অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায়
লেখালিখি
শুরু : ২০০২-০৩ থেকে।
প্রকাশিত বই : ‘২০
মিনিটের জন্য সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়’
(২০০৪), দৌড় প্রকাশনী
‘ডাক্তারকে যা বলেছিলাম’
(২০১৪), বৈখরী ভাষ্য
‘উন্নয়ন বিরোধী যেসব ক্রিয়াকলাপ এখন শহরে হচ্ছে’ (২০১৫) – ইবুক, বাক্ প্রকাশনী
সম্পাদনা : ‘অ্যাশ্ট্রে’ এবং
‘ইণ্ডিয়ারি’। ‘বাক্’ পত্রিকার ‘অন্য
ভাষার কবিতা’ বিভাগের বিভাগীয় সম্পাদক।
ভালোলাগা : বই পড়া, বাজার করা, থিয়েটার, ভারতীয় রাগ সঙ্গীত, দেবব্রত বিশ্বাস, প্রতিমা
বন্দ্যোপাধ্যায়, কবীর সুমনের গান, কিশোরী আমোনকর, নিখিল ব্যানার্জির সেতার, বাঙলার
লোকগান এবং মদ্যপান।
যোগাযোগ : arjunbanerjee1985@gmail.com
পুঁই ডাঁটা আর বৌ-শাক
অথবা লুঙ্গি ও আমার যৌনজীবন
অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায়
১.
বাঁধাকপি,
সজনে ডাঁটা, ঢেঁকি শাক, লাল শাক, পুঁই শাক, লাউডগা, উচ্ছে, ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙে, হলুদ,
সয়াবিন (বড়ো দানা), এঁচোড়,
মোচা, কাঁচা ছোলা। গম। সকাল সকাল আনাজ-সব্জির বাজারে গেলে একটা সবুজানুভূতি হয়।
শস্য্যানুভূতি হয়। এক একটা সব্জির রস মুখের ভেতর, জিভের বারান্দায়, টাগরায় খেলতে
থাকে। ব্যাগ উপচে নেওয়া শাক-পাতা-সব্জি নিয়ে, ব্যাগের ভারে একপাশে হেলে, হেঁটে
হেঁটে বাড়ি ফেরার সময়, কিম্বা হাত ব্যথা হয়ে গেলে এ’ হাত ও’ হাত বদলে ব্যাগ নিয়ে ফেরার
সময়, যে ঘাম সমূহ আমার বুক গলা ঘাড় চুঁইয়ে নামতে থাকে, নামতেই থাকে, আর আমি হাঁটতে
হাঁটতে টের পাই ঘাম গজাচ্ছে, মনে মনে ভাবি ঢেঁকি শাকটা কেনা হ’ল না। বলতে বলতেই দেখি ফুটের ওপর একটা বৌ বসেছে মাথায় ঘোমটা টেনে, সামনে
বিছোনো শুধুই কয়েক আঁটি বৌ শাক। অদ্ভুত এই শাকটা দেখতে। সবুজ রঙের জংলা শাড়ি পরা
মাথায় ঘোমটা টানা একটা বৌয়ের মতোই। আর যে বৌ-টা বসে বেচছে ফুটের ওপর, সে-ও ওর’ম একটা শাড়ি পরেই ঘোমটা টেনেছে মাথায়। ঢেঁকি শাকের নাম যে কবে দিয়েছিলাম বৌ
শাক কে জানে। বাড়িতে এখন এই নামটাই চালু হয়ে গেছে। এখন ব্যাগে ক’রে বেশ কয়েক আঁটি বৌ নিয়ে যাচ্ছি আমি। রাস্তায় কোনো গাছের পাতা শুকিয়ে ঠা
ঠা হয়ে প’ড়ে থাকতে দেখলে, সেটাকে মাড়িয়ে
দিলে কড়রমড়র যে শব্দটা পায়ের নীচ দিয়ে স্নায়ুতন্ত্র বেয়ে মাথায় গিয়ে ওঠে, সেই
ধ্বনির কাছে এবং তার এই শরীরী যাত্রাপথে আমি কবিতা স্পষ্ট টের পাই। বৌ শাক, বড়ো
দানার সয়াবিন, মোচা, সজনে ডাঁটা, পুঁই ডাঁটা, গম— এই নামগুলোর মধ্যেই তাদের চিবোনোর সময়কালীন রসগুলো আছে। অথবা, আমার
খাদ্য-স্মৃতি এদের নামের মধ্যে সেই রসগুলো প্রেরণ করেছে। একবার ভেলোর থাকার সময়,
সারা ভেলোর বাজার চষে ফেলেছি লাউডগা খুঁজে। পাইনি। কি হা-কাঙালের মতো সেবার আমার
লাউডগা খেতে ইচ্ছে করছিল। পেলামই না। শেষে দু-দিন ধরে মনে মনে ভাবলাম আমি লাউডগা
খাচ্ছি। তার ডাঁটার রসগুলো স্মৃতি থেকে জাগানোর চেষ্টা করলাম। জিভ ভ’রে গেলো লাউডগার রসে। খুব লক্ষ্য ক’রে দেখেছি বাঙলা কবিতায়
দু-তিনজনের কবিতা প’ড়ে আমার ঠিক এই অনুভূতিটা হয়।
যেন সারারাত ভিজোনো এক মুঠ কাঁচা ছোলা মুখে পুরে চিবোচ্ছি। আহা। শব্দ, ধ্বনি,
ধ্বনির টংকার, টংকার নিংড়ে বেরোনো রস-সমূহ এবং তাদের রঙ ও গন্ধ— এ’ কি অসামান্য যৌনতৃপ্তি। এই
আনাজ ও দানাশস্যগুলো থেকে যে রতিক্রীড়া জেগে ওঠে এবং সজাগ-ইন্দ্রিয় হয়, কবিতা
তাদের আশেপাশেই ঘুরঘুর ঘুরঘুর করতে থাকে পায়ে পায়ে, বেড়াল ছানার মতো।
প্রত্যেকটি শরীরের নিজের জ্যামিতি থাকে। সেই জ্যামিতি হঠাৎ একটা যাদুতে পালটে গেলে মানুষ
পড়ে মহা ফাঁপড়ে। যেমন পড়েছিলেন গ্রেগর সামসা। রোজ তিনি বিছানা থেকে যেভাবে নামেন,
দরজার ছিটকিনি খোলেন যেভাবে, সব পালটে গেছে এক সকালে। নেফ্রটিক সিন্ড্রোমে দু’দিনে হঠাৎ দশ-বারো কেজি ওজন বেড়ে যাওয়ায় দেবাদৃতার কাঁধে হাত রেখে থপ্ থপ্
ক’রে হাঁটতে হাঁটতে যখন শেয়ালদা স্টেশনের সিঁড়ি ভাঙছি সেবার, বিশ্বাস করুন
কাফকা, আমার আপনাকে নয়, মনে পড়ছিল গ্রেগরকেই। কল্জে থেকে কুঁচকি সব তখন ফুলে
যাচ্ছে প্রত্যেক মুহূর্তে যেন। আমি স্পষ্ট টের পাচ্ছি আমার এ-তো-দি-নে-র চেনা শরীর, তার প্রত্যেকটা
মাংশপেশী আজ অজানা হয়ে যাচ্ছে আমার নিজের কাছেই। সেবার বাসায় ফেরার পর থেকে শুরু
করলাম লুঙ্গি পরা। আহা লুঙ্গি। জামা-জুতো-চটি বেচারারা কেউই তো এঁটে উঠছে না গায়ে।
প্রতিদিন আমি আরো ফুলছি। বিছানায় পাশ ফেরার হিসেব-নিকেশও বদলে গেছে। চোখের পাতা ফেলা,
ঘাড় ঘোরানো, পা ফেলার মাপ, সবকিছুর সাথে নতুন ক’রে একটা বোঝাপড়া করে নিতে হচ্ছে তখন অর্জুন গ্রেগর বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
অদ্ভুত এক কদাকার আকৃতি নিয়ে পুরুষাঙ্গ ফুলে ঝুলে আছে। সারারাতের ধুন্ধুমার
বৃষ্টির পর এক-কোমর জলে ফ্যালফ্যাল ক’রে দাঁড়িয়ে আছে
হৃৎপিণ্ড। ভেসে যাচ্ছে ফুসফুস। বৃক্ক। হেনলীর লুপ। এখন, শরীর আবার ফিরছে তার আগের
জায়গায়। কিন্তু লুঙ্গিটাকে ছাড়িনি। ঘরে, ঘরের বাইরেও। বিপদের দিনে পাশে ছিলিস তুই।
ছাড়া যায়! বরং কিনেছি নানা রঙ-বেরঙের লুঙ্গি। লাল। বাদামী। নীল। পরিষ্কার কাচা
লুঙ্গিতে যে খুব ভালো মাস্টারবেট করা যায়, শিখিয়েছিল ইন্দ্রনীল। নতুন এই পোশাকের
সাথে আমার যৌনজীবন যে এভাবে জড়িয়ে যাবে কে জানতো। যেভাবে যৌনতা হয় আমার বাজারের
ব্যাগে পুঁই ডাঁটা আর বৌ-শাকের। যেভাবে ব্যাগে সজনে ডাঁটাকে জড়িয়ে ধরে লাউডগা।
আমার যৌনতা আমার লুঙ্গির সাথে।
২.
গ্রাম
উথলে ওঠা এই বৃষ্টির বাইরে প’ড়ে
আছে তিনতলার মাঠ
মাঠের
ওপর এক ত্রিমাত্রিক ট্রাক—
চাকা ও পরিত্রাণ খুলে শ্বাসকষ্ট দিয়ে
মেখে খাচ্ছে রুটি
অর্ধেক
ভাঙা জিভ, ছেঁড়া দাঁত, মনে করো পেরিয়ে যাচ্ছে এই কবিতাটা
বৃষ্টিনির্মাণকারী
শ্রমিক। তোমার বাজনা এবারে ধাতু ও পতঙ্গ হোক।
শরীরের ভেতর বড়ো হচ্ছে জল জমার দেশ, শ্যালো ও
সেচ ব্যবস্থা
আমাকে
এবার কেউ ধানের ধ্রুবক মনে করিয়ে দাও
৩.
চেন্নাই
থেকে ফিরছি। কলকাতা। বিকেল চারটে পঞ্চাশের ফ্লাইট। AI-766,
জানলার ধারে সীট। রিনির কাছ থেকে নিয়ে এসছিলাম, আর্যনীল মুখোপাধ্যায়-এর ‘কিনারার রূপকথা’। জানলার সেই কিনারায় ব’সে পড়ছি। উড়ে যাচ্ছে প্লেন। কোথায় ব’সে আছে আর্যনীল
মুখোপাধ্যায়। ঠিক এই মুহূর্তে ওর একটা বই পড়ছে কেউ, মাটি থেকে অনেক ওপরে, আকাশে
তখন রূপকথার রঙের মতোই রঙের পর রঙ ছড়াচ্ছে সন্ধে। প্লেনশুদ্ধু লোক বাঁদিকে মুখ
ঘুরিয়ে অবাক হয়ে দেখছে সেটাই। আমার পাশে বসা দুই তরুণ বার্মিজ দম্পতি। অনেক
চেষ্টাতেও খুব একটা আলাপ জমাতে পারলাম না যাদের সাথে। সবার সন্ধে দেখার ফাঁকে তাঁরা
নিজেদের ব্যাগে লুকিয়ে নিলেন এয়ার ইণ্ডিয়া থেকে দেওয়া টিফিনের চামচ দুটো। আমি
আকাশের নীল থেকে আর্যনীলে ফিরে এলাম। মাটি থেকে এতো ওপরেও মানুষ চুরি করে। কলকাতার
আকাশে যখন ঢুকেছে প্লেন, সন্ধে হয়ে গেছে। রাস্তায় রাস্তায় বাড়িতে বাড়িতে দীপাবলীর
মতো জ্বলছে আলো। কী মায়াবী। কী রূপকথা। এই ঘরগুলোর ভেতরে কি হচ্ছে এখন, কি কলহ, কি
বিচ্ছেদ, এই মায়ার আলো দেখে তা’ ভাবাও যায় না। ভাবতে
ইচ্ছেও করে না। কিন্তু কবি সতত গোয়েন্দাপ্রবণ। যদিও কবি এবং গোয়েন্দার মধ্যে প্রচুর
মিল দেখি আমি, তবু পদ্ধতিগত দিক থেকে মূলগত একটা পার্থক্য আছে। কবি চান রহস্যকে বাঁচিয়ে রাখতে। রহস্য তৈরি করতে।
কিছু তার দেখি আভা। কিছু পাই অনুমানে,
কিছু তার বুঝি না বা। এই রহস্যটা। আবার গোয়েন্দা চাইছেন রহস্যকে ভেদ ক’রে যেতে। দু’জনেই সত্যাণ্বেষী। তবে, আমার
মিথ্যেগুলোও তো আমার সত্যি। শিশুর ছবিতে আকাশের রঙ সবুজ, কাকের রঙ নীল হয়ে যায়
যখন, বোঝা যায় মিথ্যেটাকে তৈরি করতে হয়। কল্পনাশক্তি দিয়ে। পালিয়ে যাবার অলগলি
বাৎলে দিতে পারে এক একটা খানদানী জাঁদরেল মিথ্যে আমার। দিয়েওছে। আজও দেয়। প্লেন থেকে নীচের বাড়িগুলোকে যখন দেখি, তার দেখা
না দেখায় মেশা আভাগুলো দিয়ে কিছু পাই অনুমানে। কিছু বুঝি। কিছু বুঝি না। ছেলেবেলায়
যেমন, মা নাচ শেখাচ্ছেন বাড়িতে। আমি বিকেলে ঘুম থেকে উঠে দেখতাম, উদ্ভিন্নযৌবনা দিদিরা ভারী বুক নিয়ে নীচু হয়ে
ঘুঙুর বাঁধছে, ঘুঙুরের
রিনিঠিনি আওয়াজ হচ্ছে। ক্যাসেটে
হয়ত বাজছেন মান্না দে। আমার মন কিন্তু চলে যেত
ওই দিদিগুলোর
দিকেই। মান্নাবাবুর গলা আমাকে সেখান থেকে নজর সরাতে পারেননি। মস্তিষ্কে কতকিছু এসে যাচ্ছে তখন একইসাথে।
ভালোলাগছে ওই ভারী বুকের দিকে অনিমিখে চেয়ে থাকতে। ভালো লাগছে ওই রিনিঠিনি ঘুঙুর।
তবলার বোল। বৃন্দাবন মে নাচত গিরিধারী। মেঝেতে পায়ের চেটোর চটাস্ চটাস্ আওয়াজ। আমার
ধ্বনিচেতনাও তৈরি হচ্ছে। ওই সময়েই সাবালক হচ্ছে যৌনচেতনা। দুপুরের ঘুমের সময়টা হয়ে
গেল আমার যাবতীয় কল্পনার সময়। যে দিদিটাকে তখন ভীষণ ভালোলাগছে, দুপুরের কল্পনায়
তার সাথে স্নান করছি সাবান মেখে। মাস্টারবেশন থেকে কবিতা অব্দি— আই অ্যাম দ্য মনার্ক অফ অল আই ইম্যাজিন। তার প্রতিটা ন্যারেশন
আমাকেই লিখতে হচ্ছে। হে তোমার শীৎকার, সেও আমারই
মস্তিষ্কজাত। তোমার স্পর্শও তৈরি আমাকে ক’রে নিতে হয়। আরো অনেকটা বড়ো হয়ে, এর সাথে আরেক অভূতপূর্ব পথ এসে
মিশলো। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন সঙ্গী বা সঙ্গীনির কাছ থেকে পাওয়া সবচেয়ে
ভালোলাগার মুহূর্তগুলোকে আলাদা আলাদা ক’রে তুলে এনে, একটা কোলাজ বানিয়ে এক ক’রে নেওয়া। এই যে কোলাজ থেকে একটা আদর-সমগ্র তৈরি হ’ল, এই অখণ্ড ও নির্বাচিত আদর-প্রণালি কারো মধ্যে ছিল না। পরে
বুঝেছি, যৌনতা এমন একটা এলিমেন্ট, অনেকটা সৌন্দর্য বা কুৎসিত যেমন, যেকোনো কিছুর
মধ্যেই থেকে যেতে পারে। কবিতাও তেমনি, থেকে যায়, যে কোনো আধারের ভেতর, লুকিয়ে
চুরিয়ে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ব্যথিয়ে। অনেক কিছুর মধ্যে।
৪.
নার্সারীতেই পড়ি বোধয় তখন। ইশকুল থেকে
ফিরে, বাড়িতে, সন্ধ্যায় পড়ছি, সি এ টি ক্যাট, ক্যাট মানে বেড়াল। ডি ও জি ডগ। ডগ
মানে কুকুর। এম এ এন ম্যান, ম্যান মানে মানুষ। বাবা গম্ভীর গলায় বলল, ‘বাবাই, ক্যাট মানে বেড়াল নয়। ডগ মানেও কুকুর নয়’। আমি ফ্যালফ্যাল ক’রে তাকিয়ে আছি লোকটার দিকে। বলে কি লোকটা। ‘ক্যাটের বাঙলা হ’ল বেড়াল। ডগের বাঙলা হ’ল কুকুর। ক্যাট মানে কখনও বেড়াল নয়। ডগ মানেও কখনও কুকুর নয়’। প্রত্যেকবার ‘মানে’ কথাটায় বাবা যে আলাদা ক’রে স্ট্রেস দেওয়ার জন্য ঠোঁটের ওপর চাপ দিয়েছিল, সেটা আমার
স্পষ্ট মনে আছে। শব্দের যে কোনো মানেই হয় না, সে একটা প্রতীক মাত্র, সে কিছুকে রেফার
করে, চিহ্নিত করে, কোনো কিছুর ‘মানে’ সে ব’লে দেয় না, এটা বোঝার বয়েস তখন
স্বাভাবিক ভাবেই নয়। বাবা আরো একটা মজার কাণ্ড ক’রে দিয়েছিল আমার জন্যে। খুবই ছোট তখন। বিভিন্ন জিনিসের নাম দিয়ে
দিত বাবা। যে জিনিসের যে নাম হওয়ার কথা ভাবাই যায় না। যেমন, আমার সেই ছেলেবেলার
হাওয়াই চটি। তার নাম হয়েছিল ‘সুন্দরী’। এবারে, ওইটুকু পুঁচকে একটা ছেলে, সে তার চটিটা খুঁজে না পেলে,
বাড়ি মাথায় ক’রে চিল্লিয়ে হাঁক পাড়ছে, আমার সুন্দরী
কইইইইইইইইইইইইই???? অনেকটা বড়ো হয়েও আমি হাওয়াই
চটিকে সুন্দরীই বলেছি। এও এক রঙ মিস্ত্রীরই কাজ। মিথের রঙ ভাঙা। পাশের বাড়ির এক
খুব রোগা ও রুগ্ন হিলহিলে দিদির নাম বাবা দিয়েছিল, ৎ। আমি বর্ণের, শব্দের আকার-আকৃতি,
অক্ষরচিত্র ও তার দেহগঠনকে অন্য গঠনে চিনতে শুরু করলাম সেই থেকে। বর্ণ, শব্দ, শুধু
তার ধ্বনি নিয়েই নয়, এরা এলো ত্রিমাত্রিক চেহারা নিয়ে। তাদের রঙ ও গন্ধ নিয়ে। কেউ
কেউ এলো জ্যান্ত মানুষ হয়েই। কোনো কোনো শব্দের স্বাদও আছে। তাদের আস্বাদন করা যায়।
এ’ এক synaesthetic কর্মকাণ্ড সমস্ত ইন্দ্রিয় এবং তার উপকূলবর্তী অঞ্চল জুড়ে। যৌনতা যেমন, সঙ্গম যেমন, সব ইন্দ্রিয়
কার্যকর ক’রে পেতে হয়। দৃশ্য, শ্রুতি, ঘ্রাণ,
স্বাদ, স্পর্শ সমস্ততে মিলিয়ে যখন পাওয়া, সেটাই তো আমার কবিতাযৌনজীবন।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন