
‘এ
মাসের কবি’ বিভাগের সম্পাদকের টেবিল থেকে -
নীলাব্জ
চক্রবর্তী
২৫ একটা সংখ্যা।
আর, জাস্ট আর একটা সংখ্যামাত্র।
বলবেন কেউ কেউ। আর আমার কাছে এখন ২৫
মানে এ মাসের কবি বিভাগটার সম্পাদনা।
বাক-৬০ থেকে বাক-৮৪।
পঁচিশ। দু বছরের বেশী একটানা
এই আমন্ত্রিত বিভাগ।
অনেক সংখ্যায় নিজেকেই কম্পোজ করে নিতে হয়েছে। এমনকি, কখনো তো মোবাইলে শুনে শুনেও! এছাড়াও
কবিদের সঙ্গে নানারকম ইন্টারঅ্যাকশন।
নানারকম স্মৃতি। ভালোমন্দ দুইই। কী করে ভুলি সেই মাননীয়
অগ্রজ কবির কথা, “শোন, তুই আগে পড়ে আমায় বলবি কোন জায়গাটা তোর ভালো লাগছে না। আমি দরকারমতো চেঞ্জ করবো। ঠিক বলবি কিন্তু।”
হ্যাঁ। এরকমও কেউ কেউ... আবার পাশাপাশি রাখুন কতো ঘৃণা... কতো ঈর্ষা... কতো বিদ্রূপ... জোর করে লেখা দিতে চেয়ে প্রায় অসভ্যতা। আবার কখনও লেখা “সামনের
সপ্তাহেই... কালই... আজই... এই তো এক্ষুনি... তোমার ঠিকানাটা য্যানো কী... তোমার
ই-মেইল-আইডি-টা আরেকবার দেবে...” ইত্যাদি প্রভৃতি করেও ফাইন্যালি কিছুতেই পাঠাননি। হ্যাঁ।
মুদ্রার দুটো পিঠই। তারপর কারণে-অকারণে খুঁচিয়ে তোলা কতরকম তর্কবিতর্ক। কখনো কোনও কবির পরিচিতি নিয়ে, আবার কখনো লেখা
ছাপা হওয়ার আগেই! তবে হ্যাঁ, আমি একাধিকবার নানা কারণে ছেড়ে দিতে চাইলেও অনুপমকে
ধন্যবাদ একটাই কারণে। প্রতিবারই
ও জোর না করলে অ্যাতোদিন কিছুতেই! না।
এইটুকু শুধু। এই লেখা আজ লেখার কথাই
না আমার। আর এই সুযোগে আর একবার তাঁদের সবাইকে অসংখ্য
ধন্যবাদ যাঁরা বাক-৬০ থেকে বাক-৮৩ অবধি এ মাসের কবি হিসেবে এই বিভাগের পাতায় এসেছেন...
পরপর...
আর্যনীল মুখোপাধ্যায়
অনিমিখ পাত্র
ধীমান চক্রবর্তী
নবেন্দু বিকাশ রায়
বারীন ঘোষাল
অরূপরতন ঘোষ
প্রণব পাল
স্বপন রায়
দেবাঞ্জন দাস
সংঘমিত্রা হালদার
দোলনচাঁপা চক্রবর্তী
রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়
প্রশান্ত গুহমজুমদার
প্রবীর রায়
প্রদীপ চক্রবর্তী
অর্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায়
সোমনাথ সেন
শিমন রায়হান
শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
তন্ময় রায়
অমিতাভ মৈত্র
ইন্দ্রনীল ঘোষ
জয়শীলা গুহবাগচী
অস্তনির্জন
এ মাসের কবি – অক্টোবর ২০১৪ – মেসবা আলম অর্ঘ্য

কেউ কেউ বলেছেন / বলেন, এরকম কবিতা বাংলা
কবিতার সর্বনাশ করছে। হুম। এরকম সর্বনাশের জন্য হাপিত্যেশ করে বসে থাকা যায়। পাশাপাশি
একথাও কেউ কেউ উচ্চকণ্ঠে বলে থাকেন অবশ্য। আর কথা বাড়ালাম না। পাঠক, এবার আপনি...
মেসবা আলম অর্ঘ্য-র কবিতা
আঘাত
একটা আঘাত - মানুষ থেকে মানুষে ঘুরছে
একটা চোখ - মানুষ থেকে মানুষে ঘুরছে
নাস্তার দোকানে মহিলা বলল - তুমি কি এইখানে খাবা?
নাকি প্যাকেট করে দিবো দর্শন?
একটা মিথ
খোসা থেকে খোসায় ঘুরছে
জরায়ু
মেয়ে থেকে মেয়ে চোখের
লকলকে কাজল বর্তুল
সূঁচের উপর
তুমি যাচ্ছো সমুদ্র যাচ্ছে তুমি যাচ্ছো সমুদ্র
সূঁচের উপর
অল্প অল্প দুলছে আমার
তোমার বর্তুল
ফিরনি
ও বিশেষ কারো জন্য ফিরনি রাঁধেনি
খেয়ে উল্টে গেছে
বাইরে গেছে - ঠান্ডায় বুক বসাবে
কই?
বিশেষ কারো ফিরনি যে খুশি খাবে
সে উল্টে গেছে আর তার বন্ধুরা ফটো তুলছে
২
ভরদুপুরের অন্ধকারে ছলনাবিহীন
সব কবিতাই তার
উপহারের শাড়ি ব্লাউজ পেটিকোট না কি
যেগুলি ও কস্মিনকালে চোখেও দেখে নাই?
এমন লোকের কাছে তার বন্ধু পাঠিয়েছে
যাকে ও কস্মিনকালে চোখেও দেখে নাই?
৩
আমি তাকে প্রেমের কথা বলতে পারি
যখন সে তার মিষ্টি ছেলেবন্ধুর সাথে ঘুমাচ্ছে
নিবিড় করে
পুড়িয়ে মারতে যাকে ইচ্ছা করে না!
ভুট্টা ক্ষেতের পাশে বনতল ছিল
হাওয়া ছিল
ফুল ছিল
কন্ডম ফুলছিল
ফুলে ঢোল হচ্ছিল
প্রেমিক প্রেমিকা
যে যার জায়গায় ফিরে যাবার আগে
ছেলেটার তাকে প্রয়োজন
তার ছেলেটাকে
ওরা একত্রে থাকে। কিন্তু প্রায় প্রায় সে আমায় প্রশ্ন
করে
বলতো বনতল কী?
বৃষ্টির দুপুরে আমার গ্রামোফোন
তার গ্রামোফোন - অর্থাৎ মেঘ করে আছে এমন আয়নের
সমস্ত নেসেসিটি
তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেবার মত দুপুরবেলা
আমি তাকে প্রেমের কথা বলতে পারি
মন্ট ট্রম্বলা
মন্ট ট্রম্বলার নিরালায় ভুল বুঝলাম
একে অপরের
ঠান্ডা শেভ্রলে
খাবার টেবিল
আর রং – এক মাতাল
বন থেকে উঠে এসে সময় জানতে চায়
আমরা ওই ডোরাকাটা পাহাড় সামনে রেখে আগাবো
ঘড়ি দেখবোনা?
একে অপরের পাহাড় দেখবো
এমন চুপচাপ
যে বরফ গলার শব্দ হচ্ছে
২
দুইটা হরিণ আপেল খাচ্ছে অন্ধকারে
শাদা কালো হাড়ের পাশে
পাহাড় - একটা গোল লোহা
রাত বারোটার স্তরীভূত রেস্তোঁরার
স্মৃতি
পাহাড় থেকে নেমে আসা হরিণ
খাচ্ছে
বারকোড সমেত
খেয়ে ফেললো
কাদায়
রোদ উঠবে
কালকে ভোরের আমি
প্রতীজ্ঞাবদ্ধ হবোনা
দুইটা হরিণ অন্ধকারে আপেলের সাথে
যেমন নির্যাস
এই অর্থ -
আমি যখন আপেল কিনলাম
ঘুণাক্ষরেও মনে হয় নাই
প্রতিটা হাসির উৎস আমি আলাদা আলাদা করে পরদিন
সকালের
প্যান্টের মতো,
স্কার্ফের মতো
পাহাড় চুড়ার শাদা তুষারের উপর
কাপড় খুলে উলঙ্গ
দাঁড়িয়ে থাকবো
অবিশ্বাসী
আমি যখন অবিশ্বাসী
তখন তার ভক্তিভাব জাগলো,
নদীর ধারে সেজদা দিলো
কাদার উপর
শুকনা পাতা গড়ায়
আওয়াজ শোনা যায়
সাইকেলের বেলের মতো
মন ভরা মিষ্টি এক অবিশ্বাস নিয়ে
দুই হাত সামনে আর কিছুই দেখতে চাচ্ছি না যখন
তার ভক্তিভাব জাগলো
মপানাশ
গোরস্থানে
মপানাশ গোরস্থানে
সমকোণে খুঁজলে পেয়ে যাবো
যেহেতু লম্বা লম্বা
এপিটাফের জন্য বেশিদূর দেখা যায় না
কবরগুলি এমন এলিট!
চারপাশে পাথর - উপরেও
পাথর। যেন কেউ কখনো পালাবে না
অতএব আড়াআড়ি এবং
লম্বালম্বি খুঁজলে পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে
যদি না সে তার উন্মাদ
সরলতা ভুলে
আমাকেও সমকোণে খুঁজতে
শুরু করে
শ্যেন নদী
শ্যেন নদীই আমাদের তুঁত
রাতের আলোয়
পানিতে
এতদিনের অভিজ্ঞতা ঠিক মনে হচ্ছে
যদিও তখনো কেউ চিবাচ্ছি না
আমাদের মাথায় চিবাচ্ছে তখনো
ঠিক কোন স্পটে পিকনিক করেছিল মানে
আরেকটু খুঁড়ে
তুঁত
আমাদের এতদিনের দেবী
প্রস্টিটিউট
ঊরু ধুচ্ছে
তাকিয়ে আছে সরাসরি -
একবারও মনে হয় নাই যখন আরো অনেক গুটিপোকার সাথে বসে
আছি
আরেকটু খুঁড়ে
মাঝ নদীতে অতিকায় দানবের মতো ভেসে উঠবে এক শিশু
আমাদের চোখেও পড়বে না
নির্বাণ
যেখানে থাকার কথা
সেখানে আমি নাই
যেন আমি এক ঊনিশ টাকার কাঠের বুদ্ধ
ভূমধ্যসাগরের ধারে
'নির্বাণ' নামের এক ভারতীয় দোকানে
নানান পুতির মালার আড়ালে বসে আছি অন্ধকারে -- আলোয় ---
তিনদিকে সবাই সমুদ্রে নামছে
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন