারসি নতুন কবিতায় ভাষা একটা কেন্দ্রীয় চরিত্রের
ভূমিকা পালন করেছে। যে ভাষা শুধুমাত্র কোনো মেসেজ কম্যিউনিকেট করার উদ্দেশ্যে
ব্যবহৃত নয়।
৩০.
আলিদা, আপনাকে বলেছিলাম, নয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে বাঙলা কবিতাতেও একটা মুভমেন্ট
হয়েছিল। তারও নাম ‘নতুন কবিতা’। কনভেনশনাল বাঙলা কবিতার মোনোটোনাস ফর্ম থেকে
বেরিয়ে আসার জন্য ওঁরা আধুনিক কবিতার সমস্ত টুলগুলোকে, মানে কবিতা থেকে
ট্র্যাডিশনাল গ্রামার, ছন্দ, ইমেজারি [অ্যাবসোলিউট ভিস্যুয়াল ইমেজারি], গল্প,
নাটক, বর্ণনা, ন্যারেশন, লিরিক, অ্যালিগরি, মেটাফর... এগুলো বর্জনের কথা বলেছিলেন।
ইণ্ডিভিজুয়ালিজমের ওপর অনেক বেশি ফোকাস রেখে ওঁরা হাঁটলেন কবিতার মূর্ত প্রতিমাকে
অস্বীকার ক’রে। বাস্তব অভিজ্ঞতার বদলে জোর দিলেন imaginary experience-এর ওপর। আমি জানি, আপনার পক্ষে এটা এভাবে বলাটা খুব
মুশকিল, এভাবে হয়ত বলা যায়ও না, কিন্তু খুব জানতে ইচ্ছে করছে, বাঙলা নিউ পোয়েট্রি
আর পার্সিয়ান নিউ পোয়েট্রির মধ্যে টেকনিক্যালি কি ধরনের মিল আপনি খুঁজে
পাচ্ছেন?
দ্যাখো, এর
উত্তর দিতে হলে আমায় আরো ভালো ক’রে বাঙলা কবিতাটা জানতে হবে। কিন্তু একটা কথা আমি
বলতে পারি, দুটো জিনিসে আমাদের প্রচণ্ড মিল রয়েছে। এক, ভাষার অপরে প্রচণ্ডভাবে নজর
এবং শব্দের ধ্বনি নির্ভরতা।
৩১. কবিতার কি ধরনের পত্র-পত্রিকা প্রকাশিত হয় ইরানে?
সব রকমের কবিতা পত্রিকাই বেরোয় ইরানে। একদম ক্লাসিক্যাল থেকে আধুনিক,
অধুনান্তিক সব রকমেরই। কিন্তু, আভাঁ-গার্দ কবি ও কবিতার প্রতি গভর্ণমেন্টের
নেতিবাচক মনোভাবের জন্য পরীক্ষামূলক আভাঁ-গার্দ কবিতা একেবারেই আণ্ডারগ্রাউণ্ডে
চলে গেছে। এবং হঠাৎ কখনো সখনো সেগুলো প্রকাশিত হতে দেখা যায়।
অর্জুন : পাঠক, আলি আবদোলরেজায়েই-এর সাথে এই কথোপকথন, পঞ্চম পর্বে এসে
এখানেই আপাতত শেষ হচ্ছে। দু’মাস ধ’রে আমাদের মধ্যে চলা এই কথোপকথনে বেশ কিছু কথায়
আগের কথার পুনরাবৃত্তি এসেছিল। সেই পুনরাবৃত্তির অংশটুকু বাদে বাকি-অংশের কিছু excerpts তুলে দিচ্ছি এখানে।
আলি আবদোলরেজায়েই :
‘ ...ঝুঁকি নিলেই কবিতাটা হয়। কবিতায় ঝুঁকি নেওয়ার
কথা বলছি। রিস্ক না নিয়ে যে কবিতাটা লেখা হয়েছে, তাকে আমি ফ্রেশ লেখা বলতে পারি
না। ...সবসময়েই আমি লিখে চলেছি। এবং এটাই আমি করে যাব যতক্ষণ আমার শ্বাস চলবে। আর
যত আমি এ’ পথে এগিয়ে যাব, আমার কবিতার আঙ্গিক আমার নিঃশ্বাসের কাছে আসবে আরো। ...
কবিতার একমাত্র কাজ সুন্দরকে সৃষ্টি করা। আর পাঠকের কাছে আর্টিস্টিক জয়ের মুহূর্তটা
এনে দেওয়া। আনন্দ সৃষ্টি করার চেয়ে বড়ো কোনো কাজ একটি মহৎ কবিতার থাকতে পারে ব’লে
আমি মনে করি না।... একটা কবিতা লেখার জন্য কোনো ইন্সপিরেশনে আমার বিশ্বাস নেই। বরং
আমার মনে হয়, যেটা প্রয়োজন সেটা হ’ল ক্রিয়েটিভ এনার্জি। যখন এই এনার্জি অধঃক্ষেপিত
হয়ে থিতিয়ে জমে যায়, লেখক লিখতে বসেন। মোদ্দা কথা, লেখার জন্য যেটা দরকার, লেখার
মুড।’
সংযোজন :
অর্জুন : পুরো আশির দশক জুড়ে কৌরবের ক্যাম্প, পরে নয়ের দশকে কবিতা ক্যাম্পাস পত্রিকাকে ঘিরে বেশ-কিছু প্রতিভাবান কবি ষাট দশকের কবিতা আন্দোলনগুলির মিলিত ফসল হিসেবে বিবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তখন তুলে আনছেন ‘নতুন কবিতা’। উদ্দেশ্য, বাঙলা কবিতার গড্ডল-প্রবাহ থেকে, রিমেক ধারা থেকে বেরিয়ে আসা। বারীন ঘোষাল তাঁর ‘বাংলা কবিতায় বিশ্বায়ন’ প্রবন্ধে বলছেন : “নব্বই দশকের মধ্যভাগ থেকেই
নতুন কবিতা লেখা হচ্ছে, যা ষাট দশকের আন্দোলনগুলোর মিলিত
বীজের ফসল। নতুন কবিতায় কবিতা
প্রতিমাকে অস্বীকার করা হল, ফলে
কবিতা হল বিষয়হীন। একটি
কেন্দ্রচেতনা থেকে বহির্মুখী অন্বেষণ এবং ভাবনার প্রতিটি পদক্ষেপ লিপিত করতে বলা
হল। বাংলা পণ্যভাষাটিকে বিনির্মিত করে ব্যাকরণ
অলঙ্কার রূপক প্রতীক উপমা চিত্রকল্প অর্থাৎ আধুনিক কবিতার সমস্ত টুলগুলোকে বা
রূপকে বিসর্জন দিতে বলা হল। বলা
হল কবিতা প্রথমে শ্রাব্য তারপর দৃশ্য। এই
অনুধাবনের শর্তে আবেগ অন্তর্হিত হল।……বাস্তবিক
অভিজ্ঞতার বদলে কাল্পনিক অভিজ্ঞতা ও স্পার্ককে ইনটুইশনকে অবলম্বন করতে বলা হল।….বিশ্বায়নের নামে ষাট দশকে বিদেশী
কাব্য আন্দোলনের প্রভাবে যা নাড়াচাড়া হয়েছিল— তা ব্যবহার করলো নতুন কবিতার
কবিরা।’’
এবং যদি ফিরে তাকানো যায় তো
দেখা যাবে সে সময়ে (গত নব্বই দশক) বাংলা চলচ্চিত্রের করুণ দশা। ইরানে কিন্তু তা নয়। ওখানে সেই সময়ে যে ঢেউটা আসে, যেটাকে ‘নিউ
ওয়েভ’ বলা হয়, সেটা
প্রায় সমস্ত ক্রিয়েটিভ ফিল্ডেই এসেছিল। সাহিত্য সিনেমা
বিজ্ঞাপন সবকিছুতে। ইসলামিক রেভোলিউশানের [১৯৭৯] পরে ফারসি কবিতায় পুরনো প্রথাগত কবিতায় ফিরে যাবার একটা
চল এসেছিল। যার সাথে নতুন প্রজন্মের
কবিরা তাঁদের জীবনের অভিজ্ঞতাগুলোকে মেলাতে পারছিলেন না। মূলত এই তাগিদ থেকেই ওখানে গড়ে ওঠে এই কবিতা-আন্দোলন। এর
সাথে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটও অবশ্যই জড়িয়ে আছে।
তো, মোটামুটিভাবে এই হ’ল বাঙলার ‘নতুন কবিতা’ ও ফারসি ‘নতুন কবিতা’র প্রেক্ষাপট। পৃথিবীর কাব্য ইতিহাসে যে দুটোরই সূচনা বিংশ শতকের নব্বইয়ের
দশকে। ভবিষ্যতে এ’ নিয়ে আরো বিস্তর পড়াশোনা এবং অনুবাদ— পরীক্ষামূলক সাহিত্যে আরো
নতুন চিন্তা ও রসদের জোগান দেবে আশা রাখি।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন