• কবিতা সুর্মা


    কবি কবিতা আর কবিতার কাজল-লতা জুড়ে যে আলো-অন্ধকার তার নিজস্ব পুনর্লিখন।


    সম্পাদনায় - উমাপদ কর
  • ভাবনালেখা লেখাভাবনা


    কবিতা নিয়ে গদ্য। কবিতা এবং গদ্যের ভেদরেখাকে প্রশ্ন করতেই এই বিভাগটির অবতারণা। পাঠক এবং কবির ভেদরেখাকেও।


    সম্পাদনায় - অনিমিখ পাত্র
  • সাক্ষাৎকার


    এই বিভাগে পাবেন এক বা একাধিক কবির সাক্ষাৎকার। নিয়েছেন আরেক কবি, বা কবিতার মগ্ন পাঠক। বাঁধাগতের বাইরে কিছু কথাবার্তা, যা চিন্তাভাবনার দিগন্তকে ফুটো করে দিতে চায়।


    সম্পাদনায়ঃ মৃগাঙ্কশেখর গঙ্গোপাধ্যায়
  • গল্পনা


    গল্প নয়। গল্পের সংজ্ঞাকে প্রশ্ন করতে চায় এই বিভাগ। প্রতিটি সংখ্যায় আপনারা পাবেন এমন এক পাঠবস্তু, যা প্রচলিতকে থামিয়ে দেয়, এবং নতুনের পথ দেখিয়ে দেয়।


    সম্পাদনায়ঃ অর্ক চট্টোপাধ্যায়
  • হারানো কবিতাগুলো - রমিতের জানালায়


    আমাদের পাঠকরা এই বিভাগটির প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন বারবার। এক নিবিষ্ট খনকের মতো রমিত দে, বাংলা কবিতার বিস্মৃত ও অবহেলিত মণিমুক্তোগুলো ধারাবাহিকভাবে তুলে আনছেন, ও আমাদের গর্বিত করছেন।


    সম্পাদনায় - রমিত দে
  • কবিতা ভাষান


    ভাষা। সে কি কবিতার অন্তরায়, নাকি সহায়? ভাষান্তর। সে কি হয় কবিতার? কবিতা কি ভেসে যায় এক ভাষা থেকে আরেকে? জানতে হলে এই বিভাগটিতে আসতেই হবে আপনাকে।


    সম্পাদনায় - শৌভিক দে সরকার
  • অন্য ভাষার কবিতা


    আমরা বিশ্বাস করি, একটি ভাষার কবিতা সমৃদ্ধ হয় আরেক ভাষার কবিতায়। আমরা বিশ্বাস করি সৎ ও পরিশ্রমী অনুবাদ পারে আমাদের হীনমন্যতা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরটি সম্পর্কে সজাগ করে দিতে।


    সম্পাদনায় - অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায়
  • এ মাসের কবি


    মাসের ব্যাপারটা অজুহাত মাত্র। তারিখ কোনো বিষয়ই নয় এই বিভাগে। আসলে আমরা আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালবাসার কবিকে নিজেদের মনোভাব জানাতে চাই। একটা সংখ্যায় আমরা একজনকে একটু সিংহাসনে বসাতে চাই। আশা করি, কেউ কিছু মনে করবেন না।


    সম্পাদনায় - নীলাব্জ চক্রবর্তী
  • পাঠম্যানিয়ার পেরিস্কোপ


    সমালোচনা সাহিত্য এখন স্তুতি আর নিন্দার আখড়ায় পর্যবসিত। গোষ্ঠীবদ্ধতার চরমতম রূপ সেখানে চোখে পড়ে। গ্রন্থসমালোচনার এই বিভাগটিতে আমরা একটু সততার আশ্বাস পেতে চাই, পেতে চাই খোলা হাওয়ার আমেজ।


    সম্পাদনায় - সব্যসাচী হাজরা
  • দৃশ্যত


    ছবি আর কবিতার ভেদ কি মুছে ফেলতে চান, পাঠক? কিন্তু কেন? ওরা তো আলাদা হয়েই বেশ আছে। কবি কিছু নিচ্ছেন ক্যানভাস থেকে, শিল্পী কিছু নিচ্ছেন অক্ষরমালা থেকে। চক্ষুকর্ণের এই বিনিময়, আহা, শাশ্বত হোক।


    সম্পাদনায় - অমিত বিশ্বাস

রানা বসু

একগুচ্ছ গোলাপী কায়দা

একটা একটা করে গোলাপ ছিঁড়ে
তোর সারা শরীরে ছুঁড়ে মেরেছি
এক একটা কায়দায়
কখনো পাপড়ি ছিঁড়ে বসিয়েছি
তোকে মধ্যমণি করে
কখনো ভুল করে তোমায় আর গোলাপে
গুলিয়ে ফেলেছি
তুমি সেসব জানো

আজ
এই রাত্তিরে


এসো পাপড়ি পাপড়ি খেলি



ভালোবাসা

ভালবাসা
                                                দামী
তাহলে দাম নয় কেন

ফুল
            গাছ
                        বেদনা

সমস্ত আদর মাখা গামছা

আকাশ একগুচ্ছ কল্পনা


পোয়াতি

একগোছা আগুন থেকে ঝরে পড়ছে পিঁচুটি
একমুঠো সময় আসছে মাথার বাঁ পাশে
আমাকে জড়িয়ে ধোরো না
কুয়ো থেকে উঠে আসবে সরু সরু বাতি
লোমশ আঙুল থেকে ঢলে পড়বে
আকাশ ভর্তি শুঁয়োপোকা
ভিতর থেকে উঁকি দিয়ে যাবে
কলজে ডোবানো পোয়াতি

আমি বাঁশ থেকে পাখি থেকে
ঘুড়ি থেকে টেনে টেনে তুলে আনব

বাঁশ আর জড়িয়ে থাকা অজস্র গুচ্ছমূল


না

না
আমার দোয়াত ন্যাকা
দোর খুলে বসা হারামজাদা
কট্টরপন্থী আলু ব্যবসায়ী
ভরে যাক শিউলি চাঁপায়

পাশের বাড়ির রনি আর
বনির কোনো ফুটকির তফাত নেই
না
ওরা আলাদা

না আমার ভৃত্য
কোনো দোয়াত নয়
ব্যবসায়ী শিউলি দোয়েল না
রনি বা বনি তো নয়ই

শুধু ফুটকি
একটা অস্ফুট শব্দ

ফুট...



মিথ্যে হব!

উড়ন্ত বাঁশের মাথায় রোদ চলকাচ্ছে

শীত হামাগুড়ি দিয়ে
কোমায় চলে গেলে
বসন্ত লাফিয়ে ওঠে

হলুদ বাদামী সব সবুজে পড়ে
ফিকে হয়ে যায়
সব কথা সব মৃত্যু
সব অপবাদ

আমিও কি কখনও মিথ্যে হব

                                                রিষা!



মধ্যবর্তী

ময়দানিতে পা ফসকে
কাদা ছিটকে পড়ছে খোলা জলে।
দুঁদে গোয়ালিনী পোড়া গন্ধ
ঢুকে পড়ছে আঁতুরঘরে।
বেদম কাঁপা রাত আসল নকল
বাদামী গোলাপী বৃত্তে ঢুকে পড়ছে
            অস্তগামী পরীর দল।
সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আলতো চাপা পড়ছে
মধ্যবর্তী রাত। অসম সাহসী রঙে
জ্বলে যাচ্ছে আঁচলের টুকরো।
লজ্জা আর অহংকারে জারিত হয়ে যাচ্ছে

দিনরাতগুলো।



বারান্দা

বারান্দা আমায় কিছু বলেনা

আমায় বলতে বলতে
কোন কথা শেষ হয়নি
এমন কোনও বিকেল কি আসবে
এমন কোন ঝুল
কোন আনাড়ি বেয়াকুব

কেন যে আমি তবু
বারান্দার বসে থাকি

শোনো,
রিষা আমায় একদিন
বারান্দায় চা দিয়েছিল
সিগারেট খেতে বারণ করেছিল

আমি তবু সেকথা শুনিনি


বারান্দা কেন আমায় কিছু বলে না



সঙ্কোচ-১

সঙ্কোচে উঠে আসতেই পারে কোন কালো জাহাজ
তুমি তোমার মত করে ভাবতে পারো
অনু পরমাণু মৌল যৌগের ভাষায়
কতটা বিক্রিয়া জড়ানো থাকে

আমি লিপস্টিক ঠোঁটে রঙচটা আর্তনাদ
বসাবোই সময়মত

তুমি যেন সঙ্কোচ করো না



সঙ্কোচ-২

কতকত পাখি উড়ে গেলে
তারপর,
নেমে আসে সন্ধ্যে

তারওপর

ঠিল ছুঁড়ে ছুঁড়ে সোনালী বালক
আর মাছরাঙার দূরত্ব
ক্রমশ ক্ষীণ হতে হতে
বহুদূর বিন্দু ছাড়িয়ে মিশে যায়

গোপন থেকে গোপনতর মুহুর্তে।

জলে জলে রক্ত মিশে আছে
এসো, আমরা পান করি সুধারস।

তারপর,
আরও একটা মাছরাঙা
সোনালী বালক
মুহুর্তে গোপন থেকে
গোপনতর হতে হতে
দূরে মিলিয়ে যাবে
হয়তবা,
নেমে যাবে সন্ধ্যে।



সঙ্কোচ-৩

আরও একটা ঘরবন্ধ কিশোর
তালা খুলে ছুঁড়ে দিল
ভেঙে ফেলল উনুন আর হাতা-খুন্তি

পৃথিবীর সব ছাদ থেকে
যখন চিলেকোঠার একদিকে
ছায়া এসে পড়ে

গনগনে দুপুরেও বাতাসে ঠাণ্ডা লাগায়

আমি শুধু একা
স্নানহীন বসে থাকি
রোদের ওপর।।


একটি প্রার্থিত আগুন

প্রত্যেক প্রার্থিত বস্তুর একটা আগুন থাকে
থেকে যায়।

আগুনের কোন নিশ্চয়তা নেই

প্রত্যেক দিনের মত
আগে                                                                 পরে
সে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা

তার সোনালী ছটায়
শুধু দিগন্ত ভাসে


সম্পর্ক

খুব ভালো একটা সম্পর্কের
কথা লিখতে হলে আমি হয়ত তোমার কথাই
লিখব। আমি কি জড়িয়ে পড়ছি অজান্তেই!
সকালেই ঘুম পাওয়ার মত, ক্লান্তির মত
অবসাদের মত
আমি জড়িয়ে পড়ছি তোমার সাথে
এভাবেও হয় তাহলে
তোমার চারপাশে একটা আবহ
তৈরী হচ্ছেআমার নিঃশব্দ শুনশান
রাজপথের মত আমার চারপাশে কি কোন
কাঁটাতারের আবহ তৈরী হবে তোমার
যে কাঁটাতারে হাত দিলেই আমি ঈশ্বর
হয়ে যেতে পারি ।।


ঝরাপাতা দিন

তুমি বলেছিলে , দেখো। একদিন ঠিক
হবে সব,
দেখো। হবেই ঠিক একদিন।
বলেছিলে , এ আলো আঁধারেই
ঠিকরে বেরবে , এছাড়া যে পথ নেই
কোনো
এখনো কি হয়নি সকাল? ভোর হয়ে
বেলা পড়ে এল? তবু আলো কেন
আঁধারে প্রকট
এইবেলা কাজ সেরে নাও , বলেছিলে ,
বিশ্বাস কোরো না কাউকে। এও তবে
শেষ হবে। হবে কি ! যদি শুরুই না হয় কখনও !
আজ শুধু ঝরা পাতা দিন ফিরে ফিরে এলে
তুমি এসে যাও কথার ভিতর , শুধু মনেরই কি
শেষ নেই কোনো।



স্মৃতি

তোমায় ছুঁয়ে দিলে
ঈশ্বরও যুবতী হয়ে যায়
সারা পৃথিবী উঠে দাঁড়িয়ে
প্রেম নিবেদন করে তোমায়
তোমার স্তনাগ্র স্পর্শ করে
আমি অমৃত আহরণ করি।
তোমার যোনিতে মুখ রেখে
পৃথিবীর অষ্টম হিসেবে বাজি রাখি
আমার যৌনাঙ্গ
ধীরে ধীরে অবশ হয়ে আসে
দুই প্রজন্ম
আমরা আবারও স্মৃতি হয়ে যাই।



ফসিল

আমার মৃত্যু হোক
তোমারই মত জীবন্ত
আর ফসিল রাখা হোক
তোমার হৃদয়ের চোরা কুঠুরিতে
যার স্পর্শে প্রত্যেক বৃত্তের কেন্দ্র
নড়ে উঠুক
সারা পৃথিবীর ডাকে তুমি
বলে ওঠো --
আমার ভিতরে যে ফসিল আছে
আমি তার আমৃত্যু যত্ন নেব।


ভীষন রোদ , শীতকালে

ভীষন রোদ উঠেছিল
আজ সকাল থেকে
যেন শীত বলে মনে হচ্ছিল
না একটুও
ভীষন রোদে
আমার সারা গা পুড়ে যাচ্ছিল
আর আমি তাও রোদে
হাঁটছিলাম
ভীষন রোদে চশমা
লাগিয়ে আমি মরিচীকা
দেখার আশায় সারা মাঠ
জুড়ে বালি ছড়িয়েছি
ভীষন রোদে
আমি পা ফেলতে পারিনি
রাস্তায়
শীতকাল এলে এসব মনে থাকার কথা নয়
তবু যেন শীত বলে কিছু মনেই হচ্ছে না।


অদল-বদল

দুপুর একটার পর কলকাতার সমস্ত রাস্তার মত তুমিও নিয়ম বদলে পাল্টে ফেলেছ পথ

তুমি যেতে পার, চাইলেই তুমি যেতে পার অনেকদূর

শুধু মনে রেখ
পৃথিবীর পরিধিটা যাই হোক
আমাদের আবার দেখা হবে
আমি খুঁজে নেব

না,না
আসলে হাঁটতে হাঁটতে দেখা হয়ে যায় ।।


ঠিকানা

আমার সরল বাহুযুগল তোমায় ধরে বৃত্তটা সম্পূর্ণ করতে চাইছে

তুমি ত্রিভুজের ভরকেন্দ্রে হাওয়া লাগিয়ে পাল তুলে বসেছ

আমি চতুর্ভুজের ভিতর থেকে দেখতে পাচ্ছি
তোমার ঘনক গোলক শঙ্কু চোঙ ক্রমশ
ক্ষীণ হতে হতে একটা বিন্দুতে পরিণত হল

আমি নিশ্চিন্ত হলাম
তুমি আর হারাবে না  ।।


পরিচয়

আমি নক্ষত্র ব্লগে তোমার নাম লিখে ঘুড়ি উড়িয়েছি আকাশে

আমি মাইলস্টোন ধরে ধরে এগিয়েছি মাইলের পর মাইল

আমার সাপ চোখে তোমার দৈর্ঘ্য প্রস্থ মাপা হয়ে গিয়েছিল মুহুর্তে

এখন বলা যেতে পারে নিয়মমত, পৃথিবীর প্রথম সমস্ত কিছুর মত
তুমিও প্রথমেই থেকে যাবে সারাজীবন।।



আমরা তিনজন

আমরা তিনজন। একে অপরকে চিনে নেবার
তাগিদ ছিল। আমরা নগ্ন হলাম। আবিষ্কার করলাম।
শেখা হল না। কেন এভাবে নগ্ন হতে হয়!

পরাআধুনিকতায় বিশ্বাস মতে আমাদের হাতে এল কবিতা। আমরা গ্রহণযোগ্যতা হারাতে হারাতে ক্রমশ ভিড় ঠেলে স্বকীয় হতে সচেষ্ট হলাম।যজ্ঞ হল।ঘৃতাহুতি দিল মিস্ মেলবোর্ন।

পরাআধুনিক চর্চায় ঘনিয়ে এল মৃত্যু। পুকুর থেকে সোনালী বালক উঠে এসে বলল, আমরা আধুনিক হাতে অস্ত্র ধরতে শিখিনি। ঘাবড়ে গেলাম। মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে করতে পেরিয়ে এলাম পথ। আমাদের ফেলা জঞ্জাল পড়ে রইল এদিক ওদিক।

স্বীকৃতি স্বরূপ আমরা আজও বেঁচে আছি।
যুদ্ধের দামামা বাজল। আমরা জীবিত থেকে কিই বা করতে পারি !!

শুধু বেঁচে থাকতে থাকতে মৃত্যুটাই শেখা হল না আজও।।



আমার উঠোনে বক্তৃতা দিচ্ছে

আমার উঠোনে বক্তৃতা দিচ্ছে
নিকানোর পাররা
স্বয়ং সুভাষ মুখোপাধ্যায় বসে
কাগজ কলমের ওপর
এত রাত কেটে গেল
কখনও এত চাপা গন্ধে
আমার নাক সিঁটকোয়নি।

পাথর কুড়োতে কুড়োতে কথা বলছে শক্তি চাটুজ্জ্যে
আকাশে কি যেন খুঁজছে সুনীলদা
হয়ত নীরাকে!!
বীরেন্দ্র কৃষ্ঞ ভদ্রের গলা শুনে
চমকে উঠে দেখি
উঠোনের একপাশে দুগ্গাপুজো চলছে
পাশে ধোপদুরস্ত পোষাকে বীরেন্দ্রকৃষ্ঞ ভদ্র।

কেন জানি না,
আজ তোমাকে ভীষন খুঁজছি
এদের চারপাশে।

মা, তুমি থাকলে এরা কেউ
এভাবে উঠোনে থাকত না।
আমাদের ঘরে এসে বসত।।


মাঝরাতে চিন্তাভাবনাগুলো সিলিং-এ গিয়ে ওঠে

মাঝরাতে চিন্তাভাবনাগুলো সিলিং-এ গিয়ে ওঠে
আমি তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পড়ি
স্বপ্ন দেখি আমি কালাপাহাড়ের ধারে
চোখে ঠুলি পরে নামাজ পড়ি
ভগবান চোখ বুজে বসে
আমি দেখা দিলে
চোখ খুলে মুচকি হেসে বিড়ি ধরায়
আমি সিগারেট

পুড়ে পুড়ে যখন শেষরাত
তারারা হারায়
আমি গুটিকতক পকেটে পুরি

ঘুম ভেঙে সারা সিলিং জুড়ে আকাশ খুঁজি
বিছানা জুড়ে পড়ে থাকা তারাগুলো
চ্যাপ্টা হয়ে থাকে ।।


অমাবস্যা

এক ঝাঁক পাখি থেকে একটা কবিতা
তুলে নিলে ডানা ছাড়া কিছুই থাকে না
শুধু পালক খুঁজতে গিয়ে
ধরা পড়ে যায় কোজাগরী রাত

আমরা অমাবস্যায় ঋনী।
তবু যদি যেতেই হয়
অমাবস্যায় ভর করো


রাস্তা

রাস্তার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই
মাটি কাদা পাথর জল ছাড়া

চোখে শিশির দিয়ে
হেঁটে চলে বেড়াই বারান্দায়
বারান্দা ঝুলে থাকে
সাথে জুড়ে থাকে কপালগুলো

বেড়ালগুলো গলি থেকে ছুটে এসে
দখল করে বড় রাস্তা
ঘর বাড়ি বেড়াগুলো

ঠোঁটে নিকোটিন লাগিয়ে
হাঁ চেয়ে থাকি
নিদারুণ দুপরগুলোয়।।


বর্ষা

বর্ষা উঠলে আকাশ থেকে
কালো রঙ পড়ে যায়
সবটুকু কান্না নিয়ে হোলি খেলে ওরা
জলের রঙ দিন দিন পাল্টে যাচ্ছে।
একটা সবুজ গর্ত খুলে
রেনকোট ভিজিয়ে
জলধরে রাখি বালতিতে
পুরনো চিঠি ছেঁড়া বাসনপত্র
ভিজে কাপড়জামায় উই ধরুক

বসলেই বাত আসে বলে
দাঁড়িয়ে থাকি।
ঝিনঝিন গুলো পা চালিয়ে নিয়ে চলে
অন্য অন্য বর্ষাবাদলে।।


পিছমোড়া করে বোসো

পিছমোড়া করে বোসো
রঙ নাও জাফরিন
ভিতর ভিতর ঘেঁটে দাও
পারস্পরিক বোঝাপড়া

রঙীন হয়ে উঠি

পারস্পরিক বোঝাপড়া
ভিতর ভিতর ঘেঁটে দাও
রঙ নাও জাফরিন
পিছমোড়া করে বোসো


সব মৃত্যুই পৈতৃক

সব মৃত্যুই পৈতৃক

গাছ লাগিয়ে
বসে থাকি শিকড়ের কাছে

পাখি আসে, পাখি যায়
পালক পড়ে থাকে

আমার ভিতরে বেড়ে ওঠে বিষবৃক্ষ

বাড়তে থাকে তারুণ্য
মহুয়ার নেশায় তরতর করে

আমার ভিতরে বেড়ে ওঠে বিষবৃক্ষ

পালক পড়ে থাকে
পাখি আসে, পাখি যায়

বসে থাকি শিকড়ের কাছে
গাছ লাগিয়ে

সব মৃত্যুই পৈতৃক।।


সন্ধির অভাবে ধুয়ে যাচ্ছে ঊরু

সন্ধির অভাবে ধুয়ে যাচ্ছে ঊরু
কাছেপিঠে রোদের ঘনঘটা
সদ্য কিশোর পেরনো ঠোঁটে
কবিতার যোনি থেকে
ছিনিয়ে আনছি
তোমার বুক থেকে হারানো পঙক্তি।।


আর একটা সবুজ এলে

আর একটা সবুজ এলে
আমি সমস্ত বন থেকে তুলে নেব ইতিহাস
কলারবোন ভাঙতে ভাঙতে
আসবে রাজবাড়ি
জিলিপি শহর
আর তোমার স্তনের বোঁটার মত
ফুটে উঠবে এক একটা সংবিধান
আমি সংবিধান মেখে
কালো পতাকা লাগাব
ফুটে উঠবে যোনি
সমস্ত যোনিদ্বারে আমি রেখে আসব
গোলাপকাঁটার আঁচড়
সমস্ত পাখি মুচড়ে দেবে রাজধানী
সমস্ত হাঁস বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে
ছেনে আনবে শামুক
সমস্ত ঈগল দৃষ্টিতে
ছুঁয়ে দেবে শ্মশান
উঠে আসবে আলু পটল বেগুন
আর ঝিঙে ভর্তি পাহাড়
শুধু আমি আর তুমি জুড়ে থাকব
শহর অলি গলি মোড় ভাঙা দোকান
আর সূর্য নিভিয়ে আমরা শিখে নেব
দেহতত্ত্বের
পুরাকাহিনী ভরা অগুনতি প্রেমের মানে।।



সাগর থেকে সফেন তুলে নিয়ে

সাগর থেকে সফেন তুলে নিয়ে
সাদা সাদা ফেনায়
ঘোরাফেরা করে ছায়া
কুলকুচি করতে করতে উঠে আসে
অজস্র প্ল্যাংকটন আর ডলফিনের
বিবর্তনবাদ।

ফিরে যাওয়ার কোন ইতিহাস নেই
জলজ প্রকৃতির
জলের কাচে হাত রেখে
ছুঁয়ে যায় স্মৃতির কোলাজ

ইনবক্স থেকে তুলে আনা জলছাপে
তুলতুলে ঝিনুক আর সাবমেরিনের
গোপন সম্পর্কে লেখা থাক
যত কুমীর আর কামারের কাব্য।।


সরু সরু গাড়িগুলো ধরে ধরে এগোই

সরু সরু গাড়িগুলো ধরে ধরে এগোই
পিছল থেকে ছাল ছাড়িয়ে
কাটা ছিটিয়ে নুনের ডগা পোড়াই

শীততন্ত্রে আগুন লাগাই, এসো

পরিসর দিয়ে দিয়ে
শুক সারি দিয়ে দাঁড়ায়

আবহ টেনে তুলে দিই আঁচড়
ভেসে থাক পৌস্টিকতন্ত্র

তোমার ডান হাত জোড়া তিলে
তুলে ধরি আমার জন্মের পাপ
দাগ দিয়ে দিয়ে ফেরার

এখনও কোন রক্তে
আমার নাম লেখা হল না।।।


দ্য টাইম ইজ আউট অব জয়েন্ট

ভরবেগ হাতে লুকোচুরি খেলতে
একটা বিষন্ন লাগে
একটা প্রসন্নতা
আসন্ন ঘনিয়ে আসছে
পেছনে ধরে রাখা মানসিকতায়
পেখম ছাড়তে দুপুর এবং
কয়েক ফোঁটা বৃষ্টির লুকোচুরি লাগে
চুরি করতে করতে লুকনো
লুকোতে লুকোতে চুরি
পৃথ্বীশ, একটা রেঙে যাওয়া
বিগড়ে যাওয়া পাপোশ
কুড়িয়ে আনা ঝরে ঝরে
তুলে আনছে প্লেট
চায়ে গরম জল ডোবানো মাংসচিহ্নে
হাড় জমে রোজ
আর কত চুমুক মারব
বলো, শুকতারা।।।


হুদসকাল

চশমা গড়িয়ে পড়ছে লেপতলায়
প্রেমিকা ঘষা রাত অলিন্দ নিলয় ঘেঁষে
ফুসকুড়ি টুকছে হুদসকালে।
হাত ছড়িয়ে আলু চচ্চড়ি ফুঁকো বিড়ি
কুড়িয়ে নেওয়া জঞ্জাল ছাড়িয়ে
দানাবিষ মেশা চায়ে চুমুক দিতে দিতে
অবশেষ পড়ে থাকছে সোনালী পাপোষ।

আশুতোষ কলেজ থেকে বেরিয়ে আসছে
ছাপোষা পাঁপড় ভেজা শীত।
লেপ মাখা ছোলা বাদাম দাঁতে
ক্রমশ আশকারা পাচ্ছে কুয়াশা

আমি সকালের আওয়াজে লেপ তুলে
চশমা খোলা রাত খুঁজছি।।


প্রেতকিশোর

চারপাশ থেকে ধোঁয়া উড়ে যায়
পড়ে থাকে সোনার মুহুর্ত
পড়ে থাকে ঘাম মাখা রক্ত
দুধার এঁকে বয়ে চলে সময়
আরও একটু ঘন হওয়া যেত
আরও ঠোঁট এগিয়ে এলে
আমি রক্তাক্ত হয়ে পড়তাম।
চিনে নিতে নিতে
ঠোকরাতে ঠোকরাতে
চড়া থেকে চড়া ঘুরে বেড়িয়েছি
তুলে এনেছি মেঘ
ঝরা পাহাড়
কাক থেকে কালো তুলে
রঙ মাখিয়েছি চিন্তায়
সারাদিন বক বক খেলতে খেলতে
ধূসর হয়ে পড়েছি
চিনতে পারো না আমায়, শতভিষা !

শিশির থেকে কুয়াশা
জল থেকে ঢেউ
রাঙা প্রপাত
ঝিল রামধনু মিলে যায়
আমি প্রেতকিশোর
একা একা বসে থাকি
নুড়ি কাঁকর বিছানো রাস্তায়।।।।।



অ- সি- ৩

আসলে ত্রিকোণ বলে কিছু নেই
আমরা হয় একা অথবা দুজন
ত্রিকোণ হয় না।

পৃথিবীর কোনো ত্রিকোণ
কখনও হয়ে ওঠেনি।
দুধার ভর্তি থাকলে
শুধু মাঝে ফাঁকা হয়ে যায়।
আমরা নিজেরা বুঝি বা না বুঝি
বারমুডা ট্রায়েঙ্গেল বাদে
কোন ত্রিকোণ কখনও
সম্পূর্ণ হবে না।

আমাদের ত্রিকোণ
আমাদের মতই অসম্পূর্ণ।।


রক্তে রক্তে বিভ্রম লেগে থাকে

রক্তে রক্তে বিভ্রম লেগে থাকে

বহুবার পালিশেও
প্রত্যেকটা কাঠ স্বতন্ত্র

চেনা  চেনা হাড়গোড়
টুকরো কাচ

একান্নবর্তী পরিবার থেকে উঠে আসা
হাড়মাংস রক্তমজ্জা সব
একান্নবর্তীই হয়।।


অবাক বিস্ময়ে দাঁড়ির নীচে দাঁড়িয়ে থাকি

অবাক বিস্ময়ে দাঁড়ির নীচে দাঁড়িয়ে থাকি

অবশ্যম্ভাবী চিন্তাভাবনার জটে জড়িয়ে
কুকুর এসে লুকোচুরি খেলে

আরও একটু গা ঘেঁষে দাঁড়ালে
রক্তে টোকা মারা যেত

অপেক্ষার রাত অপেক্ষা দিয়ে যায়
আমি কৃষ্ণার দেহে
কৃষ্ণ কৃষ্ণ খেলি।।


পার্থিব সুখ

পার্থিব সুখ আহ্লাদ ছেড়ে
তোমার ঠোঁটে ম্লান হব। এসো,
ঠোঁট থেকে জিভ থেকে সমস্ত
ইস্তেহার তুলে নিই

কানের একপাশে রেখে দিই আর্তনাদ
লতিতে মধু ছড়িয়ে
ব্ল্যাকবোর্ডে এঁকে রাখি স্নেহ

শাদা পাতার একধারে
                লিখি সৌন্দর্য্য
লিখি স্বাধীন যুবতী কলরব
স্তন যৌনতা শূন্যতা ফুল
ফল আত্মহত্যা

আগুনের একপাশে জোনাকি ফুটে থাকে।


রিষা ও একটি বসন্ত

শীতের আগল খুলে যাচ্ছে
ক্রমশ..
চ্ চ্ বেড়ি পড়ছে গলার চারপাশে
সব হলুদ সবুজ হতে
একটা চক্র লাগে
একটা ঋতু
একটা বসন্ত।

সোনালী দামে বিকোনো
সব ক্লোরোফিল মেজাজ হারাবে বলে
বিদায়ী সুর তুলছে গলায়

এখনও ফেব্রুয়ারি এলে
আমার তোমার কথা মনে পড়ে


একটা একটা করে তুলে নাও

একটা একটা করে তুলে নাও
আমি আরও একটা করে তুলব
যতটা পারি তার কম কিছুতেই করব না
বেশি কিনা তা বলতে পারি না
একটা তুলে অন্যটার দিকে তাকাতে গেলে
আবার আগেরটাই ফিরে আসবে ভেবো না
বরং তুলে যাও

এই ঘর থেকে আরও ঘন কোনও ঘর
থাকলে অন্ধকারে পথ খুঁজে পাবে না।

নির্মূল কর। তীব্রতর কোন মেজাজ থাকলে
তার সাথে রিপ্লেসমেন্ট করে নাও।
পিছনে আছি। ভয় নেই।

সুতরাং সাহস আছে।
কোনও কি বলার আছে!
বোলো না
ব্রণ হতে পারে

এভাবেই কাটিয়ে দিতে পারলে
বাকি ইতিহাস লেখার কিছুই থাকবে না।

আমি বদলাব বদলে দেব নেব
কোনও কি বলার আছে??

আচ্ছা তুমি তুলেছ
না ভুলেই গেছ
এভাবে কোনওদিন পার হওয়া যায় না

দেখনি কি কল তৈরি করতে আসে যারা
যারা সাইকেল সারায়
নর্দমা বাথরুম পরিষ্কার করে
কত মেজাজী

তুমি তোলো আমি আছি
ভয় পেলে বোলো
আমি বাংলা দেব।

সেন বাড়ির কোনও মেয়েকে দেখলে বোলো
আমি মাইতি বাড়িতে আছি
আছি কিন্তু
তুমি তোলো
আমি আছি
পিছনে
কোথাও যেও না

আমি বাংলা পড়াব।।


লাল মেঠো পথ

লাল মেঠো পথ দেখলে আমার শুধু পোড়া পোড়া লালের কথা মনে পড়ে ।
মনে পড়ে তোমার সিঁথির সিঁদুর । লাল মেঠো পথে তোমার লম্বা এলোকেশ
ধূলোয় লুটোচ্ছে ।

মনে পড়ে তেরো বছর আগের কথা। সেদিন আমার মা
পাশের বাড়ির বোনকে কোলে তুলে নিয়ে বলেছিল, আয়
আয় চাঁদমামা টি দিয়ে যা.. আর পাশ থেকে আমার
ঠাম্মা তোমায় দেখে বলেছিল,তোর মুখটা একেবারে
চাঁদের মত। আর আমরা চুপিচুপি ঘরের ভিতর গিয়ে
বসেছিলাম। আমি হঠাৎ মায়ের সিঁদুর কৌটো থেকে
তোমার মাথায় সিঁদুর দিয়ে চেঁচিয়ে বলেছিলাম,মা, দেখবে এসো
আমি চাঁদের কপালে টিপ দিয়েছি






My Blogger Tricks

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন