তুমি ১
পথ কে পা দিয়ে মেপে মেপে ভুলে যাওয়া, এক সময় ঘড়িকেও
প্রয়োজন নেই, মাথার ওপর আকাশ থাকলেই হল, চুপ করে হাওয়া এসে বুকের বোতাম খুলে রোম রোম হয়ে গেলে তুমি যুক্তি শৃঙ্খলতার খপ্পরে না পড়ে
ভাঙতে ভাঙতে এগিয়ে যাচ্ছো,এই হল ডুব সাঁতার, দম বাঁচিয়ে রাখার কৌশল, আছি ও নেই এক
সঙ্গে হাত ধরে হাঁটা, ক্ষয় থেকে ফুটে ওঠা বিন্দু-চিন্তা তোমার, অদ্ভুত দর্পণে
একা-বোকার মত তুমি আর নেই
তুমি ২
অন্তিম চাহুনির বর্ণনা তুমি, চোখের আড়াল থেকে আসা চেরা আলো, অসংখ্য দরজা থেকে
উঁকি মারো বলে আমিও কি শুধুই আমি থাকি ? থাকতে পারি ? এভাবেই
নির্বাচনহীন, পরিচয়ও বহুমাত্রিক , শব্দের খড়কুটো ধরে এই যে ঢেউ ভাঙছে
কেউ, সে তুমি না আমি ? কে কার উদ্ধার ? কে
কার মৃত্যু ?
তুমি ৩
মাদুলি-তাবিজ পর না, অনুশীলনের সাফল্য থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছো, অবধারিত
তিন ছক্কা পুটে সিঁড়ি নয় সাপের মুখ ধরে বেয়ে নামো , এত মগ্ন এত নিঃসঙ্গ আর
স্নায়বিক যে তোমাকে ছুঁতে গিয়ে নিজেকে ভেঙে ফেলি, যত ভাঙি ততই পারস্পরিক, এই ভাবে
কাউন্ট ডাউনের শূন্য মুহূর্ত অবধি,ভাগ্যিস তুমি পুণরারম্ভ জানো, যে কোনও বিন্দু থেকে
শুরু করতে পারো, প্রতিবার নতুন সংকেত দিয়ে আমাকে রেখেছো জাগিয়ে পূর্বাপর
পূর্বপরিকল্পনাবিহীন
তুমি ৪
দু-দন্ড তাকিয়েই বুঝেছিলাম তোমার বিষয় মুখ বদলে গেছে, জীবনের শেষ আয়নাটিও
হারিয়ে এসেছো সেচ্ছায়, সেই ছলছল গলার গান আজ কেমন ধাতব, অবয়বে পাহারের কাঠিন্য ও
শীর্ষ জেগে আছে, চোখের মণিকোটরে আত্মগোপন করে আছে অজ্ঞাত বর্ণমালা, তোমাকে দূর
থেকে অনেক দূর থেকে স্পর্শ করি যেই উৎস মুখ থেকে প্রবাহের টের পাই, কাঠিন্য ও কোমল
মিলেমিশে যেন কোন সুদূরের ডাক, পাকদন্ডী কাকে বলে অভিধান অতিক্রম করে বুঝতে
পেরেছি
তুমি ৫
তোমার অন্তহীন জার্নালের কোনও এক পৃষ্ঠা থেকে নেমে এসে গল্প জুরে দিল, গল্পের মুড়ো নিজের ল্যাজাকে গুটিয়ে বালিশ করে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে গেলো আর বাস্তবের অসম্পূর্নতাকে
ভরাট করবে বলে স্বপ্নে নেমে গেলো তারপর মহিম হালদার স্ট্রিট সোজা আকাশ উঁচু বাইপাসে
সেই থেকে একটা শূন্যতা আগলে রেখেছি
তুমি ৬
ঘড়ি ও টেলিফোনের অস্থিরতা থেকে বহু দূরে আছো, এখনও চিঠি লেখো, তোমার চিঠি
এসে পড়ে থাকে ঘরের মেঝেতে, যখন পড়ি যেন অন্তহীন বিনিময়, যেন গতজন্মের লুপ্ত সেতুর দুঃসাধ্য
অনুধাবন, তোমার জমানো চিঠি থেকে নেমে আসে দর্পণের গহ্বর, আমি নেমে যাই, নেমে যেতে
থাকি, যতদূর বিপুল অন্তরালে... তুমি মূর্ত হয়ে আছো !
তুমি ৭
শিংওলা রূপসী তুমি, তুমি লুকিয়ে এসেছো এই জঞ্জাল থেকে নিয়ে যাবে বলে, ভাবি
কত দুঃসাহস নিয়ে এসেছো,এখন তোমাকেই লুকিয়ে রাখাই কাজ,তোমাকে লুকিয়ে রাখি অক্ষরে
অক্ষরে,এভাবেই আলিঙ্গন লেহন ও সঙ্গম,এভাবেই বিমূর্ত হয়ে উঠি আমরা প্রতিবাদ ও
ঔদাস্যে...
তুমি ৮
জন্ম থেকে মৃত্যু শব্দ অবধি
ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত , শেখালে শব্দহীনতার অদৃশ্যে পৌঁছে যাওয়া, বললে দৃষ্টি ফেরাও,
সেই থেকে মগ্ন ও ব্যস্ত সমস্ত বাহুল্য মুছে দিতে
তুমি ৯
তুমি যুগপৎ দর্শক তাই তুমি
সৃষ্টিশীল আমি শুধুই কর্মক্লান্ত বোকা,এই আক্ষেপ বশত তুমি চিৎ করেছো আমায় , আমাকেও
কিছু দৃষ্টিসুখ দিতে দিতে সহমর্মি থেকেছো
তুমি ১০
পোশাকের শৃঙ্গার ও ভঙ্গির সন্ত্রাস শুধু... এর মধ্যেই তুমি আমায় খুঁজছো
আমিও তোমায় খুঁজছি,একটাই রামধনুসাঁকো আমিও আঁকছি তুমিও আঁকছো দু- দিক থেকে, আঁকতে
আঁকতেই দেখা হবে ভাবছি, একটা যৌথ টঙ্কারের আশা আর সেই সঙ্গে কম্পাঙ্ক টুকে রাখার
মত কেউ ...
(ছোঃ অতনু ছোঃ তোর তাত্ত্বিক পাঁয়তারাগুলো বরং এরচে ভালো ছিল... )
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন