স্বীকারোক্তি
রাড়বঙ্গের রুক্ষ রাঙামাটির দিগন্তব্যাপী উত্তপ্ত প্রান্তর, কুমায়ুনের
হিমশীতল পাহাড় অথবা উত্তর-পুর্বের দূর্গমতম পাহাড় জঙ্গলে ঘেরা ছোটো ছোটো গ্রাম, শিক্ষা
ও জীবিকার সন্ধানে নানা ধরনের প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় হয়েছে আমার, সরাসরি প্রকৃতির মধ্যে
থাকার কারণেই হয়তো প্রাকৃতিক দৃশ্যের প্রতি আমার অনুরাগ কমে যাওয়ার কোনো কারণ
physically হয় নি। এই অনুরাগের আরো একটি অনুঘটক
বোধহয় প্রাচ্যদেশের (far east) এর নিসর্গচর্চার ধ্যান ধারণা, যা পেয়েছিলাম কলাভবনে
পড়ার সময়তেই। চাইনিজ ও জাপানিজ ক্যালিগ্রাফির minimum effort and maximum effct বড়
হৃদয়গ্রাহী সেই সময় থেকেই।
আমার landscape এ বারবারই ফিরে আসে পাহাড়/টিলা গাছপালার আন্তঃসম্পর্ক,
দিগন্তব্যাপী প্রান্তর প্রকৃতির মধ্যে পাওয়া নানা রকমের রঙ রূপ আকারের যুগলবন্দী। ছবিতে
পাহাড় কখনো হয়ে ওঠে উত্তর-পূর্বের মানুষের জমাটবাঁধা অভিমান, অস্থিরতার প্রতীকী স্বরূপ
আবার অবস্থানগত দূর্গমতা ইত্যাদির বর্ণনা করতে ব্যবহার হয় ব্যাপ্ত শূন্যতা। যা দেখি
তাই আঁকি আসলে। তবে সরাসরি অনুপুঙ্খ বর্ণনার থেকে চিত্রপটে সমান্তরাল প্রকৃতির বিনির্মাণ
করাই আমার মুখ্য উদ্দেশ্য। এই নির্মাণ করতে গিয়েই নানা রকম ঘটনাপ্রবাহের প্রত্যক্ষ
বা পরোক্ষ প্রভাব চিত্রপটে তার ছাপ ছেড়ে যায়।
পাহাড় বা জঙ্গল দূর থেকে দেখতে বড়ই শান্ত মনোরম। সেখানে প্রাণ সম্পদ
প্রচুর পরিমানে মজুদ। এই আপাতশান্ত প্রকৃতির মধ্যে প্রবেশ করলে বোঝা যাবে সেই পাহাড়
আসলে সমস্যার বারুদের স্তূপ। আর স্মিতমুখ সরল পাহাড়ী আদিবাসীটি সময়ান্তরে হয়ে ওঠে দুর্ধষ
জঙ্গী, নিত্যদিন রক্তস্নান তার কাছে জলভাত।
একেবারে ছাপোষা বাঙ্গালি সামাজিক গঠন ও অভ্যাসের মধ্যে দিয়ে গিয়ে হঠাৎ
এরকম একটি পরিস্থিতির মধ্যে পড়ার যে অভিঘাতগুলি নিরন্তর মস্তিষ্কে আঘাত করে তারই দিনলিপি
হয়ে ওঠে আমার ছবি।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
bhalo laga...
উত্তরমুছুন