চাঁদঘাট
এ মাসের কবি – মার্চ ২০১৫ –
উল্কা
প্রথম দশকের কবি ও গদ্যকার
উল্কার লেখালিখি প্রকাশ শুরু ২০১২ সাল থেকে। উত্তর কলকাতা নিবাসী উল্কা
প্রাণীবিদ্যায় সাম্মানিক স্নাতক এবং বর্তমানে কর্মসন্ধানী। ওঁর প্রথম কবিতার বই ‘বিজিটোন’ প্রকাশিত হয়েছে ২০১৪
কলকাতা বইমেলায়। ‘স্প্যাস্টিক’ নামের পত্রিকাটির
সম্পাদক
উল্কার কবিতা বিভিন্ন প্রিন্টেড এবং অনলাইন পত্রপত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়। এই
পাতায় উল্কার এই সময়ের অনেকগুলো টাটকা কবিতা ধরা থাকলো...
চাঁদঘাট
পা ছোঁয়াতেই
সিঁড়িরা কবরে নেমে যায়...
মাটির পাতে আঙুল আঙুল এপিটাফ
পড়তে
পড়তে
কোন এক উন্নাসিক লাশের মতো
টেনে নিচ্ছি তোমার
গন্ধ
অজানা রন্ধ্রে চুবিয়ে
স্তনের বোঁটা থেকে উপড়ে নিচ্ছি
বাদাম
একজোড়া কোমর চষে
ঘাসের ওপর নামার আগে
ত্রিমাত্রিক
সেমিকোলোন থেকে
মই ছিনিয়ে নিল কেউ।
ফাটা ঠোঁট
ঠোঁটকাটা
লাভ বাইট
আচমকা,
মই বেয়ে একটা কবর উঠে
আসে...
পুতুল
গল্প
যীশুর
গালে ঘাতক চুম্বন
ছুঁইয়ে
খ্রিষ্টাব্দের অধরে পক্ষাঘাতী সন্ধ্যা
আর
কিছু জীবন্ত পাখি ছায়া
ওড়াউড়ি--
ঘুড়ি উৎসব!
সিঁড়ির
রেলিঙে পেরেক বিঁধিয়ে
পুতুল
নাচের ক্রুশকাঠি হাতে বসে থাকে
জুডাস...
বশে
থাকে তার চোখ, নাক, কান,
আলজিভ।
বেজে
ওঠে দামামা
ত্বক
তারতম্যে চেনা গলি ভেঙে
সবুজ
আরও সবুজ
গেথসিমানির বাসি গালচে
দুটো
জোড়া-পায়ের ছাপে মিলিয়ে যায়
ক্রিয়াবাচিকের
পুতুল গল্প।
হাট
বিছানা
খুঁটতে খুঁটতে
উঠে
গেল শুক্রবারের হাট
একটা
জ্যামজট বাঁধা খোঁপা
এলিয়ে
পড়তেই রানিখেতময় হাইপথ
জিরিয়ে
নিলো টাপুর টুপুর!
ক্রমান্বয়ে
দ্বিতীয় অঙ্ক
দুপুরের
আধোঠা হাট
দূরপাল্লার চুপটান কেনে
গোপনে
চৌম্বকতত্ত্ব সাজাতে—
রাঙতার
ঠোঁটে রংমশালের বারুদ
বৃত্তাকার...
অতঃপর
ধামাচাপা!
সানগ্লাসের
পরলোক
একটা জ্যামেতিক স্বর্গ
উপসর্গের
পূর্ব রাগে
একটা অনুরাগ
‘প’-রাগ
থলেদের
পেটে আধুনিক রাবণ সাম্রাজ্য
নয়া-সিকি-আধুলি...
হাটের
গায়ে বিছানার কবিতা লিখলেন তারা
খিলাফত
আন্দোলনের জোড়া সকালে
একটা
মৃত্যুকামী উড়োজাহাজ
বেরিয়ে
এল ম্যাপের ব্ল্যাকহোল ফুঁড়ে!
প্রান্তবর্তী
শূন্য অঙ্ক
বিছানার
চাদর কিং সাইজ
এরপর
হাটে কখনো
শুক্রবার আসেনি!
ভিডিওগেম
পিছু
ডাকতেই
উল্টে
গেল দুটো রোমান গোড়ালি
আলতাপাটির
বহর বেয়ে
ঘুমের স্তবক
ঘুমের স্তাবক
দূর
থেকে সুরে লাফিয়ে পড়ছে বেহিসেব
টিভি
থেকে ফাটল নাশক ক্রিমের
ফর্মুলা
শিখতে শিখতে যে বয়স প্রাপ্ত হচ্ছে
তার
কাটাকুটি ঘরে সেলাই শব্দ টপকে
ছুটে
যাচ্ছে প্রিন্স অফ পার্সিয়া...
পায়ের
আঙুলে ঊনবিংশের কালশিটে,
ফরমায়েশের
শহর গেঁথে নিচ্ছে মালায়।
অজস্র
এক্সট্রা জীবন ধার করে
স্বর্গের
অন্তিম সিঁড়ি ফেরত
একটা
পিছুডাক ঠোঁটে তরোয়াল ঘষে
গড়িয়ে
যাচ্ছে অন্তিম সুড়ঙ্গ।
রোদের
আঁধারে গথিক জোনে
খুপরি
ঝেড়ে ফেলা হাত
বন্দী করছে বালির সময়।
পোস্ট ভি-ক্যাফে
নিজেকে নিষ্ঠুর খুনের পর
ইশাদী সেজে
উল্টে দিলাম দুপাতা চোখ...
দেওয়ালের গায়ে পোষ্টার পোষ্টার
ইট
চ্যুইং গাম ঘষে ভাড়াটে প্রেমের
সাথে
পালাচ্ছে উদ্বৃত্ত পরকীয়া
একটা চিঠি
লাল শব্দ
কালো শব্দ
পূর্ণচ্ছেদ
তুমি আড়াল ভেঙে ঝুঁকে পড়
এক শব্দভেদী ধনুকের বুকে
অপসারি আগুনের কঙ্কালে
কেটে দাও উদ্বায়ী জল আঁচড়
গোলাকার হতে হতে হঠাৎ
একটা চৌকোনার নাম বদলে যায়
স্বকীয়া খুনের পৌনে ঘণ্টা—
একটা কোকিল ডেকে উঠতে
নেমে এল
একফোঁটা দুফোঁটা
ভ্যালেন্টাইন সন্ধ্যে
প্লেসমেন্ট
ডান পাশের লেবেল ছেঁড়া
পরিশ্রান্ত নিশ্বাসে
ঘুরছে যাবৎকালের কুয়াশা
আমার গাল
ওদের গাল ছুঁয়ে
হিমবাহ
গলছে...
গালছে সামরিক প্রতিভা
উলম্ব ইকোটোনে একজোড়া
যৌবনঘাতি পর্যায় সারণি
যার সাংকেতিক পৌত্তলিকতা রগড়ে
কলুদ স্মারক উল্টে ফেলেছে ভাজা
মাছ
নাভির সামান্তরিক চিরে
পৌরাণিক জেরপ্থ্যালমিয়ার
খোপ খোপ গন্ধ চূর্ণে
যে নিরোধ বোনা হল
তার জরায়ু গাত্রে কোন পুরুষ
জন্ম দিচ্ছে শীতল সূর্যের দেশ
আত্মপ্রত্যন্ত সময় থেকে সময়ে
গৌরচন্দ্রিমা—
কপাল থেকে শুকনো খসতেই
এক সৌভাগ্য কোল্ড ক্রিম
থেকে উঠে গেল সাদা রঙ।
বিকল্পনা
প্রকাণ্ড শীতের ঝুলি কাঁধে
দরজায় ফিরে যাচ্ছে আরেকটা
দরজা...
চাবির ফোঁকরে মৌচাক,
মধুর নাব্যতায় ভাসমান কর্কট
লগ্নে—
তুমি চৌকাঠ আগলে বস।
তোমার নখে ফুটে ওঠে
প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন,
পায়ে অরোরা বোরিয়ালিস।
কদমে কদমে পাক দিচ্ছে
উহ্যভাষ...
কোনো আগাছার পরশ্রীকাতরতা
বিনাশ করে
ধৈর্যয়ের সীমায় মুড়ে দিচ্ছো
চাদর।
দরজার বুকে দরজা রেখে
একটা শীত ফিরে যাচ্ছে অন্য
শীতে...
হাতের মুঠোয় যৌনতা ঢেকে তুমি
চৌকাঠ থেকে নামিয়ে রাখলে
হিমযুগ
দেখলে কারোর
এক পুঁটলি সতীত্ব সঞ্চয়
চিতায় পুড়ছে আর
মুখের বরফ
ছেড়ে
যাচ্ছে ধোঁয়া।
ঘোমটা
আঁচল ছিঁড়ে মাথায় যে
ঘোমটা তুলেছিলে
তার দোলনা পাড়ে
কোনও পিঁপড়ে প্রজন্ম ঘুমায়...
মাত্রাহীন ঊনস্বর—
বাষ্পচাপের গর্ভে ভ্রাম্যমাণ
পায়ে উড়ন্ত মাকড়শা জাল কাটছে
কয়েকটা জন্মদিন!
পাহাড়ের কোনও খিদে নেই
নির্লজ্জ ছায়ার আস্তাবলে যারা
ঘোড়া সেজেছিল
তাদের রাত-বিছানায় পক্ষীরাজ।
দোলনা পাড়ের পিঁপড়ে স্বপ্ন
আমৃত্যু পক্ষ সংকল্পে ছিঁড়ে
দেয়
কোল আঁচল।
একগলা ঘোমটায়
নতুন পরিচয়ের মিষ্টি স্বাদ
ফিরে যায় চিনি
না-
চিনির দেশ।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
উত্তরমুছুন