হে শূন্যতা, শেষ শাদা কাক, উড়ে গেল, তখন হবিষ্যি-কাল, আমার কথার ভবিষ্যত বললো “নিজেকে বাঁচাও, এই শাদা কাক তোমার নিজস্ব মাতৃভাষা, তুমি কলমে আর ব্যথা নিয়োনা”
যে যা-খুশি বলুক, তুমিও অনেক কিছু বলতে পারো এবং আজ তুমি এই কূলহারানো নদীর ধারে বসে যত কথাই বলোনা কেন, এই বাংলায় ফালতু কাক হয়ে ফিরে আসার কোনও মানে হয়না
অপমানে নদীও পচে যায়, তুমি অপমানিত হচ্ছো, অপমানে ঘুমও টক হয়ে যায়, তুমি অপমানিত হচ্ছো, কিন্ত তোমার অপমানের ওপরে এক্ষুনি যে উড়ে এসে জুড়ে বসলো সে তো কাক নাও হতে পারে
কাক কখনও তার বুকে হাত দিয়ে ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ এই কথাটা বলতে পারেনি, পারেনি এবং পারবেওনা, কেননা তার তো বুকই নেই, শুধু সুলভ শৌচালয়ের এক ভাঙ্গা দরোজা
“ডাকলেও কাক না ডাকলেও কাক”, আশ্চর্য, গুহার ভেতরে এরকম এক একটি খোদাইচিত্র, জনশ্রুতি, সম্ভবত ঈশ্বর এই শিলালিপিটি লিখেছেন বা ঈশ্বরীও লিখতে পারেন, কিম্বা ঈশ্বরচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়, এখনও সঠিক কিছু বলা যাচ্ছেনা
প্রকাশকেরা কোনওদিন কোনও কাক-টাক চেনেনা, বরং কাকেরাই চেনে এবং এখানে ওখানে প্রকাশকের ডেরা খুঁজে বেড়ায়, তারপর একদিন যা হয়, ভোরবেলা কলেজ স্ট্রীটে ক্কা ক্কা ক্কা ক্কা ক্কা, গোটা পথটাই যেন তখন সমবেত কাকেদের কফিহাউস
যদি ভেন্টিলেটরে বসে কখনো কোনও কাক ডাকে,এদিকে ঘরে কেউ নেই তখন বাথরুমের একলা শাওয়ার খুব ভয় পেয়ে পায়, থর্থর করে কাঁপতে থাকে,গলা দিয়ে স্বর বেরোয় না, জানো কিনা জানিনা, কখনও কখনও প্যান্টে পেচ্ছাপ করে ফেলে
যারা মাথা নিচু করে পথ হাঁটে, তারা যে সবাই উদাসীন বিষণ্ন বা শোকগ্রস্ত, এমন নয় ,তাদের কেউ কেউ আসলে উড়ন্ত কাকের ছায়া-অনুসরণকারী, ছায়ার মাপে মাপে পা ফেলে আকাশের মানচিত্র আঁকতে চায়
কষ্টকল্পনা কী জিনিস কাক জানেনা,”নষ্ট করো পুষ্ট হও,নষ্ট করো পুষ্ট হও”, এত স্পষ্ট উচ্চারণ, সযত্নে অনুবাদ করলে জানা যাবে এটাই হয়তো কাকের প্রকৃত ডাক
সব ভাষা জানে কাক তবুও চরিত্রে কতো ফাঁক, খোসাশুদ্ধু ভালোবাসাবাসি হলে কাক তার ত্রিসীমানায় থাকেনা, হয়তো একটি ভাষা এখনও তার শেখা বাকি আছে
এই এক ম্যাজিক, কৌটোর ভেতরে একটা গান ভরলাম, আগুনের পরশমণি, গানের ভেতরে অন্তত একটি কাকের ডাক ঢুকিয়ে দিলাম,তারপর সম্পূর্ণ কৌটোটা গিলে ফেললাম, এবার দ্যাখো দ্যাখো, আমার রাত্রি কেমন একা একা হেঁটে যাচ্ছে
অচিনের ছোট বোন বলেছিলো, জানো, আমার যখন দুঃখ উপচে পড়ে,যখন সেটা বুঝতে পারি,তখন আমি একা একা একটা দূর গাঁয়ে চলে যাই,সেখানে একটি মলিন প্রাইমারি ইশকুল, সেই ইশকুলের নড়বড়ে লাষ্টবেঞ্চে বসে দেখতে থাকি, গোটা ব্ল্যাকবোর্ডটি একটি অফুরন্ত কাক হয়ে আমার কান্না কুড়োবে বলে এদিকে এগিয়ে আসছে
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন