বিচ্ছিরি বাঁচার সেলফি
১।
যে লেখে, সে মূলত একা
এবং একা বলেই মূলত সে লেখে।
অনেকের সঙ্গে ঘন হলে
আজকাল পাগলু পাগলু পার্টি
হয়;
ধন্য ধন্য পণ্য সময়ের
বান্ধবরা
লেখা দেয় না কেউ
প্রভু উবাচঃ বাড়াতে হবে
উৎপাদনশীলতা,
কেননা কৃষিজমি আর কি করে
বাড়বে?
মানবজমিন অবশ্য সংসদের
আওতায় পড়ে না,
তবু আমরা কিন্তু জানি,
দেশটার উন্নতিই হবে।
২।
ভাঁড়ের তো হ্যান্ডেল থাকার
কথা নয়
কিংবা জাঙিয়ার বুকপকেট,
তাহলে এতো ট্যাঁ-ফো কীসের?
তেলের দাম বাড়লে, বাড়তি
ভাড়া
গাজায় বাচ্চা মরলে, ফেবু
স্ট্যাটাস
অলীক সাপুড়েরা বাঁচিয়ে রেখেছে
বলে,
টিকে আছি ঘেরাটোপের
নিশ্চিন্তে
ন্যাজে পা পড়লে ফোঁস করব
কী,
ফোঁসের ইমেজটুকুও তো জাপানি
তেলের দখলে।
৩।
না পোশালে ছেড়ে যেতে হয়-
কোম্পানি, ভাড়াবাড়ি,
সম্পর্ক
এবং কখনও লেখাপত্তরও;
ফুল বিকিয়ে বাকিরা ফুলবাবু
হয়ে গেলে
অক্ষরেরাও কনফিউজড হয়ে পড়ে;
কোথায় গেলে ভাত কাপড়ের
বন্দোবস্ত
কোথায় বা একটু সম্মান মিলবে
ঠিকঠিক
আমিও সংশয়ে, সেটাই
স্বাভাবিক, কেননা
শুনেছি দায়ের পাশে ‘বদ্ধ’
শব্দের ব্যবহার
বহুদিন হল নাকি গ্রাহ্যই
হচ্ছে না।
৪।
কেন লিখছি এইসব দিনভর
আমার কাছে কোনও উত্তর নেই
জানি, উত্তর না জানাটা পাপ;
ঠাকুমা বলত, পাপের
‘প্রাশ্চিত্তি’ হয়
অনুতাপ ঠিকমতো হলে
ভাবছি এই নামে একটা মেগা
লিখব কি না,
অ্যাটলিস্ট মানুষ তো দেখে,
খায়, গেলে
৫।
সকালে হাতে যে বেলুন নিয়ে
বেরোই,
সারাদিনে তার হাওয়া বিকিয়ে
যায়
যারা কেনে, তারাও হাওয়া
বিকোয়
উর্দ্ধতন কোনও হাওয়াওলার
কাছে
কীভাবে হাওয়া বিক্রি হয়,
কেউ দেখেনি সেসব,
শুধু বাড়ি ফিরে নিজেতে মাথা
ঠুকে গেলে
বুঝি, হাওয়া নেই আর, ব্যক্তিগত,
এখন আর
এই দমছুট রাত্তিরে, ভালো
করে কীইবা করা সম্বব!
৬।
যে মধ্যিখানে দাঁড়িয়ে
সে দু’দিকেই যেতে পারত
আসলে সে কোনদিকেই যায় না;
সে নীচেকে তড়পায়, উপরে
তাকিয়ে
বত্রিশ কিসিমের হিংসে
ঝুলিয়ে রাখে দাঁতে
এতদিনে আমরা অবগত হয়েছি,
শুয়োরেরও আছে শহর-গ্রাম
ভেদ-প্রকার
কিন্তু যে মধ্যিখানে
দাঁড়িয়ে, সে মানুষের বাচ্চা,
ভেদহীন, অদ্বিতীয়, এবং
বেসিক্যালি নির্বিকার।
৭।
ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে নীচে
নামতে নামতে
সিনেমায় দেখা পিরিয়ড পিস
মনে পড়ার কথা;
যে বাড়িতে দাঁড়িয়ে, এটিও
বনেদি,
এককালে কী কী না হত বলে
তালপুকুরেরা আজও ঘটিকে
চমকায়
সেইসব আলো আলো ভালো কথা মনে
পড়ার বদলে, ছোটলোক মনের মনে
পড়ল
ফ্লাশ টানলে কমোডে
বিষ্ঠারাও কেমন
ঘুরতে
ঘুরতে
নীচে
নেমে যায়
৮।
মোবাইল ডাকলে তুমি হাঁটবে
টেলিভিশন হাসলে হাসবে, এবং
গান শোনালে গানও শুনবে
সব ‘র’ তাই ‘ড়’ হলে, ‘ফ’ও
হবে ‘F’,
তবু এই বাজারে, এক বালতি
দুধ
নষ্ট হবে নাকি এক ফোঁটা
চোনার জন্য?
তাছাড়া এখানে জাজেসরাও তো
স্বনামধন্য
অতএব গান শোনো, বিয়ে করো
নটি বিনোদিনীকে ‘naughty’ বলো
আর থেকে থেকে হাসো, কেবল
হাসো
প্রভু তো বলেইছেন, ‘এইই
চাটো হে,
সংসার এরকমই,
রিয়্যালিটি-বৎ-SHOW’
৯।
সন্ধে হলে কথারা ভয়ে ভয়ে
থাকে,
রিপিট ভয় পায় রাত গভীর
হলে...
তখন আসলে কথাদের খাঁচায়
পোরা হয়,
ডানা তুলে কথার মাংস টিপে
টিপে দেখা হয়
কোনটা লোকে খাবে, বাতিল হবে
কোনটি
কথারা তাই সময়টাকেই ভয়
পাচ্ছে,
যে কোন সন্ধেয় কথাদের ছুঁতে
গেলেই
দেখবেন, ওরা ডেফিনেটলি
প্রশ্ন করবেঃ
‘কোন মাটিতে দাঁড়িয়ে তালি
বাজাতে হবে আবার
প্রো নাকি অ্যান্টি?’
১০।
যা আসলে বাহাদুরি হওয়ার
কথা,
সে সবই তন্দুরি হয়ে উঠছে;
তন্দুরিরা ভাবের ঘর হলে
কাঁটা-চামচেও চুরিতে দড়
হচ্ছে
এত কেচ্ছায় কাজ কী বল দেখি,
তুমি নার্সিসাস জাহাজ বোঝাই
করে
পোস্ট করো, পাচ্ছ যা,
খাচ্ছো যা
কাগজ-কবিতা-মালাই-কুলফি
আমি নাভিশ্বাসে আদার
ব্যাপারি,
তবুও তুলে রাখছি, আমার এই
বিচ্ছিরিরকম বেঁচে থাকার
সেলফি।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন