দেখা দিল আমারে...।’
শ্যাম ও শ্যামা
‘রূঢ় দীপের আলোক লাগিল
ক্ষমা সুন্দর চক্ষে’
গ্রাম
উথলে ওঠা এই বৃষ্টির বাইরে প’ড়ে
আছে তিনতলার মাঠ
মাঠের
ওপর এক ত্রিমাত্রিক ট্রাক—
চাকা ও পরিত্রাণ খুলে শ্বাসকষ্ট দিয়ে মেখে খাচ্ছে রুটি
অর্ধেক
ভাঙা জিভ, ছেঁড়া দাঁত, মনে করো পেরিয়ে যাচ্ছে এই কবিতাটা
বৃষ্টিনির্মাণকারী
শ্রমিক। তোমার বাজনা এবারে ধাতু ও পতঙ্গ হোক।
শরীরের ভেতর বড়ো হচ্ছে জল জমার দেশ, শ্যালো ও
সেচ ব্যবস্থা
আমাকে
এবার কেউ ধানের ধ্রুবক মনে করিয়ে দাও
* * *
‘রূপ দেখিলাম রে নয়নে
আপনার রূপ দেখিলাম রে
আমার মাঝ তো
বাহির হইয়া
দেখা দিল আমারে...।’
দেখা দিল আমারে...।’
জিভ
যে উৎসবে গেল
তার
বেসমেন্টে চলো খিদে
পোকা আড়াল করতে করতে দুমড়ে-মুচড়ে গেল মাপজোক
প্রতিদ্বন্দ্বীরা
ফিসফিস ক’রে বেঁধে নিল বোমা
মনে হ’ল,
বেঁচে থাকতে হয়
রজতাভ
ওই ঘুড়ির নিজস্বে
* * *
‘...চিকন কালো সাপ রে
তার মাথায় মানিক জ্বলে
হাসনা ফুলের গন্ধে আসে ছিল গাছের তলে
তার বিষ উঠেছে জলে জলে রক্ত ধড়ে মিশে...’
নভোনীলের
পাতা ওলটাতে গিয়ে দেখি সব জায়গাই আকাশ
আকাশের একটা গ্রাম ঝাঁপালো প্লেনের ইমারজেন্সি
এক্সিট দিয়ে
আমাদের নাচের ভূগোল কর্ষণ ক’রে উড়ছে ইন্ডিয়া এয়ার
স্বাভাবিক এই মার্চ অস্বাভাবিক
হাঁস ছুঁড়ে মারছে মাথায়
হাঁসের ডিমের মতো গোল ও লাল
হয়ে আছি তোমার হাতে
* * *
তোমার কাঁপতে
থাকা পাথরটাকে পিষে স্পষ্ট হয়ে উঠছে এই গড়ানো স্নান,
স্নানের আলো। আলোর সত্যিকথা জেনে ফেলা ছাড়া তোমার আর কোনো উপায়
নেই, যখন বুঝতে পারছো তুমি,
তোমার মাতৃতান্ত্রিক ঠোঁট, ঠোঁটের নখ,
স্ফীত রুটির মতো আছড়ে পড়ুক চরম ও বাধ্যতামূলক এবং অনিবার্য।
মানুষের ঠিকানার গায়ে হাত দিলে ঝটপট ক'রে
ওঠে মাংস। রক্তের কাশির শব্দে ছল্কায় হাড়ের গুঁড়ো মেশানো এই মদ। এরা চীয়ার্স বলছে
শরীরের শেষ ব্যাণ্ডেজটি খুলতে খুলতে ; যার ভেতর জখম না ঠিকানা চেনা যাচ্ছে না পৃথক। পাগলের মতো ব'লে
কিছু হয় না নীলাঞ্জনা। মানুষ পাগল হয় অথবা হয় না। তোমার পিস্তল লুকিয়ে রেখেছ তুমি
তোমার জিভের নীচে। চুমু খেতে খেতে আমার মুখে চালান করে দিলে সে'
পিস্তল। এখন গোয়েন্দা দপ্তরকে সান্ত্বনা দেওয়ার কোনো ঠোঁট নেই
আমাদের ভাষার।
দু’হাতের সকাল, জিভের ফ্রেমে
বোল্ডার ফেলে পালাচ্ছে জিভের দিকে
জিভের
বিষয়ে কথা বলতে আমি এখানে আসিনি
এই যে এপ্রিল মাসের শরীর থেকে তুমি ফোন করলে এখন
আমি
অনুভব করতে চেষ্টা করলাম তোমার স্নানের রঙ স্রোত...
* * *
‘...মিলিতে মাধবে বাধা দেয় সবে...
ভব পিতা কহে প্রেমে ভাসি রে...
রাধা নাম ধ’রে ডাকে উচ্চস্বরে
অতুল প্রেমপ্রকাশি রে
কাননে বাজত বাঁশি
বাঁশি ব্রজবধুকুলনাশি রে...’
অথবা
এখানে জ্যোৎস্না-ফুরনো হাঁসের ধুলো নড়ে উঠছে
সিদ্ধান্ত
নিতে না পারা মোটরবাইকের মতো ধোঁয়ার কথা বলছে চাকাওয়ালা এই ঘর
আঠা
জ্বাল দেওয়ার মূল্যবোধে স্নায়ু নামের সিঁড়ি ওড়াচ্ছেন কো-পাইলট ও এক অন্ধ ইঁদুর
* * *
‘...আড়াই কেজি গমের রুটি
খাইল ব’সে ধুমা বিটি
খুঁজতে গেলে ননদ মাগী মুখটা
করে টুপা
ননদ ভাজে মুড়ি ছাকে নাই
পিঠা...’
কারুর
চলে যাওয়ার ইচ্ছের ভেতর ব’সে
পাখিদের জন্য দু’ফোঁটা গম ছড়াবো ভাবি
‘আগমন’ শব্দটি লিখলে আমি স্পষ্ট
দেখতে পাই আগুন, গম ও মন— সৃষ্টির এই তিনটি
অনিবার্য
উপাদান পাশাপাশি অবস্থান করছেন।
* * *
‘কাঁদলে কিরে ধূলার পাহাড়ে
গঙ্গাবুড়ি গঙ্গা বয়ে যাবে...’
অসমাপ্ত
ত্রিভুবন জ্বালিয়ে শ্যামার গানগুলিতে সুর বাঁধছেন রবীন্দ্রনাথ
আঙুল
ঘরঘর করছে শস্যস্তূপের মতো
এই
মাঠ, মাঠতরঙ্গ, সূক্ষ্ম ও পুষ্ট সন্ধান থেকে বাঘিনী আনচান ক’রে ওঠে
রেশম
আলগা ক’রে জীবনপাত্র ধুচ্ছে
শ্যামা ও বজ্রসেন
মাধুরীগুলো
নামিয়ে রাখা হয়েছে পাশের ডেচকিতে
এই
কবিতাটা যখন কেউ পড়বে, ধরা যাক চারপাশ গ্রীষ্ম হয়েছে
মাধুরী
জ্বাল দেওয়া হচ্ছে নরম ওভেনে
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কবি তো কিছুই সৃষ্টি করলেন না। কবিতার নামকরণ থেকে শুরু ক'রে, লেখাগুলোর শুরুতে কোটেশন এমন কি লেখার ভেতরেও বহুল রেফারেন্স ট্যাগ করে গেলেন। রেফারেন্সগুলো সরিয়ে নিলে কবিতাগুলো কি দুর্বল হয়ে পড়ছে না? লেখাগুলোর শুরুতে গান/কবিতা/গদ্যের কোটেশন দিয়েই বা দাঁড়ালো ব্যাপারটা? আর, তৃতীয় লেখার শুরুতে ওই স্থূল ও মেদবহুল গদ্যের চর্বি? 'শ্যাম ও শ্যামা'র (বৈষ্ণব ও শাক্ত দর্শন) ইন্টারপ্রিটেশনও তো পেলাম না।
উত্তরমুছুন