তরুণ কবি শিমন রায়হানের জন্ম ১৯৮৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশের ঝিনাইদহে। ‘সতীর্থ- বাঙলার কাগজ, বাঙলা ভাষার কাগজ …’ এর সম্পাদনা কাজের সাথে ওতপ্রোত। চলচ্চিত্র চর্চায় আরো নিবিড় হবার ইচ্ছে। মনোযোগের মধ্যে রয়েছে – বাউল গান, লোকসংস্কৃতির অন্যান্য দিক। অবসর পেরোয় - গজল, সানাই, রবীন্দ্রসঙ্গীতে ..
আকাশডাক : shimon_88tm@yahoo.com
মুঠোফোন : +৮৮ ০১৭২৪ ০২৮৩২৮
শিমন রায়হান এর কবিতা
কালভার্ট
হাওয়ার রাখাল গা ধুয়ে গেলে
বটপাতা কথা হয় ছায়াবৃত জলের স্বরে
জগতের প্রান্ত হয়ে তখনও জেগে
ধুলো-ধোয়ায় নিমগ্ন রেলিঙ
মইষালের ছড়ি চলে
জলের ওপরে জাগে মহিষের করুণ চোখ
সুড়িপথ ভাবতেই মেঘে মেঘে খোয়ারি
দূর্গম কৌশলে আরো ইশারা বেঁধে রাখা হলে
কোনও পাজলপুরের পুস্তানি ফুড়ে বেরোয় কথাপ্রবাল
কথাদের মিলিয়ে দিতে বুক পেতে রাখে কালভার্ট
মিথ্যে মিথ্যে কেশর
কৃষ্ণপক্ষের জাতিস্মর, তুহিন দাস কে
একা মঠের মাথার ওপর তারাখসা রাত
কথাবাজ পালক অবিরাম বয়
পুরাণ গন্ধে বয় ভাবনার সুতল আর্তি
টেগোরলজের রিটায়ার্ড খিলানে মেকি কেশর
যদিও রেলিঙে জাদুঘর দাঁড়াতে পারে না
কবিতা দাঁড়ায়
কড়িকাঠ গুনে-গুনে প্যাঁচানো সিঁড়ি নেমে যায় রাস্তায়
স্কুলের জানালা
পুরোনো হেলান থুতনি রাখা প্রেত কথারা
গরাদের এফোড়-ওফোড় উড়ে যায় রোদের দাগ
দীর্ঘশ্বাস কিঙবা স্বভাবে শ্বাসের ভুল
গরাদের এফোড়-ওফোড় উড়ে যায় রোদরঙা পাখি
দীর্ঘ জানালা কিঙবা স্বভাবে জানালার ভুল
হাত পুড়িয়ে লেখা যেকোন নাম
উড়ে বসে ষোলবছর পর
আবার হয়ে পড়ে ভুলপ্রবণ অক্ষর কয়েক
হাওয়া ব্রিজ
রাত হলে নিয়ত নাশপাতিবনে ঢুকে পড়া যায়
উদভ্রান্ত সব সঙ্গীত যাবতীয় দাপাদাপি ফেলে
পারাপার নাই তবু ব্রিজ ঢুকে পড়ে
কী এক অধিকারময় ল্যাম্পপোস্ট জলতে থাকে
কোথায় যেন ফানুস ওড়ে আর স্বল্পায়ু মাছের আদর
ভেসে আসে জালের অধ্যাদেশ-গুমপ্রেরণা ভেস্তে
তার আয়ুর মধ্যে জেগে থাকে সমূহ বিলাপ
কিঙবা বিবিধ বাখোয়াজের সমান্তরালে গোলাপি বুদবুদ
উদ্বায়ু ঘোরের ভেতর সুচতুর ঢঙে
পারাপার নাই তবু সেতুর জন্য চুম্বন তোলা থাকে
আলঝেইমার বশত ভুলপ্রবণ কোন এক
পাপারাজ্জির কেশর জেগে ওঠে হাওয়ায়
মধ্যরাত্তিরের ফেসবুক
অযুত নিযুত ওয়াল মানে নীল দেয়ালের নগররাষ্ট্র
স্বতন্ত্র হোমপেইজে উড়ে যায় হ্যালুসিনেশানের নীল নৌকো
গালেহাত জমে গেলে স্ট্যাটাসলেস রাতের নিউজফিড
কম্বলের তলায় কপট ক্যাম্পফায়ার
.. উস্কানিপত্রে- হোয়াটস্ অন ইওর বডি!
সেভ আওর সৌল
স্যাঁতসেতে পথ মাড়াতেই
শুকনো পাতা ভেঙে যাচ্ছিল তার স্পাইসি ইমেজ নিয়ে
আপন অন্ধকারে তবু কিছু নিরুদ্দেশ কবুতর
এস.ও.এস. ফ্ল্যাগ হয়ে উড়ছে …
দেয়ালটাই জানালা ধারণ করছে এই ঋণ মানলে
স্থিরচিত্রে অবাঞ্চিত নয় পুরোনো শিশিও
গিটের রহস্যে বাঁচে অনুমান
… অথচ সিমবোলিক শটে কী চমত্কার শকুনের ঠোট
কথা কার্ণিশ
যে খেলাটা খেয়ালের বশে শ্বাসরুদ্ধকর হয়ে এলো
আর শব্দসমূহ হতে থাকলো হৃদয়ের ঠোট
কী ধূসর কোলাহল
এরপরেও ওত্ পেতে থাকা টিকটিকি দুটিকে
সেলফিশ বলা সঙ্গত হবে না
যেহেতু আমার নির্জনতা ওদের কাছে বিস্ময় হয়ে পৌছোচ্ছে না
ইশকুলে ছুটি চলছে
কেউ নেই অথচ দ্যাখো অদ্ভুত জড়তায়
বাড়ি ফেরা হয়নি আমার কিঙবা বাড়িই ছিল না বলে
বুলফাইট রিঙে আচানক আটকে যাওয়ায়
টাইমমেশিনের প্রয়োজনীয়তা মনে পড়ছে
হারানো কাঁচপাথর আরেকটু আকড়ে ধরলেই হোতো
ক্রমাগত ফুরোচ্ছো তুমি তোমার নখ
তবু ভয়ানক ভাবে হারাওনি বলেই
অন্য কথার কৌশলে আঁচড়েরা কার্ণিশ হয়ে
টু বি কনটিনিউড ..
কালো কবির কাছে শাদা পাখি সে কী কৌতূহল ছিল
জীর্ণ ফটোগ্রাফ তবু দারুণ এক সুইসাইড নোট হতেই পারতো
তার সমস্ত চুপকথা শেষোব্দি রুপকথা হতে হতে
মান করে ঘুমোলো উজবুক মেঘের প্রতিভায়
নকশা আঁকা হচ্ছিল এপর্বেও স্বর্গীয় তোতার ঠোটে
না – বলতেই জিয়ন কাঠির ভেলকিতে আশ্চর্যপুর
ফের এ অপেক্ষার প্রলম্বন
রশোমন শেখাল তবু বেঁচে থাকা বোকা তোরঙ্গের বিস্ময়ে
দৌড় এর কবিতা গোলাপি প্রজাপতির জন্য নিষ্ঠ কাঠগোলাপের চোখ
সহোদর তার রাত যদিও জন্মায়নি কেউ’ই
মাহুতের গান
পেয়ারাবাগানের দুপুর পেরুলেই
সন্ধ্যেমাঠের দৃশ্যে উড়ে যায় ছাপোষা ফু
লোকরান্নার ধোয়াশা ধোয়ার আশা বিদগ্ধ কাঠ
পর্ণস্টারের ক্রুর হোলো আবাবিল
আর বরফের নতুন নাম বিভৎস জ্বলন
অজাচারী মেঘে শেখা গেল তানপুরার অন্য উপমায়ন
বৃষ্টির যিকির মশগুল হেলো নিতম্বের তালে আর তানসেনে
পরিত্যক্ত সার্কাস হস্তিনীর বৃক্ষশরীর – আধপেটাচোখ
ওর ভারী এগুনোর মানেও দাঁড়াল জীবন
কিছু হ্যাংওভার দুলুনির বেঘোরে ক্ষুধার দশা
কেতকীর মুখ - ৪
জল তো ভাস্কর ছিল বালির নির্জন ভাজে
.. তবু জলের কথা ভুলে যাই