• কবিতা সুর্মা


    কবি কবিতা আর কবিতার কাজল-লতা জুড়ে যে আলো-অন্ধকার তার নিজস্ব পুনর্লিখন।


    সম্পাদনায় - উমাপদ কর
  • ভাবনালেখা লেখাভাবনা


    কবিতা নিয়ে গদ্য। কবিতা এবং গদ্যের ভেদরেখাকে প্রশ্ন করতেই এই বিভাগটির অবতারণা। পাঠক এবং কবির ভেদরেখাকেও।


    সম্পাদনায় - অনিমিখ পাত্র
  • সাক্ষাৎকার


    এই বিভাগে পাবেন এক বা একাধিক কবির সাক্ষাৎকার। নিয়েছেন আরেক কবি, বা কবিতার মগ্ন পাঠক। বাঁধাগতের বাইরে কিছু কথাবার্তা, যা চিন্তাভাবনার দিগন্তকে ফুটো করে দিতে চায়।


    সম্পাদনায়ঃ মৃগাঙ্কশেখর গঙ্গোপাধ্যায়
  • গল্পনা


    গল্প নয়। গল্পের সংজ্ঞাকে প্রশ্ন করতে চায় এই বিভাগ। প্রতিটি সংখ্যায় আপনারা পাবেন এমন এক পাঠবস্তু, যা প্রচলিতকে থামিয়ে দেয়, এবং নতুনের পথ দেখিয়ে দেয়।


    সম্পাদনায়ঃ অর্ক চট্টোপাধ্যায়
  • হারানো কবিতাগুলো - রমিতের জানালায়


    আমাদের পাঠকরা এই বিভাগটির প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন বারবার। এক নিবিষ্ট খনকের মতো রমিত দে, বাংলা কবিতার বিস্মৃত ও অবহেলিত মণিমুক্তোগুলো ধারাবাহিকভাবে তুলে আনছেন, ও আমাদের গর্বিত করছেন।


    সম্পাদনায় - রমিত দে
  • কবিতা ভাষান


    ভাষা। সে কি কবিতার অন্তরায়, নাকি সহায়? ভাষান্তর। সে কি হয় কবিতার? কবিতা কি ভেসে যায় এক ভাষা থেকে আরেকে? জানতে হলে এই বিভাগটিতে আসতেই হবে আপনাকে।


    সম্পাদনায় - শৌভিক দে সরকার
  • অন্য ভাষার কবিতা


    আমরা বিশ্বাস করি, একটি ভাষার কবিতা সমৃদ্ধ হয় আরেক ভাষার কবিতায়। আমরা বিশ্বাস করি সৎ ও পরিশ্রমী অনুবাদ পারে আমাদের হীনমন্যতা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরটি সম্পর্কে সজাগ করে দিতে।


    সম্পাদনায় - অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায়
  • এ মাসের কবি


    মাসের ব্যাপারটা অজুহাত মাত্র। তারিখ কোনো বিষয়ই নয় এই বিভাগে। আসলে আমরা আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালবাসার কবিকে নিজেদের মনোভাব জানাতে চাই। একটা সংখ্যায় আমরা একজনকে একটু সিংহাসনে বসাতে চাই। আশা করি, কেউ কিছু মনে করবেন না।


    সম্পাদনায় - নীলাব্জ চক্রবর্তী
  • পাঠম্যানিয়ার পেরিস্কোপ


    সমালোচনা সাহিত্য এখন স্তুতি আর নিন্দার আখড়ায় পর্যবসিত। গোষ্ঠীবদ্ধতার চরমতম রূপ সেখানে চোখে পড়ে। গ্রন্থসমালোচনার এই বিভাগটিতে আমরা একটু সততার আশ্বাস পেতে চাই, পেতে চাই খোলা হাওয়ার আমেজ।


    সম্পাদনায় - সব্যসাচী হাজরা
  • দৃশ্যত


    ছবি আর কবিতার ভেদ কি মুছে ফেলতে চান, পাঠক? কিন্তু কেন? ওরা তো আলাদা হয়েই বেশ আছে। কবি কিছু নিচ্ছেন ক্যানভাস থেকে, শিল্পী কিছু নিচ্ছেন অক্ষরমালা থেকে। চক্ষুকর্ণের এই বিনিময়, আহা, শাশ্বত হোক।


    সম্পাদনায় - অমিত বিশ্বাস

অনুপম মুখোপাধ্যায়

হাতে আসা কিছু পত্র-পত্রিকা


আমার ভুল হচ্ছে কি? এই মুহূর্তে লিটল ম্যাগাজিনের জগতে একটা সংকট তাপমাত্রা টের পাচ্ছি কিন্তু। যে লিটল ম্যাগাজিনগুলোকে আমরা বিগত শতাব্দীতে দেখেছি, দেখে অভ্যস্ত হয়েছি, তারা হয়তো এখন হয়তো নিজের রূপ এবং গন্তব্যকে বদলে নিতে বাধ্য। আন্তর্জাল এখন প্রকাশ এবং প্রচারের এক অনন্তকে খুলে দিয়েছে আমাদের সামনে। নিছক লেখা প্রকাশ এবং পত্রিকা হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকার শ্লাঘাবোধ এখন আর একটি প্রিন্টেড ছোট পত্রিকার লক্ষ্য হতে পারে না। ১০০ থেকে ১৫০ পাঠকের সামনে সম্পাদকের পছন্দসই কিছু লেখা তুলে ধরাও এখন একটি পত্রিকা প্রকাশের মোটিভেশন হিসেবে পর্যাপ্ত নয়। আন্তর্জালের সুবাদে প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন কবি এবং বুদ্ধিজীবী উদিত হচ্ছেন। কাজেই, একজন তরুণকে তাঁর ভাব এবং ভাবনা প্রকাশের আদি সুযোগ করে দেওয়াও হয়তো লিটল ম্যাগাজিনের কাজ নয় আর। একজন তরুণ আজ নিজের প্রকাশমুখ সোস্যাল নেটওয়র্কে লগ ইন করেই খুঁজে নিচ্ছেন।

এর মধ্যেই বইমেলা কাটল। তার আগে কলকাতার লিটল ম্যাগ মেলা। হাতে পেলাম বেশ কিছু কাগজ। তাদের মধ্যে অল্প কয়েকটিকে আলোচনার জন্য এখানে বেছে নিলাম। এই কাগজগুলো চিরকালের প্রদীপ জ্বালিয়েই রেখেছে। এদের আকাঙ্ক্ষা ও প্রয়াসের প্রতি সশ্রদ্ধ না হওয়ার জো নেই।


খোয়াই

নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ঢের দেরি করে মলাটে সেঁজুতি দাশগুপ্তর চিত্রভাবনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং হিরণ মিত্রর লেটারিং নিয়ে হাজির হয়েছে গার্গী দাশগুপ্ত সম্পাদিত ‘খোয়াই’-এর ৭ম সংখ্যাটি। এবারের প্রচ্ছদ-বিষয় ‘সহজ পাঠ’। ‘সহজ পাঠ’-এর মতো বইকে এই পৃথিবী একবারই পায়। তাকে নিয়ে কাজ করার জন্য সম্পাদককে অভিবাদন জানাই। রবীন্দ্রনাথের এই বইটি যে আসলে আমাদের চিরবয়সের জন্য, ‘খোয়াই’ দ্বারা নির্বাচিত লেখকেরা সেটা মনে রেখেছেন। অবীর কর, অনুপম চন্দ, সুকল্প চট্টোপাধ্যায়, সুশান্ত মুখোপাধ্যায়, মেঘ বসু, দ্বিজ দাস, অভিজিৎ দাশগুপ্ত, টুপুর ঘোষ, গৌর বৈরাগী, সোমব্রত সরকার, রাজদীপ রায় এবং বিশ্বজিৎ পান্ডা লিখেছেন বইটি নিয়ে। বইটিতে নন্দলাল বসুর অমর ছবিগুলো নিয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন শিল্পী প্রণবেশ মাইতি। একটি প্রাইমার যে কত রং-এ ধরা দিতে পারে! গদ্যগুলো পড়তে পড়তে বুঝতে পারা যায় কেন ‘সহজ পাঠ’-এর মতো আরেকটি বই লেখা হয় না, লেখা যায় না।

‘সহজ পাঠ’ নিয়ে বিশেষ কাজটি ছাড়াও রয়েছে কবিতা এবং গল্প। কবিরা সকলেই অল্পবেশি পরিচিত মুখ। নিজের নিজের নাম এবং ছাপের প্রতি তাঁরা বিশ্বস্ত। ৪টি গল্পও সুলিখিত।

হীরেন মিত্র, দিগম্বর দাশগুপ্ত, কানন ব্রম্ভ-র স্মৃতিকথা রয়েছে।
আঘা শাহিদ আলি-র কবিতা অনুবাদ করেছেন সুদীপ বসু।

‘ভট্টিকাব্যে রামায়ন কথা’ প্রবন্ধটি এই সংখ্যাকে সমৃদ্ধতর করেছে। জয়দেব বসুকে নিয়ে একটি আন্তরিক এবং ঋজু গদ্য লিখেছেন দেবাশিস চক্রবর্তী। তবে উৎস রায়চৌধুরী ‘মর্সেল প্রুস্ত – এক সাহিত্য জীবন’ গদ্যটিতে একেবারেই মন ভরাতে পারলেন না, পিপাসা পুরোটাই রয়ে গেল। কিছু খেদেরও জন্ম দিল এই গদ্য – কাফকা এবং জয়েস গতানুগতিক উপন্যাস লিখেছেন! এ কি মারাত্মক উক্তি!! গদ্যরচনা হয়তো এতটা বিন্দাস হওয়া ঠিক নয়।

পুস্তক সমালোচনা বিভাগটিতে প্রাসঙ্গিক কাজ রেখেছেন সম্পাদক।

এছাড়াও আছে মরুতীর্থ পুষ্করের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা। ঘুরে এসে লিখেছেন কৌশিক মজুমদার। এবং ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ সিনেমাটির সমালোচনা করেছেন রন্তিদেব সরকার।

সব মিলিয়ে একটি সম্পূর্ণ সাহিত্যপত্রিকা। এই কাগজের পরবর্তী সংখ্যার জন্য বসে থাকতেই হবে।

(যোগাযোগঃ সি/১০, লেক ভিউ পার্ক, বনহুগলী, কলকাতা ৭০০১০৮ , ফোনঃ ৯৭৪৮১৯৯০৫৩, ৯২৩৯২৯০৪০২ )


ঐক্য

দুই মেদিনীপুর থেকেই এই মুহূর্তে কিছু উৎকৃষ্ট পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে। আজ থেকে বছর দশেক আগেও শুধু ‘অমৃতলোক’ ছাড়া অন্য কোনো নাম করতে অসুবিধা হত। এখন কয়েকটি সিরিয়াস নাম উপস্থিত হয়েছে। গৌরীশংকর সরকার সম্পাদিত ‘ঐক্য’ তেমনই একটি নাম। এই পত্রিকাটি প্রতি সংখ্যাতেই গম্ভীর কিছু করার চেষ্টা করেছে। অবিশ্যি রাজ্য-রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামানোর ফলে আগের কিছু সংখ্যায় সাহিত্য থেকে সম্পাদকের নজর কিছুটা চ্যুত হয়েছিল।

অক্টোবর ২০১৩-এ প্রকাশিত হয়েছে ১৯তম সংখ্যা। এবারে হয়েছে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের উপরে কাজ। মুস্তাফা সিরাজের জীবন এবং সাহিত্য নিয়ে এই সংখ্যাটিতে যে কাজ করেছেন সম্পাদক, তাকে প্রায় সম্পূর্ণ বলা যেতে পারে। প্রবন্ধ, ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণা, সাক্ষাৎকার, চিঠিপত্রে লেখককে ধরা হয়েছে বিভিন্ন আদলে। এই প্রয়াত লেখকের প্রায় সবকটি দিক নিয়ে কাজ করার ফলে একমাত্রিকতা আসেনি। মুস্তাফা সিরাজের রসিক পাঠক, এবং তাঁর উপরে গবেষনায় ইচ্ছুক, উভয় জনেরই সংগ্রহ করা উচিত সংখ্যাটি।

নতুন লেখার পাশাপাশি পুরোনো লেখারও পুনর্মুদ্রণের ব্যবস্থা সম্পাদক করেছেন। এর ফলে পাঠক তৃপ্ত হবেন, এবং খেদের অবকাশ থাকবে কম।

পুনর্মুদ্রণ একটি লিটল ম্যাগের পক্ষে অত্যন্ত জরুরি একটি কাজ। কিন্তু অধিকাংশ পত্রিকা প্রকাশিত লেখার পুনঃপ্রকাশ করতে অস্বস্তি বোধ করেন। অথচ একটি ছোট পত্রিকা খুবই কম সংখ্যায় ছাপা হয়। এর ফলে একটি ভাল লেখা অনেক সময়েই অনেক পিপাসু পাঠকের চোখের সামনে আসার আগেই ফুরিয়ে যায়, খবরটুকুও পাই না। কবিতা এবং গল্পের ক্ষেত্রে তবু মেনে নেওয়া চলে (যদিও মেনে নিতে কষ্টই হয় যে একটি অসাধারণ সৃষ্টি হয়তো হাতে গোনা পাঠকের সামনেই এল) কিন্তু একটি মূল্যবান প্রবন্ধের পুনঃ পুনঃ প্রকাশ লিটল ম্যাগাজিনগুলোর উদ্দেশ্য হওয়া বাঞ্ছনীয় মনে করি।

লেখা এঁটো হয়ে যায়, এমন ধারণা নিয়েও আমাদের সম্পাদকরা দিব্য চালিয়ে যাচ্ছেন! এর মধ্যে ‘ঐক্য’-র মতো পত্রিকা হইচইয়ের কিছুটা আড়ালে থেকেই অসাধারণ কাজ করে দেখাল।

(যোগাযোগঃ হবিবপুর, ডাক-মেদিনীপুর, জেলা-পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭২১১০১, ফোনঃ ৯৪৭৫১৪২২০৪)



তিতির একটি সাহিত্য পত্রিকা

উত্তরবঙ্গের একটি ক্ষুদ্র পত্রিকা তার রূপেগুণে বেশ অবাক করে দিল। কোচবিহারের মাথাভাঙ্গা থেকে সঞ্জয় সাহা প্রকাশ করছেন ‘তিতির একটি সাহিত্য পত্রিকা’। দ্বাদশ বর্ষ প্রথম সংখ্যাটি ডিসেম্বর ২০১৩-এ কবিতা সংখ্যা হিসেবে ধরা দিয়েছে। মলাটে রাখা হয়েছে প্রয়াত কবি নারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের ‘অনিবার্য’ কবিতাটি। তাছাড়াও ভিতরে রয়েছে সুব্রত রায়, অরুণেশ ঘোষ, সমীরণ ঘোষ, বীতশোক ভট্টাচার্য, তুহিন দাশ এবং নকুল দাসের অপ্রকাশিত কবিতা। পরলোকগত কবিদের প্রতি এই সসম্ভ্রম মানসিকতাই পত্রিকাটির আত্মনিবেদন চিনিয়ে দেয়। এরপর রয়েছে সমসাময়িক কবিদের প্রতিনিধিস্থানীয় কবিতা। তরুণদের প্রতি প্রয়োজনীয় পক্ষপাত দেখিয়েছেন সম্পাদক। একটি সুন্দর সংকলন তৈরি হয়েছে। এই সময়ের কবিতার ডকুমেন্টেশন বলব আমি।

রাখা হয়েছে বেশ কিছু বিদেশি এবং ভারতীয় (হিন্দি, মালয়ালম, ওড়িয়া, অসমিয়া) কবিতার অনুবাদ। তবে ওয়র্ডসওয়র্থ, শেলি, বায়রণ, ডিকিনসন, সিলভিয়া প্লাথের মতো আইকন কবিদের বদলে এখানেও যদি এসময়ের বিদেশি কবিতার দিকেই নজর দেওয়া হত, কবিতাকর্মীদের ভাল হত, কাজে লাগত। অবিশ্যি বব ডিলান এবং রবার্তো বোলানোর কবিতাও অনুদিত হয়েছে।

প্রচ্ছদটি আমার খুব ভাল লেগেছে। হঠাৎ দেখলে মনে হয় বুঝি রবীন্দ্রনাথের হাতের ছোঁয়া লেগেছে তার গৈরিক বর্ণটিতে।

(যোগাযোগঃ শান্তিকুটির, হাসপাতাল পাড়া, মাথাভাঙ্গা, কোচবিহার, ফোনঃ ৯৪৩৪৬৮৮৫২৬, ৯৪৩৪৪০৬৩৮৬)



কালিমাটি

জামশেদপুর থেকে প্রকাশিত ‘কালিমাটি’ পত্রিকা তাঁদের ১০০তম সংখ্যাটিতে পৌঁছে গেলেন। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে বসে একজন সম্পাদকের পক্ষে কাজটা মোটেই সোজা ছিল না। নাছোড়বান্দা কান্ডারী কাজল সেনকে এ জন্য অভিনন্দন জানাই। সেই সঙ্গেই আশা রাখি, পঁয়ত্রিশ বছরের এই যাত্রাপথ এখানে একটা নতুন বাঁক নেবে, ‘কালিমাটি’ আবার একটি নতুন পত্রিকার উদ্যমে পথ চলা শুরু করবে।

১০০ তম সংখ্যায় কবিতা এবং গল্প ছাপা হয়েছে। কবিতা বিভাগটি দেখে মনে হতে পারে তরুণরা খুব প্রাসঙ্গিক এবং সময়োপোযোগী কবিতা লিখতে পারছেন না, বরং সিনিয়ররা দাপিয়ে লিখেছেন। কিছু তরুণ খুবই প্রাচীনগন্ধী কবিতা লিখেছেন। গল্প বিভাগেও সিনিয়র এবং তরুণরা সমান সুযোগ পেয়েছেন। এখানে অবিশ্যি সবগুলি গল্পই উত্তীর্ণ হয়েছে।

ভূদেব ভকত ‘কালিমাটি’-র প্রচ্ছদ ধারাবাহিকভাবে করে থাকেন। এই সংখ্যায় নিজের অন্যতম সেরা কাজই করেছেন মনে হয়।

(যোগাযোগঃ ‘জলধর স্মৃতি’, ৩ অতসী রোড, প্রমথনগর, জামশেদপুর, ৮৩১০০২, ঝাড়খন্ড, ফোনঃ ০৯৮৩৫৫৪৪৬৭৫)




রাখালিয়া

পলাশ দে এবং অভিজিৎ দাশগুপ্ত ‘রাখালিয়া’ পরিকার সম্পাদনা করেন। অবিশ্যি তাঁরা নিজেদের কাজকে সম্পাদনা বলেন না, বলেন দেখাশোনা।

শীত, ১৪২০ সংখ্যার প্রচ্ছদ বিষয় ‘উদ্বাস্তু’। প্রচ্ছদের বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন অভিজিৎ দাশগুপ্ত, পার্থজিৎ চন্দ, সুদীপ বসু, এবং সুশীল সাহা। সুন্দর লিখেছেন ৪ জন। আমার বিশেষ করে উল্লেখ করতে ইচ্ছে করছে সুশীল সাহার ‘স্মৃতি বিস্মৃতির এক ব্যর্থ অনুপ্রাস বিষয় বাংলা চলচ্চিত্রে দেশভাগ’ গদ্যটির। খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে অসামান্য কাজ।

রয়েছে ভরপুর কবিতা পড়ার সুযোগ। অধিকাংশ কবিই তরুণ। সকলেই নিজের নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেছেন, অন্তত করার চেষ্টা করেছেন। এই সময়ের লব্ধপ্রতিষ্ঠ তরুণরা কী লিখছেন, ‘রাখালিয়া’-র এই সংখ্যা পড়লে বোঝা যাবে। দেখাশোনাকারীরা সেদিকে সতর্ক নজর রেখেছিলেন।

একটিই গল্প আছে, লেখক নবেন্দু বিকাশ রায়। পাঠককে গল্পটি পড়তে অনুরোধ জানাই।

(যোগাযোগঃ সি/১০ লেকভিউ পার্ক, বনহুগলী, কলকাতা ৭০০১০৮ এবং ৮ নং হলধর বসু রোড, পানিহাটি, উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা ৭০০১১৪ ফোনঃ ৯৭৪৮১৯৯০৫৩, ৯৮৩৬৪৬৯১১৫)


পদ্যপত্র


‘পদ্যপত্র’ পত্রিকাটির সম্পাদনা করেন তরুণ কবি অর্পণ পাল। চোখের আড়ালে থাকতে পছন্দ করেন এই কবি। বেশ মুখচোরা। কিন্তু ‘পদ্যপত্র’-র এই সংখ্যায় বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। এই সংখ্যা হয়ে উঠেছে ষাটের দশকের ‘শ্রুতি আন্দোলন’-এর ভরসাযোগ্য আয়না এবং মানচিত্র। শ্রুতি কবিরা কী করতে চেয়েছিলেন, করতে পেরেছিলেন, ‘পদ্যপত্র’-র জানুয়ারি, ২০১৪ সংখ্যাটি পড়লে পাঠক বুঝতে পারবেন।

পুষ্কর দাশগুপ্ত, পরেশ মন্ডল, সজল বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মৃণাল বসুচৌধুরীর উপরে আলাদা আলাদা কক্ষে কাজ রেখেছেন সম্পাদক। সকলের উপরে গদ্য লিখেছেন সমকালীন কবিরা। এই কবিদের সম্পর্কে লেখা কিছু গদ্যের পুনর্মুদ্রণ করা হয়েছে, সেটা, আবার বলছি, এক জরুরি কাজ এই মুহূর্তে। ৪জন কবিকে সমান গুরুত্ব দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু কারো প্রতি আন্তরিকতা এবং আগ্রহের অভাব ঘটেনি।

‘শ্রুতি’-র বেশ কিছু প্রচ্ছদ ছাপা হয়েছে। ছাপা হয়েছে ৪ জন কবির কাব্যগ্রন্থের প্রচ্ছদ। সেইসঙ্গে বেশ কিছু কবিতারও পুনর্মুদ্রণ করা হয়েছে।

ছাপাখানা সম্পাদকের অভিপ্রায়ের সঙ্গে সর্বদা সুবিচার করেনি। এ এক খেদ রয়ে গেল।
বাংলা কবিতার গবেষক এবং রসিকদের সংগ্রহে রাখতেই হবে এই সংখ্যাটি।

(যোগাযোগঃ গ্রাম- গোয়ালবেড়িয়া, পোস্ট- শ্রীকৃষ্ণনগর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ৭৪৩৩৭২, ফোনঃ ৯১৪৩২৫২৬৫০)


নতুন কবিতা

‘নতুন কবিতা’-র দশম বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যাটি দ্বিভাষিক কবিতা সংখ্যা হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। অবিশ্যি বলা হয়েছে অনুবাদ সংখ্যা। রয়েছে ৬৮ জন কবির ২টি করে বাংলা কবিতা এবং তাদের অনুবাদ। পুরাতন ঘরাণার কবিতা একটিও নেই। কবিতাগুলি চলতি হাওয়ার পন্থী। বন্ধনহীন মুক্ত চেতনা তাদের পাথেয় হয়েছে। তাছাড়া রয়েছে সম্পাদকীয় কলম ‘বিজনের আলোবাতাস’ এবং বারীন ঘোষালের একটি গদ্য।

দৃষ্টিনন্দন প্রচ্ছদ করেছেন অরূপরতন ঘোষ।

(যোগাযোগঃ পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক, আই. আই. টি. , খড়্গপুর, ৭২১৩০৬)



পূর্ব

রণজিৎ অধিকারী সম্পাদিত ‘পূর্ব’ পত্রিকার ডিসেম্বর ২০১৩ সংখ্যাটি হিরণ মিত্রকে নিবেদন করা হয়েছে। করা হয়েছে একটি প্রামান্য কাজ। এই সময়ের অন্যতম চিত্রকর হিরণ মিত্র। কেউ কেউ বলেন তিনি ডিজাইনের লোক। ভেবে দেখলে ঈশ্বর সম্পর্কেও ওই একই কথা বলতে হয়।

এই সংখ্যায় আছে হিরণের নিজের একাধিক লেখা এবং সাক্ষাৎকার। হিরণের উপরে লিখেছেন যোগেন চৌধুরী, দেবেশ রায়, কালীকৃষ্ণ গুহ, রণজিৎ দাশ, ল্যাডলী মুখোপাধ্যায়, মৃণাল ঘোষ, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, সুমন মুখোপাধ্যায়, মিহির চক্রবর্তী, নমিতা চৌধুরী, মাধবেন্দ্রনাথ মিত্র, তাপসশংকর বসু, শংকর চক্রবর্তী, অনুরাধা মহাপাত্র, প্রবালকুমার বসু, চৈতালী চট্টোপাধ্যায়, কিন্নর রায়, মোনালিসা ঘোষ, হিন্দোল ভট্টাচার্য, সোমব্রত সরকার, অনুপম মুখোপাধ্যায়, মানসকুমার চিনি, Xerard Xuriguera । হিরণকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন শ্যামলকান্তি দাশ। সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সমীর আইচ। কোনো সুযোগ নেই একরৈখিকতার। হিরণ মিত্রর কিছু ছবিও ছাপা হয়েছে আর্টপ্লেটে। একটি বিজ্ঞাপনহীন পত্রিকা কী করে এই বিরাট কাজ করল এটাই অবাক হওয়ার ব্যাপার।

প্রচ্ছদেও হিরণের আত্মপ্রতিকৃতি।

এছাড়াও রয়েছে শ্যামলকান্তি দাশ এবং সুমিতেশ সরকারের কবিতা। সুমিতেশ তাঁর কবিতায় প্রত্যাশিত বিচ্ছুরণ ঘটাতে পারলেন বলে মনে হয় না।

মানব চক্রবর্তীর ধারাবাহিকটি চলছে।
অবশ্যই সংগ্রহ করুন পাঠক।

(যোগাযোগঃ বালিচাতুরী, মাদপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭২১১৪৯)



বৈখরী ভাষ্য

‘বৈখরী ভাষ্য’ পত্রিকা শূন্য দশকের মুখপত্র হিসেবে নিজেকে দাবি করতে পারে। এক দশকের উপরে হয়ে গেল তার পথ চলা। এখনও নতুন ভাষার অল্প লাল গাঢ় হয়ে জীর্ণ হল না। বইমেলা ২০১৪ সংখ্যা আবার এল একঘর নিমন্ত্রণ হয়ে। এই পত্রিকায় শূন্যের এবং প্রথম দশকের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ কবিরা লেখেন, লিখতে উদগ্রীব থাকেন। এখানে সেই তরুণ এবং তরুণতর কবি এবং গল্পকারদের লেখাও আপনি পাবেন যাদের দেখা সহসা অন্য কাগজগুলোতে মেলে না।

দেবাঞ্জন দাস লিখেছেন প্রয়াত চিত্রপরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষকে নিয়ে।
পুস্তকসমালোচনাগুলোও নান্দনিকতার এক অন্য স্তরে পৌঁছেছে।
কৈশোরক ননসেন্স এবং তীব্র শৃঙ্গাররসের সাহসী ছবি দিয়ে করা হয়েছে ইলাস্ট্রেশন।

(যোগাযোগঃ দেবাঞ্জন দাস, সি ১/৯ এল আই জি হাউজিং এস্টেট, বিভিসি কম্পাউন্ড, ৩৭ বেলগাছিয়া রোড, দত্তবাগান, কলকাতা ৭০০০৩৭, ফোনঃ ৯৪৩৩৫৪৪৮১৭)



আপাতত এই কয়েকটি পত্রিকা নিয়েই লেখা গেল।

আজ একটি প্রিন্টেড লিটল ম্যাগ যখন আন্তর্জালের অসীমের বদলে ছাপাখানা্র সসীমকে বেছে নিচ্ছে, সে তার লেখক এবং লেখা নির্বাচনে নির্মম হবে, এটুকু আশা করা যায়। আবেগ ও মেধাচর্চার সমসাময়িকটির প্রতি তাকে বিশ্বস্ত হতে হবে। ডকুমেন্টেশন একটি জরুরি কাজ। পাঠকের সময়কে এবং শ্রমকে দিতে হবে সুযোগ ও শ্রদ্ধা। সেটা না হলে কাগজে কলমেই তার মৃত্যুঘন্টা বেজে যাবে।

এটা বলার জন্য ডারউইন নয়, গুটেনবার্গকে ডেকে নেওয়া যেতে পারে।

My Blogger Tricks

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন