তিনটি কবিতা
সুদীপ্ত চক্রবর্তী
ফ্ল্যাটবাড়ি
১
পাশাপাশি বাড়ির বাথরুম অন্য
জানালা থেকে
দেখা যায় বলে, জানলায় পর্দা
বসেছে –
বাথরুম খোলামেলা, যথারীতি
হাওয়া খেলে বেশ
লোহার গরাদ আছে সদর দরজায়,
পাঁচিল লেগেছে
উপরিভাগেতে গাঁথা কঠিন
পেরেক, শালা
টপকাতো আগে
শোন, দু-দুটি পেয়ারাগাছ আর
আশ্চর্য এক
বারোমাস্যা শিউলি রয়েছে
টগর দিচ্ছে সরকার, রঙ্গন
গেটের ঠিক মুখে –
এছাড়াও দাশগিন্নি –
ভোররাত...
পাশের দোতলা থেকে বিড়বিড়
করছেন
অ্যালুভেরা, অ্যালুভেরা ...
গৃহসন্ন্যাস খুব কাজের কথা
নয়
বিশেষত ফ্ল্যাটবাড়িতে
২
ফ্ল্যাটবাড়ির দরজা অত সহজে
খোলেনা
খোলা জায়গায় দাশবাবু,
মুখুজ্জের পো
আর আপাত গরীব আগরওয়াল বসে
মুড়ি ও চানাচুর চালান,
মাঝেমধ্যে বসন্তবিহারে
একে অন্যের সংসারে জাবর
কাটেন
তারা খসে। সম্পর্ক ভেঙে যায়
ভাগ হয় না। কোনো এক অদ্ভুত
গাণিতিক বোধে
এক হয়ে ক্যাওস চালায়...
ফ্ল্যাটবাড়ি ফুলেফেঁপে ওঠে।
সহজে খোলেনা
সেখানে গার্ড আছে।
গার্ডিয়ান আছে
দোতলায় গুপ্ত-সুন্দরীর
গোয়েন্দা কুত্তা আছে –
দরজার চাবিগুলো শুধু কোথাও
থাকেনা
হাওয়ায় ভাসে, দোতলা,
তিনতলা, ছাদ
ভাঙা এন্টেনা
ফিরতে ফিরতে ভোর হয়ে যায়
৩
আচমকা মধ্যরাতে অর্ধেক চাঁদ
আর
এক প্রাচীন দুর্গ এসে সামনে
দাঁড়ালো –
আবছায়া সেই দুর্গের মিনারে
ছিলো
আশ্চর্য আঁধার। কিছুটা
এগোতেই
নেমে এলো চাঁদ –
প্রাসাদ সামান্য উঠে থমকে
দাঁড়ালো।
বাঁদিকের জানলায় দেখা গেল
ছুরিতে শান দিচ্ছে ব্যস্ত
দুটি লোক,
সামান্য ডানদিকে রাজকণ্যার
চুল আঁচড়ে দিচ্ছেন
সুচিত্রা সেন, আর তৃতীয়
জানালায়
এক মুখ ঢাকা লোক সবেমাত্র
প্রবেশ করলো — শেষে
দোতলায় নেমে যাওয়ার আগে
ডান জানালায়, একটি
ক্যামেরাকে
একা একা বসে থাকতে দেখা
গেল...
মানুষটি এগোলো কিছুটা
চাঁদ নেমে এলো মিনারের আরো
কাছাকাছি
শেষরাতে জানালায় দেখা গেল –
অকারণে হাসছেন এক অসুস্থ মানুষ।
চোখে তাঁর আশ্চর্য ফোকাস –
এসময় আচমকা লোডশেডিং হওয়ায়
তাড়তাড়ি ভোর হলো আজ
সাইকেল নিয়ে বেরোলো যত
সংবাদবাহক
আর শহরে ঢুকতেই, দুর্গটি
বেমালুম
ফ্ল্যাটবাড়ি হলো।অগত্যা
একতলায়
পৌঁছে গেল সেও
দিনের বেলা ঘুমিয়ে কাটালো
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন