আকাশবাণী
অথবা 'ওয়েল কাম হোম' গল্পের এক বিনির্মাণ
বাতাস ওদের
ধরে রাখে। এক সময় থেকে অন্য সময়ে নিয়ে যায় হাত ধরে। বাতাস থেকেই একদিন ওরা উঠে
আসে। অন্য দিনের শব্দ হয়ে। কন্ঠস্বর। বাতাস ওদের ধরে রেখেছে,
কড়ে আঙুল ধরে। সময়ান্তরের কন্ঠস্বর। সময় ওদের ছেড়ে দিয়েছে কিন্তু বাতাস ওদের ছাড়েনি। এই ঘরের তালা খোলা হয় না তা
প্রায় একশো বছর হলো। ভারত এই ঘরে এখনো পরাধীন। তালা খুলে ঢুকে ঘরের
মধ্যিখানে যেখানে চারদিকের শার্সির ফাঁক দিয়ে চার চারটে আলো এসে অনন্তে মেশে,
সেইখানে বসে বাতাসের ভেতর আড়ি পাতলে হাওয়ার হয়ে ওঠার মধ্যে অতীতের
মৃত কন্ঠস্বরগুলো অটুট শোনা যায়। মৃত মানুষের রেখে
যাওয়া বাক্যগুলো এই কাটাতার আকাশবাণীতে আর্কাইভড হয়ে
থাকে। ইহজীবনে যেসব মানুষদের কখনো দেখা বা কথা হয়ে ওঠেনি তাদের মৃত বাক্যগুলো
এখানে পরস্পরের সাথে কথোপকথন চালায়:
"এরকম জায়গায় আগে কখনো এসেছ?"
"এখানে এখনো পর্যন্ত খারাপ কিছু ঘটেছে বলে শুনিনি।"
"ওরা তোমাকে দেখতে এসেছেন।"
"তোমার অদ্ভূত মনে হচ্ছেনা ভেবে যে এখানে মানুষ থাকে, কাছে জনবসতিও আছে ? "
"তুমি তো আমাকে বলনি এদের আসার কথা!"
"দেখছ না কেমন একটা অদ্ভূত নিস্তব্ধ আনন্দ চারপাশে"
"আসলে আমাদের এখন আসার কথা ছিল না।"
"খুব ভালো লাগলো আপনাদের দেখে ।"
"তাহলে ওদের ফিরে যেতে বলি?"
"আমরা এত তাড়াতাড়ি যাব? আর একটু থাকলে হতনা?"
"ওয়েলকাম হোম"
বন্ধ ঘরের তালাটার ওপর যে সব মাকড়সা সময়বিশেষে তাদের
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব বিস্তার করেছে সেসব পোড়ো
জালের আকাশে মেঘ বৃষ্টি মেঘের
বৃত্তায়নের শেষে মেঘের ফাঁক থেকে চাঁদ আবার বেরিয়ে এলো। নাহ, ঘরটা আজ অব্দি কেউ খুলে দেখেনি। শুনে
দেখেনি মরণের এই শব্দাভিসার। এখন জোছোনা থাকতে থাকতে খুলেই দেখা যাক, না কি শোনা যায় আর কি না যায়।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন